Bangladesh Crisis: হাসিনা সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরেও এখনও বাংলাদেশের অবস্থা অগ্নিগর্ভ। এই পরিস্থিতিতে ওপারে ভারতীয়দের এখনই না যাওয়ারই পরামর্শ দিয়েছে কেন্দ্রীয় শুল্ক দপ্তর । যদিও মালদার ইংরেজবাজার ব্লকের মহদিপুর ভারত - বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সীমান্তের ওপারে পানামা স্থলবন্দরে এখনো ৮৫টি ভারতীয় লরি আটকে রয়েছে।
বৃহস্পতিবারও মহদিপুর এলাকার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে সম্পূর্ন শুনশান চিত্র দেখা গিয়েছে। সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনী জওয়ানেরা রীতিমতো কড়া নজরদারি শুরু করেছে। আর এই পরিস্থিতিতে খুব প্রয়োজন না পড়লে বাংলাদেশে না যাওয়ারই কথা বলছে প্রশাসন। মালদার মহদীপুর এলাকার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী কেন্দ্রীয় শুল্ক দপ্তরের অধিকর্তা দেশদুলাল চ্যাটার্জি জানিয়েছেন, ওপারের পরিস্থিতি এখনো ভালো নেই। আমরা ওই দিককার নেগেটিভ দিক বিবেচনা করেই এপার থেকে ভারতীয়দের বাংলাদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে বারণ করছি। খুব প্রয়োজন না পড়লে ওপারে যাওয়ার দরকার নেই বলেও ভারতীয়দের জানানো হচ্ছে। এছাড়াও ভারত সরকারের পক্ষ থেকে হেল্প লাইন নম্বর চালু করা হয়েছে। যদি কোন ভারতীয় বাংলাদেশে গিয়ে বিপদে পড়েন বা কোন রকম সমস্যায় সন্মুখীন হন তবে হেল্প লাইন নম্বরে যোগাযোগ করতে পারবেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে অস্থির অবস্থার মধ্যেও চালু রয়েছে স্থল বন্দরগুলি দিয়ে যাত্রী পারাপার। মাঝে কয়েকদিন পণ্য আমদানি রফতানি বন্ধ থাকলেও চালু ছিল যাত্রী পারাপার। মালদার মহদিপুর স্থলবন্দর দিয়ে দুই দেশের বহু নাগরিক যাতায়াত করেন। তবে গত কয়েকদিন ধরে ভারতীয়রা বাংলাদেশে তুলনায় কম যাচ্ছেন। বাংলাদেশে আটকে থাকা পড়ুয়াদের দ্রুত ভারতে ফিরে এসেছেন। এছাড়াও যে সমস্ত ভারতীয় বাংলাদেশের বিভিন্ন কাজে গিয়েছিলেন তাদেরও অধিকাংশ ইতিমধ্যে দেশে ফিরেছেন। ভারতীয় নাগরিকেরা বাংলাদেশের মূলত গিয়ে থাকেন পড়াশোনার জন্য।
আরও পড়ুন - < পিস ওয়ার্ল্ডে শায়িত বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মরদেহ, আগামিকাল শেষ শ্রদ্ধার পর NRS-এ দেহদান >
পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের বহু মানুষের আত্মীয় পরিজন রয়েছে বাংলাদেশে। আত্নীয় পরিজনদের বাড়ি ঘুরতে গিয়ে থাকেন বহু ভারতীয়। তবে বাংলাদেশের এমন অচল পরিস্থিতিতে ভারতীয়রা কিছুদিন ধরেই বাংলাদেশে যাতায়াত প্রায় বন্ধ করে দিয়েছেন। ইতিমধ্যে ভারত সরকারের পক্ষ থেকেও খুব প্রয়োজন ছাড়া বাংলাদেশের না যাবার পরামর্শ দিচ্ছে। কারণ সে দেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি এখনও ঠিক হয় নি। তাই এমন পরিস্থিতিতে সেখানে গিয়ে বিপদের সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই ইতিমধ্যে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিটি বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে একটি নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে।
বন্দর কর্তৃপক্ষ ভারতীয় নাগরিকদের বাংলাদেশ না যাওয়ার সচেতন করছেন। খুব প্রয়োজনে যারা বাংলাদেশে যাচ্ছেন তাদের জন্য হেল্পলাইন নম্বর দেওয়া হয়েছে। সেই হেল্পলাইন নম্বরগুলি প্রদান করা হচ্ছে ভারতীয়দের। সেখানে গেলে কোন রকম সমস্যায় পড়লে নম্বর গুলিতে যোগাযোগ করার কথা বলা হচ্ছে। তবে বর্তমানে ভারতীয়রা বাংলাদেশে একেবারেই প্রবেশ করছে না বলে জানা গিয়েছে বন্দর সূত্রে।
মালদা এক্সপোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক হৃদয় ঘোষ বলেন, ওপারের পরিস্থিতি খুব উদ্বেগজনক। রপ্তানি প্রায় বন্ধের মুখে। ভারতীয় বৈদেশিক মুদ্রার লোকসান হচ্ছে। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে লরিরচালক ও খালাসীরাও প্রাণভয়ে ওপারে যেতে চাইছে না। এমনিতেই এই সীমান্ত দিয়ে পাসপোর্ট ও ভিসার মাধ্যমেও যাতায়াত বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তার মধ্যে নতুন করে বন্দর কর্তৃপক্ষের ওপার সীমান্তে ভারতীয়দের না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। জানি না ওপারের পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে । তবে আমরা চাই দ্রুত যাতে বাংলাদেশের শান্তি শৃঙ্খলা ফিরে আসে।