Kadaknath: অল্প টাকা বিনিয়োগে চটজলদি দারুণ আয়ের পথ দেখাচ্ছেন পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুরের এক ব্যক্তি। তাঁর এই তৎপরতা দেখে উৎসাহিত হয়েছেন গ্রামের অনেক যুবকই। তাঁরাও কীভাবে এই ব্যবসা শুরু করা যায় সেব্যাপারে খোঁজ-খবরও নিচ্ছেন। অনেকে ইতিমধ্যেই বাড়িতে এই ব্যবসা শুরুও করে দিয়েছেন। লাভও হচ্ছে ভালোই। বিশেষ সুবিধা হল, যে এই ব্যবসায় সরকারের তরফেও নানাভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।
ভারতে কড়কনাথ মুরগির ব্যবসার প্রধান কেন্দ্র বলা হয়ে থাকে মধ্যপ্রদেশের ঝাবুয়াকে। সেই রাজ্যের ওই এলাকায় প্রচুর পরিমাণে কড়কনাথ মুরগির প্রতিপালন হয়। তবে এবার কড়কনাথ মুরগির উৎপাদন হচ্ছে এরাজ্যেও। এর আগে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপে কড়কনাথ মুরগির চাষের খবর সামনে আসে। এবার পড়শি পূর্ব মেদিনীপুর। এই জেলার পটাশপুরের বাসিন্দা সুধীর দাস। তিনি তাঁর বাড়িতে কড়কনাথের পাশাপাশি টার্কিরও চাষ করে রোজগারের নতুন দিশা দেখাচ্ছেন।
পটাশপুর ২ নম্বর ব্লকের পঁচেট গ্রামের সুধীর দাস এখন কড়কনাথ ও টার্কির বাচ্চা উৎপাদন করে মোটা টাকা রোজগার করছেন বলে শোনা যায়। তাঁর পোলট্রি থেকেই কড়কনাথ ও টার্কির বাচ্চা কিনছেন অনেকে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তো বটেই ভিনজেলা থেকেও ব্যবসায়ীরা যাচ্ছেন সুধীর দাসের বাড়িতে।
কড়কনাথ মুরগি।
কড়কনাথ মুরগির মাংস স্বাস্থ্যের পক্ষে খুব উপকারী। এই মাংসে প্রচুর পরিমাণে আয়রন ও প্রোটিন থাকে। আবার কোলেস্টেরলের মাত্রাও থাকে অনেক কম। ফলে এই মাংস হার্টের রোগী ও ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপযুক্ত। চিকিৎসকেরাও অনেক সময় এই মাংস খেতে পরামর্শ দেন।
আরও পড়ুন- Premium: দিঘা যাচ্ছেন? মন্ত্রমুগ্ধকর এপ্রান্তে যেতে ভুলবেন না, অসাধারণ এতল্লাট দিঘার নয়া আবিষ্কার
কড়কনাথ মুরগির এমন বিশেষ গুণের জন্যই এর চাহিদা সবসময়ই থাকে আকাশছোঁয়া। তাই এই ব্যবসা করে মোটা টাকা আয় করা যেতে পারে। এছাড়া, সরকারের তরফেও এই মুরগির খামার তৈরিতে আর্থিক সাহায্য করা হচ্ছে। যার ফলে বহু মানুষ এই ব্যবসায় উৎসাহিত হয়ে উঠেছেন।
টার্কি।
কড়কনাথ মুরগির ব্যবসা শুরু নিয়ে কিছু পরামর্শ:
বাড়িতে খানিকটা জায়গা থাকলেই শুরু করা যেতে পারে এি কারবার। শুরুতে মাত্র ১০০টি মুরগি নিয়ে এই ব্যবসা শুরু করা যেতে পারে। পরে অভিজ্ঞতা বাড়লে ধীরে ধীরে সংখ্যা বাড়ানো যেতে পারে। বিনিয়োগের কথা উঠলে ধরে নিতে হবে, ১০০টি মুরগির দাম পড়তে পারে ৭ থেকে ৯ হাজার টাকা। যার মধ্যে শেড নির্মাণের খরচও রয়েছে। যে কোনও KVK কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র থেকে এই মুরগি চাষের প্রশিক্ষণ নেওয়া যেতে পারে। কড়কনাথ মুরগির ডিম থেকে ছানা ফুটে বের হতে প্রায় ২১ দিন সময় লাগে। এরপর এই মুরগি বড় হতে প্রায় ৪ থেকে সাড়ে ৫ মাস সময় লাগে।
আরও পড়ুন- Digha: এবার দিঘা বেড়ানো হবে আরও মধুর! পর্যটকদের স্বার্থে যুগান্তকারী তৎপরতা প্রশাসনের
কড়কনাথ মুরগির ব্যবসায় খরচ ও লাভের পরিমাণ:
এই মুরগির খাবারের জন্য তেমন খরচ করতে হয় না। বাড়ির অতিরিক্ত ধান, শাকই এদের প্রধান খাদ্য। এই মুরগির রোগও বেশি হয় না, ফলে ব্যবসা সুরক্ষিত হতে পারে। আয়ের কথা বলতে গেলে, মাত্র ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা খরচ করেই ১০০টি মুরগি বিক্রি করে ১ থেকে ১.২০ লাখ টাকা পর্যন্ত বছরে আয় হতে পারে। বার্ষিক আয় করা যেতে পারে। শীতকালে এই মাংসের দাম প্রতি কেজি ১০০০-১২০০ টাকায় পৌঁছে যায়। অন্য সময় এই দাম থাকে ৮০০ টাকা প্রতি কেজি দরে।
কড়কনাথ মুরগির কারবারি সুধীর দাসের কথায়, “আমি ইউটিউব দেখে প্রথমে ১০০টি বাচ্চা নিয়ে এই ব্যবসা শুরু করেছিলাম। এখন আমি শুধু মুরগি প্রতিপালনই করি না। তারই সঙ্গে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে মুরগির বাচ্চা উৎপাদনও করাচ্ছি। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলার যুবকরা আমার থেকে পরামর্শ ও এই মুরগির বাচ্চা নিয়ে লাখ লাখ টাকা রোজগার করছেন।”