বছর দুয়েক ধরে সাইনুল ও কমলা একে অপরকে ভালোবাসত। নিজেরাই বিয়ের সিদ্ধান্তও নিয়ে ফেলেছিল। কিন্তু, বিয়ের খরচ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছিল বারবার। শেষ পর্যন্ত এই যুগলের ইচ্ছেপূরণ করল, 'জয় মা তারাশ্রীতা ভক্তবৃন্দ'। শনিবার রাতে ভিন্ন সম্প্রদায়ের তিন জোড়া তরুণ-তরুণীর বিয়ে হল তারাপীঠে।
করোনা অতিমারির কারণে বছর তিনেক বন্ধ ছিল গণবিবাহের আসর। করোনা কমতেই এবার তারাপীঠে তিন জোড়া মেয়ের বিয়ে দিল, 'জয় মা তারাশ্রীতা ভক্তবৃন্দ'। মুসলিম দম্পতি সাইনুল শাহ ও কমলা খাতুন। দুজনেরই বাড়ি তারাপীঠ থানার ফুলিডাঙা গ্রামে। দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা একে অপরকে ভালবাসতেন। দিন আনি দিন খাওয়া পরিবারে বিয়ে তাদের কাছে ছিল আকাশ কুসুম বিষয়। বিষয়টি জানতে পারেন তারাশ্রীতা ভক্তবৃন্দের সদস্যরা। তাঁরাই দুই পরিবারের সঙ্গে কথা বলে বিয়ের ব্যবস্থা করেন।
একইমঞ্চে বিয়ে দেওয়া হল কেরাব হেমরম ও মুংলি হাঁসদার এবং সুমন্ত মাল ও সুস্মিতা মালের। তিনটি ভিন সম্প্রদায়ের দম্পতির বিয়ে দেওয়া হল সেই সব সম্প্রদায়ের রীতি মেনেই। শুধু বিয়ে নয়, নবদম্পতিদের হাতে তুলে দেওয়া হল- খাট, বিছানা, বেনারসী শাড়ি থেকে সোনার গয়না। বিয়ে হবে আর খাওয়াদাওয়া থাকবে না, তা কি হয়? তাই বর ও কনেপক্ষের জন্য ছিল বিরিয়ানি, চিকেন চপ, খেজুর গুড়ের মিষ্টি, আইসক্রিমের ব্যবস্থা।
আরও পড়ুন- অবশেষে তৃণমূলের ‘দরজা’ খুললেন অভিষেক, জোড়াফুলে ঢুকলেন বিজেপির আরও এক বিধায়ক
তারাশ্রীতা ভক্তবৃন্দের কর্ণধার কল্লোল সাহা বলেন, 'এটা আমাদের ২০তম গণবিবাহ। তারাপীঠ থেকেই গণবিবাহের আসর বসানো শুরু করেছিলাম। পরবর্তীকালে দিঘা, সুন্দরবন এবং উত্তরবঙ্গে গণবিবাহের ব্যবস্থা করেছি। এখনও পর্যন্ত ৫০০ ছেলেমেয়ের বিয়ে দিতে পেরেছি। শীঘই পুরীর সমুদ্রতটে এমনই গণবিবাহের ব্যবস্থা করব।'
সংস্থার সহ সম্পাদক বাপি সাহা বলেন, 'বহু মানুষ অর্থের অভাবে ছেলেমেয়ের বিয়ে দিতে পারেন না। আমরা তাঁদের পাশে দাঁড়িয়ে বিয়ের ব্যবস্থা করলাম। মানুষ প্রচুর অর্থ উপার্জন করে। কিন্তু, এই সমস্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে দুঃস্থ মেয়েদের বিয়ে দেওয়ার আনন্দটাই আলাদা।'