ফের শিরোনামে সিঙ্গুর বিতর্ক, ‘আমি নই, টাটাকে তাড়িয়েছে CPIM’- দাবি মমতার, সরব বিরোধীরা

আরও একবার সিঙ্গুর থেকে টাটা বিদায়ের দায় ঝেড়ে ফেললেন মুখ্যমন্ত্রী।

it is not me Tata has been chased away from singur by CPIM says mamata banerjee
টাটা প্রকল্প বিদায় নিয়ে শুরু তরজা

কমিশনের ইঙ্গিত বছর ঘুরলেই (মার্চ-এপ্রিল) পঞ্চায়েত ভোট। তার আগে ফের একবার সিঙ্গুর ইস্যুকে উস্কে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। আরও একবার সিঙ্গুর থেকে টাটা বিদায়ের দায় ঝেড়ে ফেললেন তিনি। ইউনেস্কো যাকে কেন্দ্র করে সরগরম বাংলার রাজনীতি। বুধবার শিলিগুড়ির বিজয়া সম্মিলনীর মঞ্চ থেকে মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় বলেন, ‘কেউ কেউ মিথ্যে কথা বলে বেড়াচ্ছে। বলছে, আমি টাটাকে তাড়িয়েছি। আমি টাটাকে তাড়াইনি। সিপিএম তাড়িয়েছে। আপনারা লোকের জমি জোর করে দখল করতে গিয়েছিলেন। আমরা জমি ফেরৎ দিয়েছি। কারোর জমি জোর করে নেওয়া হয়নি।’ এরপরই মুখ্যমন্ত্রীকে একযোগে ‘মিথ্যাবাদী’ বলে কটাক্ষ করেছে বাম, কংগ্রেস, বিজেপি।

তবে, রাজ্যে বনিয়োগের জন্য এ দিনও শিল্পপতিদের কাছে দরবার করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেছেন, ‘রাজ্যে শিল্প বিনিয়োগ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমি চাই রাজ্যে শিল্প বিনিয়োগ হোক। এখানে শিল্পপতিদের মধ্যে কোনও বৈষম্য করতে চাই না। সবাই সমান সুযোগ পায়।’ তৃণমূল জমানায় শিল্পের জন্য জমি জোগাড় ইস্যুতে উদাহরণ হিসাবে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘জায়গার তো অভাব নেই। আমি কেন জোর করে জমি নেব? এই কাওয়াখালিতে কত সমস্যা ছিল। কিন্তু জোর করে জমি নেওয়া হয়নি।’ ডেউচা-পাচামি প্রকল্পের কথা তুলে ধরেন তিনি। রাজ্যে বিনিয়োগের স্বার্থে কোনও শিল্প গোষ্ঠীই যে তাঁর সরকারের কাছে ব্রাত্য় নয় তা স্পষ্ট করতে চেয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এ দিনও মুখ্যমন্ত্রীর মুখে কর্মসংস্থানের কথা শোনা গিয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘আমারা চাই ঢেলে কর্মসংস্থান। কেউ কেউ কুৎসা রটাচ্ছে। আমরা কারও চাকরি খেতে চাই না। আমরা সবাইকে চাকরি দিতে চাই।’

সিঙ্গুর নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বিস্ফোরক দাবি নিয়ে সরব সিপিআইএম, কংগ্রেস ও বিজেপি। মমতাকে বিরোধী দলগুলি একত্রে ‘মিথ্যাবাদী’ বলে দেগে দিয়েছেন। সিপিআইএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘উনি মিথ্যা ডিলিট। ভাগ্যিস বলেননি, টাটাকে সিঙ্গুর থেকে তাড়ানোর জন্য বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ধরনায় বসেছিলেন। দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে বন্ধ করে দিয়েছিলেন। বুদ্ধবাবু ও বামফ্রন্ট মিলে ভাঙচুর করেছিলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলার সর্বনাশ করেছেন। বাংলার ভবিষ্যৎ নষ্ট করেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর মুখে এত মিথ্যা মানায় না। ওনার পথ আটকে আন্দোলনের জন্যই টাটা বলেছিলেন, আমার মাথায় বন্দুক ঠেকালে আমি কী করতে পারি? এটা ওনার জানা নেই?’

আরও পড়ুন- বঙ্গ বিজেপিতে তুমুল বিবাদ, বিদ্রোহী দলের সাংসদ থেকে কেন্দ্রীয় নেতা

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর কথায়, ‘ইউনেস্কোকে তালিকা করতে দিলে ওঁরা দেশের সেরা মিথ্যাবাদী বলবেন বাংলার মুখ্যন্ত্রীকে। দিদির জন্যই টাটারা সিঙ্গুর ছেড়ে সানন্দে চলে গেল। বাংলা থেকে একে একে সব শিল্পপতিদের উৎখাতের ডাক দিয়েছেন। আজ হাতে পায়ে ধরে বিনিয়োগের কথা বলছেন। মানুষ সব বোঝে।’ বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ‘কালীপুজোর আগে বড় মিথ্যাকথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী। তৃণমূল জমি আন্দলনের জন্য শিল্প বিরোধী, শিল্পপতিদের অপমান করেছেন। এখ অন্য কথা বলছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়।’

সিঙ্গুরের জমি আন্দোলনকে পুঁজি করেই ২০১১-তে রাজ্যেপালাবদল হয়। ক্ষমতায় আসে তৃণমূল । এমটাই মনে করা হয়। মসনদে বলেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের প্রতিশ্রুতি ছিল সিঙ্গুরের অনিচ্ছুক জমিদাতাদের জমি ফেরাতে আইন তৈরি করা। সেটাও করেছেন তিনি। জমিও ফেরৎ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, তৃণমূলের সেই আন্দোলনের জন্য মমতা সরকারের কাঁধে শিল্প বিরোধী তকমা পড়েছে। ফলে পঞ্চায়েত ভোটের আগে মমতা প্রমাণে মরিয়া যে, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সরকারের দায়েই সিঙ্গুর থেকে টাটাদের ন্যানো প্রকল্প গুজরাটে সরে গিয়েছিল।

Stay updated with the latest news headlines and all the latest Westbengal news download Indian Express Bengali App.

Web Title: It is not me tata has been chased away from singur by cpim says mamata banerjee

Next Story
হাইকোর্টে প্রাথমিক ধাক্কা পর্ষদের, টেট উত্তীর্ণদের আন্দোলন তুলতে দ্রুত শুনানির আর্জি খারিজ
Exit mobile version