সোমবারের পর মঙ্গলবার, ফের জয়নগরে তুলকালাম কাণ্ড। আবারও বিতর্কে পুলিশের ভূমিকা।দলুয়াখাকি গ্রামের ক্ষতিগ্রস্তরা এদিন গ্রামে ফিরতে চেয়েছিলেন। সেই মতই দক্ষিণ ২৪ পরগনার দলীয় অফিসে ঘরছাড়াদের সঙ্গে বৈঠকও হয়েছিল সিপিএম নেতৃত্বের। এরপরই ওই ঘরছাড়া মহিলাদের আশ্বস্ত করে তাদের নিয়ে দলুয়াখাকি গ্রামের দিকে রওনা দেন সিপিএম-এর এক প্রতিনিধিদল। নেতৃত্বে ছিলেন সুজন চক্রবর্তী, কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়, শমীক লাহিড়িরা।
বারুইপুর পুলিশ জেলার এসডিপিও, কুলতলির আইসির নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী ততক্ষণে প্রস্তুতই ছিল। দুলিয়াখালি প্রবেশের মাধপথে দেখা যায়, সিপিএমের প্রতিনিধি দলকে এগোতে বাধা দিচ্ছে পুলিশ। আটকানো হয় ঘরছাড়াদেরও। কেন এই বাধা? তার কোনও সদুত্তোর তখন দিতে পারেনি পুলিশ। এরপরই পরিস্থিতি জটিল হয়। দফায় দফায় পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন বাম নেতৃত্ব। মাথায় হেলমেটধারী পুলিশকর্মীদের সঙ্গে ঠেলাঠেলি শুরু হয়ে যায় সুজন চক্রবর্তীদের। সুজনবাবুকে পুলিশের উদ্দেশে বলতে শোনা যায়, 'কেন আটকাচ্ছেন? সব কিছুর একটা সীমা থাকা দরকার।'
আরও পড়ুন- হেঁটে যাচ্ছেন তৃণমূল নেতা, পিছনে বাইকে দুষ্কৃতীরা, খুনের আগের মুহূর্তের রোমহর্ষক ফুটেজ ভাইরাল!
অন্যদিকে, গ্রামে ফিরতে চাওয়া দলুয়াখাকির মহিলাদেরও গ্রামে ঢোকার পথে আটকায় পুলিশ। মহিলারা জোরাজারি করলে পুরুষ পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিও হয় তাদের। ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা প্রশ্ন করতে থাকেন, 'আমাদের আটকানো হচ্ছে কেন?'
কেন এই বাধা? এক উচ্চপদস্থ পুলিশ অফিসার বলেন, 'ঘরছাড়ারা চাইলে গ্রামে ঢুকতে পারেন। কিন্তু বহিরাগত কাউকে আমরা দলুয়াখাকি গ্রমে প্রবেশ করতে দেব না।' পাল্টা সিপিআইএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, 'আমরা সব মহিলাদের নিয়ে থানায় যাব। অভিযোগ জানাব। পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে কতটা পুলিশের দায়িত্ব, আর কতটা আমাদের দায়িত্ব, সেটা বুঝিয়ে দিয়ে আসব। আমরা তিন দিন সময় দেব। তার মধ্যে কাজ না হলে, আমরা পূর্ণ শক্তি নিয়ে আসব।'
বিকেলে দলুয়াখাকি গ্রামে যেতে গেলে গোচরণের কাছে আটকানো হয় ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকির গাড়ি। কেন তাঁকে বাধা দেওয়া হল? এক্ষেত্রেও বিধায়কের প্রশ্নের সদুত্তোর দিতে পারেনি পুলিশ। কোনও প্রশাসনিক নির্দেশিকাও দেখাতে পারেনি উর্দিধারীরা।
এদিকে জয়নগরে তৃণমূল নেতা সইফুদ্দিন লস্করের খুনে জড়িত থাকার অভিযোগে সোমবার শাহরুল শেখকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মঙ্গলবার তাকে বারুইপুর আদালতে পেশ করে পুলিশ। শাহরুল শেখের ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ মঞ্জুর হয়েছে। বারুইপুর আদালত থেকে বেরিয়ে শাহরুল সাফ বলেন, 'নাসির ছিল, বড়ভাই ছিল, গুলি আমি চালাইনি, গুলি করেছে সাহাবুদ্দিন।' কে এই নাসির? তা এখনও জানা যায়নি বলেই পুলিশ সূত্রে খবর।