Indian Railways Mascot: ভারতীয় রেলের নানা বিষয় চমকে দেওয়ার মত। মাঝে মধ্যেই সেসব প্রকাশ্যে আসে, তখন তা নিয়েই হইচই বেঁধে যায়।
দূরপাল্লা হোক বা লোকালে, আপনি প্রয়াই ট্রেনে চড়ে যাতায়াত করেন। রেলের প্রচার কর্মী দেখেছেন। তাঁদের ভিড়েই কি নজর করেছেন সাদা শার্ট, ট্রাউজার্সের সঙ্গে আকাশি কোর্ট আর নেভি ব্লু টাই, মাথায় নীল-সাদা টুপি আর হাতে সবুজ রঙের লন্ঠন নিয়ে একজনকে?
অবাক হচ্ছেন? এবার তা হলে রহস্য ফাঁস করা যাক। ভারতীয় রেলের এই আজীবন সঙ্গীর নাম ভোলু! কে তিনি?
রেল সূত্রে খবর, এক অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে এই ভোলুর জন্ম। এক বছরের মাথায় ওর চাকরি পাকা হয়ে যায় ভারতীয় রেলে। শুধু চাকরি পাকাই নয়, এখনও পর্যন্ত রেলের যে ঘোষণা তাতে যতদিন ভারতে ট্রেন চলবে, ততদিন ভোলু-ও তার কাজ চালিয়ে যাবে। ঠিক বুঝেছেন, ভোলুর অবসর নেই!
ভারতীয় রেল তার ম্যাসকট হিসেবে বেছেছে ভোলুকে। যার পুরো নাম- 'ভোলু দ্য এলিফ্যান্ট'। তবে আদরের ডাক নাম শুধুই- ভোলু।
আরও পড়ুন- Indian Railway’s AC Coachs: রেলে ভ্রমণ করেন? জানেন দূরপাল্লার ট্রেনে কেন মাঝখানে থাকে এসি কোচ?
১৮৫৩ সালের ১৬ এপ্রিল ভারতে প্রথম ট্রেন চলে। ২০০২ সালটা ছিল ভারতীয় রেলের দেড়শো বছর পূর্তি। সেই উপলক্ষে রেলের একটি ম্যাসকট বানানো হয়েছিল। ২০০২-য়ের ১৬ এপ্রিল কর্নাটকের বেঙ্গালুরু সিটি স্টেশনে প্রথম প্রকাশ্যে আসে ভোলুর চেহারা। ওই স্টেশনের এক নম্বর প্লাটফর্ম থেকে সন্ধ্যা ৬টা ২৫ মিনিটে কর্নাটক এক্সপ্রেস ছাড়ার সময়ে প্রথম সবুজ বাতি দেখায় ট্রেনের গার্ড সাজা ভোলু।
আরও পড়ুন- Horn Code OF Indian Railways: ট্রেনে তো চড়েন, জানেন ভারতীয় রেলের ১১ রকমের হর্নের ক্যারামতি?
এর পরের বছর, ২০০৩ সালের ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত চলে রেলের দেড়শো বছর উদযাপন অনুষ্ঠান। প্রাথমিক ভাবে রেলের সিদ্ধান্ত হয়েছিল যে, সেই সময়টুকুই রেলের সঙ্গে জুড়ে থাকবেন ভোলু। কিন্তু ভোলুর ভাগ্য ভাল। ২০০৩ সালের এপ্রিলে ভোলুর চাকরির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই রেল জানিয়ে দেয় ভোলু ভারতীয় রেলের আজীবনের সঙ্গী।
প্রশ্ন হল কেন হাতিকেই রেলের ম্যাসকট হিসেবে বাছা হল? রেলের দাবি, হাতি বিশ্বস্ত প্রাণী। হাতি যুগ যুগ ধরে মানুষ ও পণ্য পরিবহণের সঙ্গে যুক্ত। আবার আকারে বড় হলেও হাতি সাধারণত হিংস্র হয় না। বন্ধুত্বপূর্ণ এবং সহযোগী মনোভাবের জীব। ম্যাসকট তৈরির সময়ে মাথায় রাখা হয়েছিল ভোলুর চেহারা। ভারতীয় রেল যেমন বৃহৎ, তেমনই দরদি, সেই প্রতিচ্ছবিই তৈরিই ভাবনার মূলে ছিল। রেলমন্ত্রকের চাহিদা মতো ভোলুকে রূপ দেওয়া হয়। সাজানোর দায়িত্ব পায় ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ডিজাইনের বেঙ্গালুরু। ভোলুর হাতের সুবজ আলোর অর্থ- গতি, যা রেলের সঙ্গে সম্পর্কিত। রেলের ভাষায় ভোলুর বর্ণ- নৈতিক, দায়িত্বশীল, একনিষ্ঠ এবং আনন্দিত। সবুজ আলো দেখিয়ে ভোলু আসলে রেলযাত্রীদের সুরক্ষিত সুখের সফর প্রার্থনা করে।