পঞ্চায়েত অফিসে এসে ঘুমিয়ে পড়েছিল। ঘুম ভাঙার পর দেখে পঞ্চায়েত অফিস বন্ধ। ভিতরেই তালাবন্দি হয়ে পড়ে মাথায় বাজ ভেঙে পড়ার জোগাড়। বাধ্য হয়েই তাই কি উপপ্রধানের শরণাপন্ন? তাঁকে ফোন করে সাহায্য চাইতেই ভর সন্ধেয় উপপ্রধান হাজির অফিসে। তালা খুলে উদ্ধার করা হল তাকে। ভাবছেন এ আর এমন কি ব্যাপার ? এরকম কত জায়গায় হয়। কিন্তু ব্যাপারটা একেবারেই তেমন নয়। এই ঘটনা এর আগে প্রায় ঘটেনি বললেই চলে। কারণ পঞ্চায়েত অফিসে তালাবন্দি হয়ে পড়েছিল কোনও মানুষ নয়, নেহাতই একটি কুকুর।
চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল সন্ধ্যায় হুগলি জেলার গুপ্তিপাড়াতে। সিনেমার মতো এই চিত্রপটে নায়ক হচ্ছেন গুপ্তিপাড়া ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান বিশ্বজিত নাগ। মূলত তাঁর মোবাইলেই সন্ধ্যা সাড়ে ছ'টায় একটি কল যায়। সেই কল পেয়েই তিনি বুঝতে পারেন ফোনের অপর প্রান্তে কোনও মানুষ নয় রয়েছে একটি কুকুর।
ঠিক কি ঘটেছিল?
এই ব্যাপারে উপপ্রধান বিশ্বজিত নাগ বলেন, 'প্রতিদিনের মতো শনিবারেও পঞ্চায়েত অফিস বন্ধ হওয়ার পর আমি বাড়ি ফিরে আসি। আমার ঘরের ল্যান্ড লাইনটা হটলাইন করা আছে। মানে কেউ রিসিভার তুলে ডায়াল না করলেও অটোমেটিকালি আমার সেলফোনে কল ডাইভার্ট হয়ে যাবে। সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার সময় হঠাৎ আমার সেলফোনে একটি কল আসে। আমি দেখি সেটা পঞ্চায়েত অফিসের নম্বর। আমি তো চমকে যাই। বার দুয়েক হ্যালো বলি, কিন্তু অপর প্রান্তে কোনও সাড়া নেই। হঠাৎ কয়েক মুহূর্ত বাদে আমি কুকুরের কান্নার আওয়াজ পাই। আমি বুঝতে পারি কিছু একটা হয়েছে।'
তিনি আরও বলেন, 'এরপর চাবি নিয়ে পঞ্চায়েত অফিসে যাই। চাবি খোলার পর সার্টার তুলতেই বেরিয়ে আসে কুকুরটি।' উল্লেখ্য, ওই পঞ্চায়েত অফিসে প্রচুর পথকুকুর খায়, বিশ্রাম করে। বিশ্বজিতও তাদের খাওয়ান প্রত্যেকদিন। পঞ্চায়েতের উপপ্রধান বিশ্বজিত তাদের কাছে প্রভু। আর বিপদে পড়লে প্রভুই তো বাঁচায়।
আরও পড়ুন- নদী-ঝর্ণার তাক লাগানো মিশেল! বাংলার এই পাহাড়ি গাঁয়ের শোভা এককথায় অনবদ্য
কিন্তু ফোন গেল কি করে? এপ্রশ্নের উত্তরও পাওয়া গিয়েছে। অফিস বাইরে থেকে তালাবন্ধ বুঝতে পেরে কুকুরটি সারা ঘর চষে বেড়াচ্ছিল। কোনভাবে ল্যান্ডলাইনের রিসিভারের তারে তার পা পড়ে যায়। তাতে রিসিভারটি হালকা স্থানচ্যুত হয়। আর তখনই সিস্টেম অনুযায়ী অপর প্রান্তে উপপ্রধান বিশ্বজিতের কাছে ফোন চলে যায়। যদিও রিসিভারটি আবার যথাস্থানেই রাখা ছিল।