শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি সেই বাম থেকেই চলে আসছে, সম্প্রতি ক্যাগের একটি রিপোর্ট সামনে আসাকে কেন্দ্র করে হইচই পড়ে গিয়েছে। কেন্দ্রীয় এই সংস্থার অডিটে এরাজ্যে স্কুলের শিক্ষক নিয়োগে বাম আমলেও হাজার-হাজার প্রার্থীর অ্যাকাডেমিক স্কোরে গরমিল ধরা পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। রাজ্যের স্কুলগুলিতে শুধুমাত্র সহকারি শিক্ষক পদেই নয়, প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগের ক্ষেত্রেও দুর্নীতির বিস্তর অভিযোগ সামনে এনেছে ক্যাগের রিপোর্ট।
এরাজ্যে শিক্ষায় দুর্নীতি নিয়ে এখনও চর্চার শেষ নেই। টাকার বিনিময়ে এরাজ্যে হাজার-হাজার সরকারি চাকরি কার্যত 'বিক্রি' হয়েছে বলে অভিযোগ। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে ইতিমধ্যেই বেআইনিভাবে চাকরি পাওয়া বহু তরুণ-তরুণী কাজ খুইয়েছেন। স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ থেকে শুরু করে গ্রুপ-ডি পদে নিয়োগের ক্ষেত্রেও ভুরি-ভুরি দুর্নীতির অভিযোগ সামনে এসেছে।
যা নিয়ে বিরোধীরা নিশানা করেছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলকে। শিক্ষায় দুর্নীতির অভিযোগে মাসের পর মাস ধরে জেলবন্দি রয়েছেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। জেলবন্দি পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় থেকে শুরু করে অপসারিত রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য-সহ আরও বেশ কয়েকজন। যা নিয়ে শাসকদলের অস্বস্তির শেষ নেই।
আরও পড়ুন- ওড়িশা থেকে ফিরেই বীরভূমের নেতাদের সঙ্গে আজ বৈঠকে মমতা, কেষ্ট নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত?
তবে রাজ্যের শিক্ষাক্ষেত্রে এই দুর্নীতি আগেও ছিল। বাম আমলে ২০০৯ সালে রাজ্যের স্কুলগুলিতে সহকারি শিক্ষক পদে নিয়োগে দশম আরএলএসটিই-তে ৪৬ হাজার ৬৪৭ জন প্রার্থীর অ্যাকাডেমিক স্কোরে গরমিল প্রকাশ্যে এসেছে। শুধু তাই নয়, এই ৪৬ হাজার ৬৪৭ জন প্রার্থীর মধ্যে ৩২ হাজার ৯৭০ জনেরই নম্বর বাড়ানো হয় বলেও অভিযোগ। এমনকী মেধা তালিকার ক্ষেত্রেও গরমিল ধরা পড়েছে। মেধাতালিকায় নাম থাকা ২ হাজার ৪৮৩ জনের নম্বরেও গরমিল ছিল বলে অভিযোগ উঠেছে।
ক্যাগের রিপোর্ট অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে, ২০০৯ সালে স্কুল সার্ভিস কমিশন বা এসএসসি অঞ্চল ভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগ করত। রাজ্যের পূর্বাঞ্চলের ক্ষেত্রে ৬,৪৯৩ জনের নম্বরে কারচুপি করা হয় বলে অভিযোগ। রাজ্যের উত্তরাঞ্চলে এমন গরমিলের সংখ্যা ১১ হাজার ২১ জন।
আরও পড়ুন- শনিবারই আবহাওয়ার ১৮০ ডিগ্রি ভোলবদল! রইল হাওয়া অফিসের লেটেস্ট আপডেট
এরই পাশাপাশি রাজ্যের দক্ষিণাঞ্চলেও ৮ হাজার ৩৪ জনের ক্ষেত্রে গরমিল ধরা পড়েছে। দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ৮,৫৪৬ জনের ক্ষেত্রে নম্বরে গরমিল ধরা পড়েছে। সুতরাং, শিক্ষাক্ষেত্রে নিয়োগে দুর্নীতির যে অভিযোগ এখন শাসকদলের অস্বস্তি বাড়াচ্ছে সেই একই অভিযোগ উঠেছিল বাম আমলেও। এই তথ্য সামনে এসেছে খোদ ক্যাগের রিপোর্টেই।