Advertisment

J P Nadda: 'মিথ ভেঙে দেবে বিজেপি'..., শুভেন্দুকে নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য, ভোটের মাঝেই বিস্ফোরক নাড্ডা

দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিজেপির জাতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা বলেছেন, কাউকে রেয়াত নয়।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
"Why single out BJP? All major opposition parties, national as well as regional, received electoral bonds and together they have got almost the same amount as the BJP received," says J P Nadda. (Express file photo by Sankhadeep Banerjee)

মিথ ভেঙে দেবে বিজেপি.....শুভেন্দুকে নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য! কী বললেন নাড্ডা?

চলতি লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে বিরোধীরা বারবার দাবি করেছেন, ৪০০ আসন পেয়ে গেলেই সংবিধান পালটে ফেলবে বিজেপি। সেই প্রচারের পালটা এবার গান্ধী পরিবারকে কাঠগড়ায় তুললেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা। সাত-দফার লোকসভা নির্বাচনের পঞ্চম দফার ভোট আগামী সোমবার। চলছে জোর কদমে ভোট প্রচার। তার মধ্যেই বিজেপির সর্বভারতীয় জেপি নাড্ডা, নয়াদিল্লিতে তার সরকারি বাসভবনে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সঙ্গে একাধিক বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন।

Advertisment

প্রশ্ন- কংগ্রেস ২০১৪ এবং ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে যথাক্রমে ৪৪ এবং ৫২ টি আসন জিতেছিল, কেন কংগ্রেসের রাহুল গান্ধীকেই বার বার নিশানা করছে বিজেপি?

জেপি নাড্ডা: মিডিয়ার কারণে। মিডিয়া তার সব কিছুকে কভার করে এবং আমরা বাধ্য হই প্রতিক্রিয়া দিতে। আমরা চুপ করে থাকতে পারি না। যিনি সংবিধান পড়েননি, তিনি সংবিধানের কপি হাতে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। বিজেপিকে নিশানা করছে বলছে, তৃতীয় দফায় মোদী সরকার দেশের সংবিধানকে বদলে ফেলবে।

প্রশ্ন- সংবিধানের ইস্যুটি শুরু হয়েছিল যখন কিছু বিজেপি নেতা বলেছিলেন যে বিজেপি ৪০০ পার করতে চায় যাতে সংবিধানে বদল আনা যেতে পারে

জেপি নাড্ডা: আমাদের দলে বিভিন্ন ধরনের লোক আছে। আমি অবিলম্বে লাল্লু সিংকে (ফৈজাবাদের সাংসদ) ফোন করে জানিয়েছিলাম যে এটা দলের এজেন্ডা নয়। আমি (নাগৌড়ে বিজেপি প্রার্থী) জ্যোতি মির্ধার সঙ্গেও কথা বলেছি। (লোকসভা সাংসদ) অনন্ত কুমার হেগড়ের টিকিট প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল কারণ তিনি অনেকবার এই ধরনের মন্তব্য করেছিলেন। দল তার প্ল্যাটফর্ম থেকে যা বলে তা হল বিজেপির আসল অবস্থান। সংবিধান পরিবর্তনের কোন পদক্ষেপ নেই বিজেপির। আমি জানি না রাহুল গান্ধীর শিক্ষাগত যোগ্যতা কী। “সংবিধান নিয়ে খেলা শুরু করেছিলেন কে? পণ্ডিত নেহরু। বাকস্বাধীনতার উপর রাশ টানতে প্রথম বার সংশোধন করা হয়েছিল সংবিধান। তার পর ওঁর কন্যা ইন্দিরা গান্ধী অর্ডিন্যান্স জারি করে আদালতের রায় পালটে দেন। শাহবানো মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায় এড়াতে সংবিধান সংশোধনের বিল পাশ করিয়েছিলেন রাজীব গান্ধীও। ২০১৩ সালে কংগ্রেসের সরকার থাকাকালীন কেন্দ্রের আনা অর্ডিন্যান্স ছিঁড়ে ফেলেছিলেন রাহুল গান্ধী। আমরা ১০ বছর ধরে ক্ষমতায় রয়েছি - আমরা কি জম্মু ও কাশ্মীর ছাড়া আর কোনো রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করেছি? আমরা সব সময় সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।

প্রশ্ন- কেন আপনি মনে করেন দলিত সম্প্রদায়ের একটি অংশ সংবিধান সম্পর্কে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে?

জেপি নাড্ডা: বিরোধীরা সংখ্যালঘু ও দলিতদের মধ্যে এই ভয় ও নিরাপত্তাহীনতা ছড়ানোর চেষ্টা করছে। আমরা ১০ বছরে এমন কী করেছি যা তাদের মধ্যে এই ধরনের আশঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়াবে ? প্রধানমন্ত্রী নিজেই বলেছেন, কাউকে বাবাসাহেব আম্বেদকর প্রণীত সংবিধান পরিবর্তন করতে দেওয়া হবে না এবং সংবিধান রক্ষার জন্য যা করা দরকার আমরা তা করব।

২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে, আমি আত্মবিশ্বাসী যে বিজেপি কিছু মিথ ভেঙে দেবে যা সবাইকে অবাক করবে। প্রধানমন্ত্রী মোদীর হাতকে শক্তিশালী করতে এবং ভারতকে একটি উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য দক্ষিণী রাজ্য থেকে আমরা যে ধরনের সমর্থন পাচ্ছি তাতে আমি বলতে পারি যে বিজেপি দক্ষিণ ভারতের একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসাবে আবির্ভূত হবে।

প্রশ্ন- অনেক নেতাকে দলে নিয়েছেন যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে

জেপি নাড্ডা:দলকে শক্তিশালী করতে হবে এটাই লক্ষ্য। গুটিকয়েক নেতার বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ আছে। কিন্তু আমরা তদন্ত প্রক্রিয়া একেবারেই বন্ধ করিনি। আইন তার নিজস্ব ধারায় চলবে। যখন কিছু লোক বিজেপিতে যোগ দিতে চায়, আমরাও মনে করি এটা বিজেপির জন্য সুবিধাজনক। কিন্তু তার মানে এই নয় যে আমরা সব কিছুর সঙ্গে আপস করি।

প্রশ্ন- তাহলে এর মানে কি এই যে শুভেন্দু অধিকারী, অজিত পাওয়ার, অশোক চৌহানের বিরুদ্ধে মামলা, তদন্ত চলবে?

জেপি নাড্ডা: হ্যাঁ, সব (কার্যক্রম) চলছে। কোনোটাই বন্ধ হবে না। সবই চলছে।

প্রশ্ন- মজার ব্যাপার হল যে বিজেপির একজন বিধায়ক বা সাংসদও কোন তদন্তের মুখোমুখি হচ্ছেন না?

জেপি নাড্ডা: এ ব্যাপারে আমরা খুবই সচেতন। আমাদের দল দুর্নীতি ইস্যুতে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। দল এব্যাপারে খুবই কঠোর। মোদীজির সামনে কেউ কিছু করার সাহস করে না। আমাদের নিজস্ব প্রক্রিয়া খুব কঠিন, কঠোর নজরদারি রয়েছে এবং দলের লোকজনকে নিয়মিত সতর্ক করা হচ্ছে। তাদের জানানো আমার কর্তব্য।

প্রশ্ন- মণিপুর নিয়ে বিজেপির অবস্থান ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছে। আপনি ক্ষমতাসীন দলের সভাপতি হয়েও মণিপুর যাননি, কী কারণ?

জেপি নাড্ডা: প্রথমত, এর ঐতিহাসিক পটভূমি বুঝতে হবে – মেইতি এবং কুকির মধ্যে বিরোধের একটি দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। কংগ্রেসের শাসনকালে দুই-তিন বছর ধরে সংঘর্ষ চলেছিল। প্রধানমন্ত্রীর কথা ছেড়ে দিন। কংগ্রেসের কোন মন্ত্রী তখন রাজ্যে যাননি। আমরা খুব স্পষ্ট যে আমরা কুকি এবং মেইতি উভয়ের পক্ষের সুবিধা-অসুবিধা বুঝে শান্তি আনতে হবে। অতীতে অন্য কোনো স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সংঘর্ষের সময় রাজ্যে যাননি। পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক । রাজ্যের সেখানে দুটি লোকসভা আসনই জিতবে বিজেপি। আমরা ভালো পারফর্ম করেছি।

প্রশ্ন- নির্বাচনের পরে মুসলিম সম্প্রদায়ের কাছে পৌঁছানোর জন্য বিজেপির লক্ষ্য?

জেপি নাড্ডা: আমরা সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাসের দর্শনে বিশ্বাসী। আমরা এটাই ভবিষ্যতেও চালিয়ে যাব। প্রধানমন্ত্রী মোদী দরিদ্র এবং সংখ্যালঘুদের জীবন পরিবর্তনের জন্য অনেক উদ্যোগ নিয়েছেন এবং আমরা কারও প্রতি বৈষম্যে বিশ্বাসী নই। কিন্তু আমরা কখনই মুসলিম সম্প্রদায়কে ভোট ব্যাংক হিসেবে ব্যবহার করিনি বা রাজনীতি করার চেষ্টা করিনি। কিন্তু মুসলিম সংখ্যালঘুরা স্বাধীনতার পর থেকেই কংগ্রেসের নোংরা পরিকল্পনার ফাঁদে পড়ে গিয়েছে। কংগ্রেসের অধীনে মুসলিম সংখ্যালঘুরা কিছুই পায়নি, তাদের জীবনযাত্রার মান পরিবর্তন হয়েছে শুধুমাত্র মোদীর কর্মসূচির কারণে। তিনি জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করেছেন।

প্রশ্ন- নির্বাচনী বন্ডের বিবরণে দেখা যায় না আদানি এবং আম্বানি কংগ্রেসকে অনুদান দিয়েছেন

জেপি নাড্ডা : নির্বাচনী বন্ড অর্থ দেওয়ার একমাত্র উপায় নয়। কংগ্রেস জানে টাকা দেওয়ার অনেক উপায় আছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে দলের ফোকাস হবে দরিদ্র, শোষিত, দলিত, মহিলা, যুবক, কৃষক এবং সমাজের প্রান্তিক অংশের মঙ্গল। আমাদের তাদের শক্তিশালী করতে হবে।

প্রশ্ন- বিজেপির জন্য এখন কী কী রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যেগুলি ২০১৯-এ দলকে মোকাবিলা করতে হয়নি?

জেপি নাড্ডা : আমরা যা মোকাবেলা করছি তা হল একটি ভয়ঙ্কর চ্যালেঞ্জ। ভুল তথ্য প্রচার করা, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হওয়া, যা সবই ভারতীয় গণতন্ত্রের জন্য মারাত্মক বিপদ। ওবিসি, এসসি এবং এসটি-র জন্য সংরক্ষণের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের জাল ভিডিও প্রচারের মতো আশঙ্কা। অবিশ্বাস এবং সামাজিক বিভাজন জাগিয়ে তোলার লক্ষ্যে মিথ্যা প্রচার একটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

প্রশ্ন- নির্বাচনী বন্ডের একক বৃহত্তম প্রাপক বিজেপি। এখন এটি না থাকায় নির্বাচনী অর্থায়নে চ্যালেঞ্জগুলো কী কী?

জেপি নাড্ডা: কেন একা বিজেপি? জাতীয় এবং আঞ্চলিক সমস্ত প্রধান বিরোধী দলগুলি নির্বাচনী বন্ড থেকে টাকা পেয়েছে এবং একত্রে তারা প্রায় একই পরিমাণ পেয়েছে যা বিজেপি পেয়েছে। নির্বাচনী বন্ডের উদ্দেশ্য ছিল নির্বাচনী ব্যবস্থা থেকে কালো টাকা দূর করা। আমরা সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তকে সম্মান করি কিন্তু কালো টাকার দরজা আবার খোলা হয়েছে দেখে দুঃখিত এবং এটি একটি চ্যালেঞ্জ যা আমাদের সম্মিলিতভাবে মোকাবেলা করতে হবে।

প্রশ্ন- অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বক্তব্য যে "আপনি মোদীকে ভোট দিচ্ছেন না, অমিত শাহকে ভোট দেবেন" যা বিজেপিকে বলতে বাধ্য করেছে যে প্রধানমন্ত্রী মোদী তৃতীয় মেয়াদ পূর্ণ করবেন। এটা কি অন্য নেতাদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য?

জেপি নাড্ডা: অরবিন্দ কেজরিওয়াল যা বলেছেন তাতে কিছু সত্য ছিল বলে মনে করছেন? সেজন্য আমাদের স্পষ্ট করতে হয়েছিল। সত্যি কথা বলতে, এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা, জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য তাদের এক প্রচেষ্টা। কেজরিওয়াল এবং অন্যান্য বিরোধী নেতারা মোদীজির বয়সের অজুহাত ব্যবহার করছেন কারণ বিজেপির সংবিধানে এমন কোনও বিধান নেই যে একজন নেতাকে ৭৫ বছর বয়সে অবসর নিতে হবে।

প্রশ্ন- শ্রীনগরে উচ্চ ভোটদান একটি অত্যন্ত ইতিবাচক অগ্রগতি। কি বলবেন?

জেপি নাড্ডা: এটি ভারতীয় গণতন্ত্রের বিজয়, কাশ্মীরে গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় উদযাপন।

JP Nadda
Advertisment