সাপের কামড়ে বছরে ৬৪ হাজার বলি দেশে, প্রকাশ্যে চাঞ্চল্যকর তথ্য

মানুষের মধ্যে সচেতনতার অভাবকে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দায়ি করেছেন চিকিৎসকরা।

মানুষের মধ্যে সচেতনতার অভাবকে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দায়ি করেছেন চিকিৎসকরা।

author-image
Sayan Sarkar
New Update
UP, snakebite

সাপের কামড়ে প্রতিবছর প্রায় ৬৪ হাজার মানুষের মৃত্যু হয় শুধু আমাদের দেশেই।

সামনে এল চমকে দেওয়ার মত তথ্য। সাপের কামড়ে প্রতিবছর প্রায় ৬৪ হাজার মানুষের মৃত্যু হয় শুধু আমাদের দেশেই। শুধু তাই নয় এই সংখ্যাটা বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ। যদিও এর পিছনে গ্রামে মানুষদের সচেতনতার অভাবকে অনেকক্ষেত্রে দায়ি করেছেন চিকিৎসকরা।

Advertisment

সুলেখা শাসমলের বছর দশেকের মেয়েকে ঘুমানোর সময় বিষধর সাপ দুবার কামড়ায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। মেয়েকে হারানোর যন্ত্রণা বুকে চেপে রেখে সুলেখা জানান, "প্রথম বার আমরা কেউ বুঝতে পারিনি, পরের বার কামড়ানোর পর ঘুম ভাঙতেই দেখি, সাপটি এঁকেবেঁকে চলে যাচ্ছে। মশারির মধ্যেই যে সাপটি লুকিয়ে ছিল বুঝতেই পারিনি”।

জর্জিয়া ইনস্টিটিউট ফর গ্লোবাল হেলথের চিকিৎসক ডাঃ সৌম্যদীপ ভৌমিক বলেছেন, "২২টি দেশের গবেষকদের একটি দল সাম্প্রতিককালে সমীক্ষা চালিয়ে দেখেছেন,  বিশ্বব্যাপী সাপের কামড়ে মৃত্যুর প্রায় ৮০% ভারতে ঘটে, যেখানে প্রতি বছর ৬৪ হাজারের বেশি মানুষ মারা যায়"। চিকিৎসক দয়াল বন্ধু মজুমদারের বলেন,  “পশ্চিমবঙ্গেও সাপের কামড়ে মৃত্যুর সংখ্যা অনেক বেশি। কিন্তু হাসপাতালগুলি থেকে সঠিক রিপোর্ট পাওয়া যায় না এবং তাই সরকারি তালিকায় প্রকৃত সংখ্যা উঠে আসে না”।

ডাঃ মজুমদার বলেন, “শহরে, ডেঙ্গুতে একজনের মৃত্যু তোলপাড় সৃষ্টি করে। কিন্তু বাংলার গ্রামে গঞ্জে গিয়ে দেখবেন সাপের কামড়ে কত মানুষের মৃত্যু ঘটছে, কিন্তু তার জন্য কোন জনরোষ নেই। শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গেই, প্রতি মাসে সাপের কামড়ে ৪০০-৫০০ জনের মৃত্যু হয়” । এপ্রিল থেকে অক্টোবরের মধ্যে, পশ্চিমবঙ্গের গ্রামীণ হাসপাতালগুলিতে  সাপের কামড়ের রোগী আসবেনই, একটি হাসপাতালে এক মাসে কমপক্ষে ৫০ জন রোগী ভর্তি হন সাপের কামড়ে, জানিয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার দাসপুর গ্রামের সুব্রত কুমার বুরাই।

Advertisment

আরও পড়ুন: < স্থায়ী নিয়োগ চাই, মমতার দেওয়া হোমগার্ডের চাকরি ফেরালেন মালবাজারে হড়পা বানে স্বজনহারা >

সাপের কামড় প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি তদারকির জন্য অক্টোবরের মাঝামাঝি ভারতের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের তরফে সারা দেশে ন্যাশনাল হেলথ মিশনের আওতায় থাকা রাজ্যের অফিসগুলিতে মনিটরিং আধিকারিক এবং নোডাল আধিকারিক নিয়োগের নির্দেশ পাঠানো হয়। এই কর্মসূচির অধীনে, ভারত সরকার প্রতিটি রাজ্যে সাপের কামড়ের চিকিৎসার প্রশিক্ষণের জন্য তহবিল বরাদ্দ করেছে।

ডাঃ মধুসূদন ভৌমিক তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালে সাপে কামড়ানো রোগীদের চিকিৎসা করছেন। তিনি বলেন, “সাপের কামড়ে আক্রান্তের সংখ্যা যেমন একাধারে অনেক বেশি, তেমন অনেকেই এটিকে গুরুত্বের সঙ্গে নেন না। মানুষের মধ্যে সচেতনতার অভাব অনেকাংশে এখনও রয়ে গিয়েছে”।

Snake Bite West Bengal