সপ্তম বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিটে মুখ্যমন্ত্রীকে প্রশংসায় ভরালেন শিল্পপতিরা। একের পর এক তাবড় শিল্পপতি বক্তব্য রাখতে এসে জানিয়ে দিলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দূরদর্শিতাতেই বাংলা আজ শিলক্ষেত্রে দেশের গন্তব্য হয়ে উঠেছে। পালটা বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'ডানকুনি-ঝাড়গ্রাম, সাউথ থেকে নর্থবেঙ্গল, দুর্গাপুর থেকে কুচবিহার- বিভিন্ন জায়গায় শিল্প গড়ে উঠেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কায়দায় সিলিকন ভ্যালি গড়ে উঠেছে এরাজ্যে। বানতলা চর্মনগরীতে বিপুল সংখ্যক শ্রমিক কাজ করেন। এখান থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চামড়া সরবরাহ হচ্ছে। খনি থেকে রেল ওয়াগন তৈরির কারখানা এরাজ্যে রয়েছে। পর্যটন ক্ষেত্রে বাংলা গন্তব্য। ইউনেস্কোও মর্যাদা দিয়েছে। দার্জিলিং, দিঘা, কলকাতায় হোটেল পর্যন্ত খালি পাওয়া যায় না।'
মুখ্যমন্ত্রী জানান, বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিট (বিজিবিএস) ইতিমধ্যেই মাইলস্টোন হয়ে উঠেছে। বাংলা বর্তমানে আর্থিক শক্তিক্ষেত্র হয়ে উঠেছে। আর্থিকক্ষেত্রে দেশের মধ্যে সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল রাজ্য হয়ে উঠেছে বাংলা। রাজ্যের আয় বেড়েছে চারগুণ। বাজেট বেড়েছে ৩.৮ গুণ। খরচ বেড়েছে ৯ গুণ। সামাজিক ক্ষেত্রে বাংলার প্রতিটি মানুষ সরকারি সুবিধা ভোগ করছেন। এরাজ্যে খাদ্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্য সম্পূর্ণ বিনামূল্যে দেওয়া হয়। এজন্য রাষ্ট্রসংঘও পুরস্কৃত করেছে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'আমাদের ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ দেওয়া হয়। বিদ্যুৎ শিল্পক্ষেত্রে অত্যন্ত জরুরি। দক্ষতা ও ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্পে আমরা দেশে একনম্বর। তাজপুর গভীর সমুদ্র বন্দর প্রায় তৈরি হয়ে গিয়েছে। দেউচা পাচামি থেকে তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন হবে। আমি রেলমন্ত্রী থাকাকালীন ফ্রেট করিডর তৈরি করে দিয়েছি।'
মুখ্যমন্ত্রী জানান, এরাজ্যে কৃষকদের জমির মিউটেশন ফি দিতে হয় না। চাষিরা নিয়মিত অর্থসাহায্য পান। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পে এরাজ্যের ৮০ শতাংশ মহিলা আর্থিক সাহায্য পান। এরাজ্যে ওষুধ ফ্রি। সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল তৈরি হয়েছে। এরাজ্যে বৃদ্ধদের পেনশন দেওয়া হয়। স্থানীয় শিল্পীদের পেনশন দেওয়া হয়। রাজ্য ফ্রি সাইকেল দেওয়া হয়। স্মার্টফোন দেওয়া হয়।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'আমরা ডিভাইড রুল পলিসিতে বিশ্বাস করি না। কারণ, স্বামীজি বলেছিলেন, তুমি আজ যা ভাববে, কাল সেটাই হবে। বাংলা সংস্কৃতি, শিক্ষার প্রতীক। এই সম্মেলনে ৩৫টিরও বেশি দেশের প্রতিনিধি যোগ দিয়েছেন। ১৭ দেশ লাগাতার এই সম্মেলনের অংশীদার। যার মধ্যে রয়েছে আমেরিকা, জার্মানি, জাপান, নেদারল্যান্ড, পোল্যান্ডের মত দেশও।' সভার শেষলগ্নে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে বাংলার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন- BGBS 2023: ‘মমতাই অগ্নিকন্যা-জয় বাংলা’, বাংলায় ৪৫ হাজার কোটি লগ্নির ঘোষণা আম্বানির
মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাণিজ্য সম্মেলনে যোগ দিতে বিশ্ব বাংলা কনভেনশন সেন্টারে ঢুকেই প্রথমে ফিকির সভায় যোগ দেন। তারপর সিআইআইয়ের ন্যাশনাল কাউন্সিলের সভায় যোগ দেন। বুধবারও চলবে বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিট। আগামিকাল বিশ্ববাংলা মেলা প্রাঙ্গণে একাধিক ছোট আলোচনা সভা আয়োজিত হবে। যার আয়োজন করবে বিভিন্ন দফতর। পাশাপাশি, বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে মউ স্বাক্ষরও করবে রাজ্য সরকার। পাশাপাশি, বুধবার বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের সমাপ্তি অনুষ্ঠান হবে আলিপুরের ধনধান্য অডিটোরিয়ামে।