আইএসএফের নেতা-কর্মীদের কাছে 'ভাইজান' পিরজাদা আব্বাস সিদ্দিকি। তাঁর ভাইজান তথা দলের একমাত্র বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকিকে গ্রেফতার করে ১৪ দিনের হেফাজতে নিয়েছে কলকাতা পুলিশ। এই পরিস্থিতিতে আব্বাসের হয়ে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে হুমকি দিয়েছেন অপর পিরজাদা কাসেম সিদ্দিকি। শহর কলকাতা অচল করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন তিনি। কিন্তু, পালটা প্রতিক্রিয়া দিয়ে বিষয়টিকে চড়তে দিতে নারাজ রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস এখন জল মাপছে।
কারণ, সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন। তাছাড়া আইএসএফ হাজার হলেও মুসলিম সম্প্রদায় প্রধান দল। এর শীর্ষ নেতৃত্ব পিরজাদা। আর দলের গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারীরাও মুসলিম সম্প্রদায়ের। সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন। রাজ্যের বিভিন্ন গ্রামে বাঙালি মুসলিমদের ভালো দাপাদাপি রয়েছে। তাঁদের মধ্যে আবার ভালো প্রভাব আছে ফুরফুরা শরিফের। আর, আব্বাস সেই ফুরফুরারই পিরজাদা। নওশাদ, কাসেমরাও তাই। সেজন্য পিরজাদাদের নেতৃত্বাধীন আইএসএফের সঙ্গে লড়াইটা যাতে আইন-শৃঙ্খলার স্তরেই আটকে থাকে, সেটাই চায় রাজ্যের শাসক দল।
তবে, প্রতিপক্ষ যতই পিরজাদা আর, তাঁদের অনুগতরা হোক, রাজ্যের গ্রামে ক্ষমতার রাশ হাত থেকে যেতে দিতে নারাজ তৃণমূল কংগ্রেস। ভাঙড়ে আইএসএফের সঙ্গে লড়াইটাও সেই কারণে। মুসলিম প্রধান ভাঙড় আইএসএফের শক্ত ঘাঁটি। পাশাপাশি, এই অঞ্চলে আরাবুল-কাইজারদের দৌলতে তৃণমূলের জমিও বেশ পোক্ত। ভাঙড়ে দুই দলের সমর্থকদের লড়াইটা সেই কারণে ছিল রাজনৈতিক জমিরক্ষার সংগ্রাম। ইস্যু সেক্ষেত্রে জমি অধিগ্রহণ থেকে অন্য যে কোনওকিছুই হোক না-কেন।
আরও পড়ুন- কলকাতা অচলের ডাক! কিন্তু কোথায় আইএসএফের ‘মুখ’ আব্বাস সিদ্দিকি?
ভাঙড়ের সেই রাজনৈতিক লড়াইটাই শনিবার নওশাদরা তুলে এনেছিলেন ধর্মতলায়। শহরের প্রাণকেন্দ্রে বিক্ষোভ দেখিয়ে গোটা রাজ্যের দৃষ্টি আকর্ষণই ছিল লক্ষ্য। থামাতে গিয়ে তাদের আট কর্মী জখম হয়েছেন বলে দাবি পুলিশের। সেই মতো বেশ কড়া ধারা দিয়েই নওশাদ-সহ ১৭ আইএসএফ কর্মীকে পাকড়াও করেছে কলকাতা পুলিশ। পুলিশ হেফাজতে থাকাকালীন প্রবল চাপে বিরোধীদের অনেকেই অতীতে শাসক দলের হয়ে গিয়েছেন। অন্তত সুর বদলাতে বাধ্য হয়েছেন। নওশাদ ও তাঁর অনুগামীদের আনুগত্য বদলই এখন তাই টিএমসির সবচেয়ে বড় লক্ষ্য।