ভারতীয় সংস্কৃতির আইকন শ্রীরামকৃষ্ণ ও বিবেকানন্দ সম্পর্কে কুরুচিকর মন্তব্যের জেরে সন্ন্যাসী অমোঘলীলা প্রভু বা অমোঘলীলা দাসের বিরুদ্ধে বড় ব্যবস্থা নিল ইসকন কর্তৃপক্ষ। তাঁকে একমাসের জন্য নিষিদ্ধ করা হল। পাশাপাশি প্রায়শ্চিত্তের জন্য পাঠানো হল গোবর্ধনে।
সম্প্রতি সামনে ল্যাপটপ রেখে বক্তব্য রাখছিলেন ইসকনের সন্ন্যাসী অমোঘলীলা। সেই সময় তিনি ভক্তিরস বা ভক্তির প্রসঙ্গ বা ঈশ্বর সম্পর্কে কথা বলছিলেন। তখনই টেনে এনেছিলেন শ্রীরামকৃষ্ণ ও বিবেকানন্দের প্রসঙ্গ। বলতে গিয়ে ওই সন্ন্যাসী শ্রীরামকৃষ্ণের বহুচর্চিত 'যত মত তত পথ' মহাবাণী সম্পর্কে নিন্দনীয় মন্তব্য করেন। পাশাপাশি স্বামীজির মাছ-মাংস খাওয়া, ধূমপান করা, ফুটবল খেলতে উপদেশ দেওয়ার বিষয়গুলোকে তীব্র কটাক্ষ করেন। শ্রীরামকৃষ্ণের 'যত মত তত পথ' দর্শনকে উদ্ধৃত করে অমোঘ লীলা বলেছিলেন, 'যে রাস্তা দিয়ে ইচ্ছা যাওয়ার বেরিয়ে পড়, গন্তব্য একই হবে। সেটা কখনও হয় না। আমি যদি মায়াপুরে যেতে চাই, তবে ডান-বাম-আগে-পিছে যে কোনও রাস্তা ধরে যাওয়া সম্ভব নয়। একটি নির্দিষ্ট পথ ধরে যেতে হবে।' অমোঘ লীলার বক্তব্য, 'কোনও সিদ্ধপুরুষ কখনও কোনও পশু মেরে খাবেন না। স্বামী বিবেকানন্দ যদি মাছ খান, তবে তিনি কীভাবে সিদ্ধপুরুষ হবেন?'
আরও পড়ুন- ‘স্বামী বিবেকানন্দ মোটেও সিদ্ধপুরুষ নন’, ইসকনের অমোঘ লীলার মন্তব্যে বিতর্কের ঝড়
সেই সময় তাঁর শ্রোতারা এই সন্ন্যাসীর কথায় হাততালি দিলেও ভিডিওটি প্রকাশিত হতেই সর্বত্র ছি-ছি পড়ে যায়। বিভিন্ন মহল ওই সব বক্তব্যের বিরুদ্ধে আপত্তি তোলে। প্রতিবাদ জানিয়ে টুইট করেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষও। তিনি টুইট করেন, ‘এই বাচালের অসভ্যতা বন্ধ করুন তাঁরা। রামকৃষ্ণ, বিবেকানন্দকে অপমান করে এসব কথা বললে বরদাস্ত করা হবে না। অবিলম্বে এই তথাকথিত সন্ন্যাসীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’
শুধু তাই নয়, ভিডিওটি যত ছড়াতে শুরু করে, অমোঘ লীলার বক্তব্য নিয়ে জনমানসে ক্ষোভও বাড়তে শুরু করে। ব্যাপারটা চোখে পড়ে ইসকন কর্তৃপক্ষেরও। তাঁরা পরিস্থিতি বুঝে ওই সন্ন্যাসীর আচরণের জন্য দুঃখপ্রকাশ করেন। এনিয়ে একটি প্রেস রিলিজ প্রকাশ করেন। পাশাপাশি, অমোঘলীলা নামে ওই সন্ন্যাসীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান।