প্রাক্তন আইপিএস গৌরব দত্তের আত্মহত্যার ঘটনায় অবশেষে মুখ খুললেন তৃণমূল নেতৃত্ব। ওই প্রাক্তন আইপিএস-এর আত্মহত্যার জন্য দায়ী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, এই অভিযোগ তুলে শোরগোল ফেলে দিয়েছিলেন বিজেপি নেতা মুকুল রায়। দলনেত্রীর বিরুদ্ধে এমন বিস্ফোরক অভিযোগ নিয়ে এবার সরব হলেন তৃণমূল নেতা তথা খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। এ প্রসঙ্গে সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জ্যোতিপ্রিয় বলেন, "এর কোনও সারবত্তা নেই। ভিত্তিহীন অভিযোগ।"
উল্লেখ্য, সল্ট লেকে নিজের বাড়িতে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় উদ্ধার করা হয় প্রাক্তন আইপিএস গৌরব দত্তকে। পরে সল্ট লেকের আমরি হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়। গৌরববাবুর হাতের শিরা কাটা ছিল। ঘর থেকে মিলেছিল সুইসাইড নোটও। কয়েকদিন আগে গৌরব দত্তের সুইসাইড নোট প্রকাশ্যে এনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করেন মুকুল রায়। একদা মমতা সেনাপতি বলেন, "প্রাক্তন আইপিএস গৌরব দত্তের আত্মহত্যার জন্য দায়ী মমতা বন্দ্যাপাধ্যায়ই।"
আরও পড়ুন, প্রাক্তন আইপিএস গৌরব দত্তের আত্মহত্যার জন্য দায়ী মমতা: মুকুল
মুকুল রায় দাবি করেন, "প্রাক্তন আইপিএস গৌরব দত্ত সুইসাইড নোটে লিখে গিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্যই তাঁকে এই চরম সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।" গৌরব দত্তের সুইসাইড নোট উদ্ধৃত করে মুকুল বলেন, "গত ১০ বছর ধরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কীভাবে তাঁকে পদে পদে ভিক্টিমাইজ করেছেন, কীভাবে ডিজি অনুরোধ করা সত্ত্বেও মুখ্যমন্ত্রী জোর করে তাঁর একটিও মামলা ক্লোজ করেন নি, সেকথা সুইসাইড নোটে উল্লেখ করেছেন গৌরববাবু। অন্য একটি কেসের ফাইল কীভাবে ইচ্ছাকৃতভাবে নষ্ট করা হয়েছে, সে বিবরণও সুইসাইড নোটে দিয়েছেন গৌরব দত্ত।"
![]()
গৌরব দত্তের সুইসাইড নোট উদ্ধৃত করে মুকুলের আরও দাবি, "মমতার এসব পদক্ষেপের জন্য তাঁর সৎ পথে অর্জিত গ্র্যাচুইটি থেকে শুরু করে মোটা অঙ্কের সেভিংস, সব কিছু বন্ধ হয়ে যেতে বসেছিল। সে কারণেই উনি রাজ্যের সৎ অফিসারদের ভবিষ্যতে এভাবে ভিক্টিমাইজড হওয়া থেকে বাঁচাতে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।"
আরও পড়ুন, প্রাক্তন আইপিএস গৌরব দত্তের অস্বাভাবিক মৃত্যু
এ ঘটনায় সিবিআই তদন্তেরও দাবি জানিয়েছেন মুকুল রায়। নয়া দিল্লি থেকে ফোনে পিটিআইকে এদিন মুকুল রায় ফের বলেন, "এটা খুবই স্পর্শকাতর বিষয়। একজন শীর্ষ আইপিএস আধিকারিক মুখ্যমন্ত্রীকে অভিযুক্ত করেছেন তাঁর আত্মহত্যার জন্য। রাজ্য পুলিশ যেহেতু মুখ্যমন্ত্রীরই অধীনে, তারা সঠিক পথে তদন্ত চালাবে, এ ব্যাপারে ভরসা করতে পারছি না। সিবিআই তদন্ত চাই।" এ ঘটনার দ্রুত তদন্তের দাবি জানিয়েছেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও।
তাঁর ছ'পাতার নোটে গৌরব দত্ত মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছেন, তাঁকে "কমপালসরি ওয়েটিং-এ" রেখে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে বাধ্য করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, তাঁকে ২০১০ সালে বামফ্রন্ট সরকারের আমলে ন'মাসের জন্য বরখাস্ত করা হয় একজন "অফিসারের পক্ষে অশোভন আচরণের" দায়ে। এক কনস্টেবলের স্ত্রী অভিযোগ করেন, তাঁর স্বামী গৌরব দত্তের "অশালীন প্রস্তাবে" সাড়া না দেওয়ায় "নিগৃহীত" হতে হয় তাঁকে। ২০১৮ সালে স্বেচ্ছাবসর নেন গৌরব দত্ত।
Read the full story in English