Advertisment

প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা-নীরব দর্শক পুলিশ, শিবপুরের মতোই রিষড়ার হিংসায় ক্ষোভ স্থানীয়দের

বিজেপি এবং বজরং দল আর উল্টোদিকে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষের অভিযোগ, পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার জন্যই অশান্তি হয়েছে।

author-image
Subhamay Mandal
New Update
Ram navami violence in Hooghly, Bengal Police, Howrah violence, BJP, Bajrang Dal, Ram Navami violence, Howrah Ram Navami violence, Bengal Ram Navami violence, Bengal Ram Navami clash, Bengal clash, Indian Express

রিষড়ায় ১২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। দুই সম্প্রদায়েরই লোক রয়েছে তাতে।

হাওড়ার শিবপুর এবং হুগলির রিষড়া। দুই শহরের মধ্যে দূরত্ব প্রায় ৩৫ কিমি। কিন্তু রিষড়ায় রবিবার সন্ধেয় সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনা তার ঠিক দুদিন আগে শিবপুরের মতোই। রামনবমীর মিছিলকে কেন্দ্র করে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের চিত্রনাট্য প্রায় এক। আর দুই ক্ষেত্রেই স্থানীয়দের অভিযোগও এক, পুলিশি নিষ্ক্রিয়তা।

Advertisment

বৃহস্পতিবার সন্ধেয় শিবপুরের কাজিপাড়ায় রামনবমীর শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয় পরিস্থিতি। দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর চলে। রবিবার সন্ধেতেও রিষড়াতে একই চিত্র দেখা যায়। দুই ক্ষেত্রেই বিজেপি এবং বজরং দল আর উল্টোদিকে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষের অভিযোগ, পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার জন্যই অশান্তি হয়েছে। প্রশাসনের তরফে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। পুলিশ কিছুই করেনি।

রিষড়ায় ১২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। দুই সম্প্রদায়েরই লোক রয়েছে তাতে। তিনজনকে আটদিনের পুলিশ হেফাজত এবং বাকিদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পাঠিয়েছে শ্রীরামপুর আদালত। কিন্তু কেন পুলিশি নিষ্ক্রিয়তা, এই প্রশ্নের উত্তর পেতে যোগাযোগ করা হয় চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের সিপি অমিত পি জাভালগিকে। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি।

রবিবার রিষড়ায় রামনবমীর মিছিলে ছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি একটি ভিডিও টুইট করে দাবি করেন, মসজিদ থেকে পাথর ছোড়া হচ্ছে রামনবমীর মিছিলে। রিষড়ার জামা মসজিদের ইমাম মৌলানা মহম্মদ জাকির নুরী দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন, "মসজিদের ছাদ থেকে কেউ পাথর ছোড়েনি। ছাদে দুজন পুলিশকর্মী ছিলেন। এমনকী ছাদে থাকা কিছু ইট রাখা ছিল মসজিদ মেরামতির জন্য। সেটাও প্লাস্টিক দিয়ে ঢেকে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা ছিল। প্রশাসনই সেই নির্দেশ দিয়েছিল।"

সোমবার এলাকায়, অলি-গলিতে মসজিদের আশেপাশে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন রাখা ছিল। কিন্তু চরবতী এবং সন্ধ্যা বাজার এলাকায় বিভিন্ন দোকানে যেখানে ভাঙচুর চলে সেখানে কোনও পুলিশ ছিল না। সেই পুলিশের গাড়িও রাস্তার ধারে পড়েছিল। এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা ছিল।

স্থানীয় বাসিন্দা মহম্মদ এরশাদ বলেছেন, "যদি রবিবার সন্ধেয় প্রচুর পুলিশ মোতায়েন থাকত তাহলে এত গন্ডগোল হত না। যখন হিংসা ছড়ায় তখন যেকজন পুলিশ দাঁড়িয়ে ছিল তাঁরাও সেখান থেকে পালায়। হাওড়ায় কী হয়েছিল পুলিশ কি ভুলে গিয়েছিল?"

আরও পড়ুন রামনবমী ঘিরে সাম্প্রদায়িক আগুন, রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি ব্যর্থ?

ইমাম নুরি বলেছেন, "প্রশাসনের দায়িত্ব এলাকায় শান্তি বজায় রাখা। আমি প্রশাসনকে আর্জি জানাচ্ছি, নিজেদের দায়িত্ব পালন করুন। দুষ্কৃতীরা যে ধর্মেরই হোক, তাদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। আমি ২৭ বছর ধরে ইমামের কাজ করছি। কিন্তু রবিবার সন্ধেয় যা হয়েছে তা কোনও দিন দেখিনি।"

রাজু সিং নামে এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, "শিবপুরে যা হয়েছিল হুবহু তাই হয়েছে এখানে। পুলিশ নীরব হয়ে দেখেছে কীভাবে রামনবমীর মিছিলে আক্রমণ হয়েছে। পরে আমাদের উপরই লাঠিচার্জ করা হয়েছে। কেন মসজিদের মতো স্পর্শকাতর জায়গা পুলিশ ঘিরে রাখবে না! পুলিশ ইন্টেলিজেন্স ব্যর্থ। সোমবারও এলাকার হিন্দু বাসিন্দারা আতঙ্কে রয়েছে।"

এলাকার বজরং দলের আহ্বায়ক সঞ্জিৎ যাদব বলেছেন, "মূলত রামনবমীর মিছিল ১৫টার মতো বের হয়। জিটি রোড দিয়েই যায় মিছিল গুলো। মাহেশের রথমন্দিরের কাছে জমা হয় সেগুলি। শিবপুরের ঘটনার কথা আমাদের মাথায় ছিল। এটা হতে পারে আমাদের আশঙ্কা ছিল। আমরা সব নিয়ম পালন করেছি পুলিশের। ডিজে পর্যন্ত বাতিল করেছিলাম এবং মাত্র দুটো বক্স বাজিয়েছি।" ইমাম নুরির দাবি, "কিছু পাথর বাইরে থেকে ছোড়া মসজিদ লক্ষ্য করে।"

Howrah Bajrang Dal West Bengal Chandannagar Ram Navami Ram Navami violence
Advertisment