WB Topper JEE Main 2024: সেই কোন ছোট্টবেলায় হাতে উঠে এসেছিল টেবিল টেনিসের (Table Tennis) ব্যাট। কিছুদিন দুরন্ত ছন্দে খেলাধুলো চালিয়ে গেলেও ছোট থেকেই শিলিগুড়ির (Siliguri) হাকিমপাড়ার ইরাদ্রি বসু খৌণ্ডের (Iradri Basu Khaund) মাথায় একটাই জিনিস ঘুরত- 'যেভাবেই হোক আমাকে বড় ইঞ্জিনিয়ার হতে হবে'। উচ্চশিক্ষায় স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান আইআইটি খড়গপুরের (IIT Kharagpur) নাম শোনা তখন থেকেই। জীবনের তাই লক্ষ্যও ছিল সেখানে পড়ার।
তাই টেবিল টেনিসের ব্যাট তুলে রেখে লেখাপড়ায় মনোযোগ দিতে শুরু করে ইরাদ্রি। দিনভর পড়াশোনার ফাঁকে শুধু মাঝেমধ্যে বাবার সঙ্গে একটু দাবা খেলে মনটাকে সতেজ করে তোলার চেষ্টা চালিয়ে যেত ইরাদ্রি। রোজকার জীবনের এই রুটিন মেনে চলেই এবারের জয়েন্ট এন্ট্রান্স (মেইন) (Joint Entrance Examination Main) পরীক্ষায় রাজ্যে সেরা ইরাদ্রি বসু খৌণ্ড। জীবনের একটা বড় হার্ডল সাফল্যের সঙ্গে পেরিয়ে গেলেও ইরাদ্রির চোখেমুখে যেন এখনও সেই পরম তৃপ্তিটা নেই। কারণ তাঁর কথায়, 'আরও এগিয়ে যেতে হবে আমাকে।'
বাবা শরবন খৌণ্ড মালবাজারের (Malbazar) ওমর আলি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক। ইরাদ্রির মা বৈজয়ন্তী বসুর একটি পার্লার (Parlour) রয়েছে। খৌণ্ড দম্পতির একমাত্র ছেলের এই সাফল্যে তাঁরা স্বভাবতই উচ্ছ্বসিত। প্রথম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত দার্জিলিং পাবলিক স্কুলে (Darjeeling Public School) পড়াশোনা করার পর দশম শ্রেণির বোর্ডের পরীক্ষায় ৯৩.৬ শতাংশ নম্বর পাওয়ার পর ফুলবাড়ির (Fulbari) দিল্লি পাবলিক স্কুলে (Delhi Public School) একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হলেও জয়েন্টের পরীক্ষার জন্য সেবক রোডের একটি বেসরকারি প্রশিক্ষণকেন্দ্রে নিয়মিত ক্লাস শুরু করে। আর সেখান থেকেই সফল ইরাদ্রি।
ইরাদ্রির কথায়, 'পড়াশোনায় আগ্রহ আমার ছোটবেলা থেকেই বেশি। বাবা সবকিছু নজরে রাখত। কোথায় কী পরীক্ষা হচ্ছে, তার খোঁজ রাখত বাবা। মাও নজর রাখত, আমার খাওয়াদাওয়া কেমন হচ্ছে।'
আরও পড়ুন- Digha: বেড়ানোর দুরন্ত অভিজ্ঞতা হবে দিঘায়! পর্যটকদের জন্যই অভূতপূর্ব এই উদ্যোগ
দিনে ৭-৮ ঘণ্টা পড়লেও ইরাদ্রি কিন্তু ভাবতে পারেনি এই পরীক্ষায় ৯৯.৯৯ পার্সেন্টেজ পাবে। তাই ইন্টারনেটে ফল জানার পর কিছুটা অবাকই হয়ে যায় সে প্রথমে। তবে শুধু পাঠ্যবই নয়, সত্যজিৎ রায়, শরৎচন্দ্রের বইতেও মুখ গুঁজে থাকতেও নেহাৎ খারাপ লাগে না ইরাদ্রির। বাবা শরবনের কথায়, 'আমি অতিরিক্ত কিছু করিনি। একজন বাবার যা দায়িত্ব, আমি সেটাই করেছি। সন্তানদের ইচ্ছাকে গুরুত্ব দিতে হবে। জোর করে কিছু চাপিয়ে দিলে হবে না। সন্তানের যেদিকে নজর, সেদিকটাতেই তাকে উৎসাহিত করতে হবে।' বৈজয়ন্তীর কথায়, 'আমার ছেলেটা খুব ভালো। খাওয়া নিয়ে কোনও বায়না নেই। যা দেওয়া হয় তাই খাবে। ওর তরফ থেকে কখনও কোনও অভিযোগ আমরা শুনিইনি।'
আরও পড়ুন- WB HS Exam 2024: উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা এখবর আগে পড়ুন! দুরন্ত রেকর্ড এবছরের HS-এর
এত সাফল্যের মধ্যে একটাই আফসোস ইরাদ্রির। সর্বভারতীয় র্যাংকিংয়ে নাম নেই। তবে এই সাফল্যও যে কম নয়, সেটাই তাকে বোঝাচ্ছেন শরবন ও বৈজয়ন্তী।