Injured passengers recount horror: কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনাস্থল থেকে আধঘণ্টা দূরে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। সেখানে চিকিৎসাধীন আহত যাত্রীদের অন্যতম শিলচরের দিলদার হোসেন। হাসপাতালে চিকিৎসা চলার মধ্যেও দিলদারকে তাড়া করে ফিরছে দুর্ঘটনার বিভীষিকা। সোমবারই এনজেপির কাছে রাঙ্গাপানিতে শিয়ালদহগামী কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে একটি মালগাড়ির ধাক্কায় কমপক্ষে ১১ জনের মৃত্যু হয়। আহত হন অন্তত ৪০ জন।
দিলদার শিয়ালদহে যাচ্ছিলেন। সেখান থেকে কাজের জন্য বেঙ্গালুরুতে যাওয়ার কথা ছিল। হাসপাতালে শয্যায় শুয়েও কথা বলতে গিয়ে যেন শিউড়ে উঠলেন। বললেন, 'আমি ট্রেনের কোচে ওয়াশরুমের কাছে একজন লোকের সঙ্গে কথা বলছিলাম। কয়েক মিনিট পরেই দেখলাম, লোকটা মারা গেছে। জীবনে কখন যে কী ঘটবে, কিচ্ছু বলা যায় না।' এই ট্রেন দুর্ঘটনায় দিলদারের পা ভেঙে গিয়েছে। শরীরে একাধিক চোট লেগেছে। সেই যন্ত্রণার মধ্যেই দিলদার বললেন, 'আমি জানি না যে মৃত্যু থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য খুশি হব, নাকি যাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন, তাঁদের জন্য কাঁদব! কিন্তু, এটুকু বলতে পারি যে, এখন থেকে ট্রেনে চড়ার আগে দু'বার ভাবব। কারণ, কখনও নিরাপদ বোধ করব না।'
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন মালদহের বাসিন্দা পবন রবি দাস। এই হাসপাতালে অর্থোপেডিক ওয়ার্ডে শুয়ে তিনি বললেন, 'হঠাৎ করে একটা ঝাঁকুনি অনুভব করলাম। তখনই আন্দাজ করে নিয়েছি, ট্রেনটা বোধহয় লাইনচ্যুত হয়েছে। তারপর, বুঝতে পারি, বিরাট কিছু আমার ওপর চেপে আছে। সেটা কী বুঝতে পারিনি। তারপর মধ্যে অনেক কিছুই মনে নেই। শুধু মনে আছে, একজন স্থানীয় বাসিন্দা আমাকে উদ্ধার করেছেন। তিনিই আমাকে অ্যাম্বুলেন্সে তুলে দিয়েছেন। সেই সময়ই আমি দেখলাম যে রেললাইনে কারও দেহের একটা কাটা অংশ পড়ে আছে। ওই দৃশ্য আমি জীবনে ভুলব না। একটা ভয়ংকর দৃশ্য।'
আরও পড়ুন- গত দশকের বড় ট্রেন দুর্ঘটনাগুলো, যা আলোড়ন তুলেছিল গোটা ভারতে
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হাসপাতালে আহতদের সঙ্গে দেখা করেছেন। তিনি মৃতদের পরিবার এবং আহতদের যাবতীয় সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি দ্রুত উদ্ধার অভিযানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের জন্য চিকিৎসক ও নার্সদের পাশাপাশি পুলিশ এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের চেষ্টারও প্রশংসা করেন। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসও আহতদের হাসপাতালে দেখতে গিয়েছিলেন। তিনি বলেছেন, 'এটা একটা ট্র্যাজেডি, আমাদের সবাইকে একসঙ্গে সাহায্য করার জন্য চেষ্টা করতে হবে। আহতদের সেরা চিকিৎসা দেওয়ার জন্য সবরকম চেষ্টা চলছে। আমি ডাক্তার, সিস্টার এবং অন্যান্যদের সঙ্গে কথা বলেছি। সবরকমভাবে আহতদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছি।'