বিশ্বের সর্ব বৃহৎ গণতন্ত্রে ১৭তম লোকসভা নির্বাচন শেষ হয়েছে মাস খানেক আগেই। অথচ এখনও নির্বাচন পরবর্তী হিংসা অব্যাহত বাংলায়। এবার সেই নিয়েই সোচ্চার হচ্ছেন শহরের বিদ্বজনেরা। শনিবারের এক বৈঠকের পর কলকাতার বুদ্ধিজীবীরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আগামী মঙ্গলবার রবীন্দ্র সদনে এক কনভেনশনের আয়োজন করা হবে। সূত্রের খবর বলছে মূলত এক সাংস্কৃতিক মঞ্চ থেকেই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হবে।
নাট্য ব্যক্তিত্ব রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত বললেন, "সারা দেশ জুড়েই তো নির্বাচন হল, অথচ হিংসা শুধু বাংলাতেই হচ্ছে। সাধারণ মানুষের জনজীবন ব্যাহত হচ্ছে। আমি জানি না, মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে একের পর এক হিংসাত্মক ঘটনায় অংশ গ্রহণ করছে, নাকি তাদের বাধ্য করা হচ্ছে। কিছু প্রশ্নের উত্তর এবার দিতেই হবে"।
আরও পড়ুন, চিকিৎসার চেয়েও বড় সমস্যা যখন রাজনীতি
আরেক প্রখ্যাত নাট্য ব্যক্তিত্ব বিভাস চক্রবর্তীর কথায়, "রাজনীতির সঙ্গে ধর্মকে মেশানো হচ্ছে কেন? রাজনীতিতে পেশির জোর দেখানো বাংলায় নতুন নয়, বহু বছর ধরেই হয়ে আসছে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি এমন ভয়াবহ জায়গায় চলে গিয়েছে, মানুষ একটু শান্তি চাইছে। সে কারণেই বিশিষ্ট মানুষেরা একসাথে এগিয়ে এলেন"।
এনআরএস হাসপাতালে চিকিৎসক নিগ্রহের ঘটনায়, সারা বাংলার চিকিৎসা পরিষেবায় কার্যত অচলাব্যবস্থা চলছে। এখনও মেলেনি সমাধান সূত্র। জুনিয়র ডাক্তারদের সমর্থনে সম্প্রতি মুখ খুলেছেন অভিনেতা-পরিচালক অপর্ণা সেন, অভিনেতা কৌশিক সেন, সমাজকর্মী বোলান গঙ্গপপাধ্যায় প্রমুখেরা। চিকিৎসকদের নিরাপত্তার দাবিতে রাজ্য সরকারের নিস্ক্রিয়তাকে তীব্র সমালোচনা করেন তাঁরা।
আরও পড়ুন, এনআরএসকাণ্ডে ফের জট, অনিশ্চিত মুখ্যমন্ত্রী-জুনিয়র ডাক্তার বৈঠক
আগামী মঙ্গলবারের কনভেনশনে যোগ দিচ্ছেন কবি শঙ্খ ঘোষ, অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, লেখক নবনীতা দেবসেন, নাট্য ব্যক্তিত্ব রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত, কৌশিক সেন, বিভাস চক্রবর্তী, দেবশঙ্কর হালদার, অধ্যাপক সুকান্ত চৌধুরী প্রমুখরা।
পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক এবং সামাজিক প্রেক্ষাপটে বিদ্বজনেরা চিরকালই বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। বাম জমানায় সিঙ্গুর নন্দীগ্রাম ইস্যুতে পথে নেমেছিলেন অপর্ণা সেন, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়রা। পরিবর্তন তরান্বিত করতেও অনুঘটকের কাজ করেছিলেন বাংলার সুশীল সমাজ। ২০২১ এর বিধানসভার আগে রাজনৈতিক পরিস্থিতির বদল করতে সুশীল সমাজ কতটা প্রত্যক্ষ ভাবে অংশ গ্রহণ করবে, সেটাই দেখার।
Read the full story in English