Advertisment

মেলায় বেআইনি মদের ফোয়ারা, আমাদের খবরের জেরে ধ্বংস ১৫ হাজার লিটার

গোটা লাটাগুড়ি অঞ্চল জুড়ে ক্রমবর্ধমান বেআইনি মদ ও জুয়া খেলায় অতিষ্ঠ হয়ে এলাকার মহিলারা সম্প্রতি লাটাগুড়িতে এক সভায় বসেন। গঠিত হয় উন্নয়নশীল মহিলা সমিতি। এই খবর আমরাই প্রথম তুলে ধরি।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

লাগাতার পুলিশি অভিযানে নষ্ট করে দেওয়া হল বেআইনি মদ

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার খবরের জেরে নড়েচড়ে বসলো প্রশাসন। ডুয়ার্স অঞ্চলে দু'দিনের লাগাতার অভিযানে নষ্ট করে দেওয়া হলো অন্তত ১৫,০০০ লিটার মদ।

Advertisment

গোটা লাটাগুড়ি অঞ্চল জুড়ে ক্রমবর্ধমান বেআইনি মদ ও জুয়া খেলায় অতিষ্ঠ হয়ে এলাকার মহিলারা সম্প্রতি লাটাগুড়িতে এক সভায় বসেন। গঠিত হয় উন্নয়নশীল মহিলা সমিতি। এই খবর আমরাই প্রথম তুলে ধরি। মঙ্গলবার বিকেলে ঐ মহিলা সংগঠনের এক প্রতিনিধি দল জলপাইগুড়ি পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতির সাথে দেখা করেন। আলোচনায় স্থির হয়, রেইড চালানোর পাশাপাশি চালানো হবে সচেতনতা অভিযান। এরপরে প্রতিনিধি দল একটি স্মারকলিপি জমা দেন। অমিতাভবাবু জানান, "মহিলা প্রতিনিধিরা এসেছিলেন। তাঁদের অভিযোগ শুনলাম। আমরা উপযুক্ত ব্যবস্থা নেব।"

publive-image অভিযোগ পাওয়ার পরেই নড়েচড়ে বসে পুলিশ

অভিযোগপত্র দাখিল হওয়ার ১২ ঘন্টার মধ্যেই হাতে গরম ফল। লাটাগুড়ি এলাকার মদ ও জুয়ার মূল ঘাঁটি উত্তর মাটিয়ালি ক্যানেলহাটে ও ডুয়ার্সের বিভিন্ন এলাকায় গত বুধবার অভিযান চালায় পুলিশ। এসডিপিও (মাল মহকুমা) দেবাশিষ চক্রবর্তী জানান, "আজ আমরা গত কয়েকদিন ধরে অভিযান চালাচ্ছি। প্রায় ১২,০০০ লিটার মদ আমরা নষ্ট করে দিয়েছি। আজ আমরা র‍্যাফ সহ বিশাল বাহিনী নিয়ে ক্যানেলহাট ঘিরে অভিযান চালিয়েছি। সেখান থেকে দু'জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রায় ৫০০ লিটার মদ নষ্ট করা হয়েছে। অভিযান চলবে।"

আরও পড়ুন: মদ-জুয়ার মেলা চলছে রমরমিয়ে, লাটাগুড়ির পরিস্থিতি বদলাতে মরিয়া মহিলারা

সংগঠনের কনভেনার স্বপ্না রায় জানান, "এলাকার মহিলাদের কয়েকজনকে নিয়ে এসে এসপি মহাশয়ের সাথে আলোচনা করি। তিনি আমাদের উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বস্ত করেন। এরপরে আজকের এই অভিযান সত্যিই আমাদের অনেকটা আশ্বস্ত করলো। এতে মদ ও জুয়ার ব্যাপারীরা চাপে পড়বে। এমন অভিযানের পাশাপাশি সচেতনতা প্রচার লাগাতার চললে এলাকায় খুব উপকার হবে।"

শুধু রেইড আর গ্রেফতার করে কি আদৌ মিটবে সমস্যা? রাতারাতি মানুষ কি মদ বিক্রি বা মদ্যপান থেকে বিরত হয়ে যাবেন? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডুয়ার্সের এক পদস্থ পুলিশ আধিকারিক জানান, "এই এলাকা মূলত চা বাগানের শ্রমিক এবং আদিবাসী অধ্যুষিত। এখানকার মানুষ বেশিরভাগ জঙ্গল সংলগ্ন এলাকায় চাষাবাদ করে থাকেন। কিন্তু তাঁদের ফসলের উপর হাতি হানা দেয়। প্রচুর ফসল নষ্ট হয়। ফলে সবটা ফসল ঘরে তুলতে পারেন না। সরকারিভাবে ফসলের ক্ষতিপূরণ পেলেও এদের মধ্যে অনেকেই আর চাষাবাদ না করে সংসার চালাতে গিয়ে এই পথ বেছে নেন। প্রয়োজন আরো সচেতনতা ও বিকল্প আয়ের ব্যবস্থার।"

জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার আইসি বিশ্বাশ্রয় সরকার জানান, "এই পেশায় যাঁরা আসেন তাঁদের বেশিরভাগের মধ্যে শিক্ষার প্রসার কম। আর কম খাটনিতে সহজেই কিছু টাকা পাওয়া যায়। যার ফলে অনেকেই একবেলা দিনমজুরী, ভ্যান বা রিকশা চালানোর পর মদ বিক্রি করে সংসার চালানোর পথ বেছে নেন। প্রয়োজন আরো শিক্ষার, পাশাপাশি সচেতনতার প্রচার। সম্প্রতি আমাদের এসপি অমিতাভ মাইতির নির্দেশে চা বাগান এলাকায় কিরণ নামে একটি স্কুল চালু করেছি। বর্তমানে ঐ এলাকা থেকে অভিযোগ কম পাচ্ছি। ভালো ফল পাওয়া যাচ্ছে।"

north bengal Hooch
Advertisment