Advertisment

'র‍্যাগিং-নেশার আসর সব জেনেও কর্তৃপক্ষ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি', বিস্ফোরক হস্টেলের সুপার

কেমন থাকে হস্টেলের অবস্থা? খোলসা করলেন সুপার।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Jadavpur Universit , 'র‍্যাগিং-নেশার আসর সব জেনেও কর্তৃপক্ষ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি', বিস্ফোরক হস্টেলের সুপার

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলের সুপার দ্বৈপায়ণ দত্ত।

ব়্যাগিং কাণ্ডে ছাত্র মৃত্যুর জেরে উত্তাল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। কর্তৃপক্ষের ভূমিকা ইতিমধ্যেই পুলিশ খতিয়ে দেখছে। এসবের মধ্যেই বিশ্ববিদ্য়ালয়ের মেন হস্টেলে নবাগতদের ব়্যাগিং, নেশার আসর, প্রাক্তনীদের প্রভাব নিয়ে বিস্ফোরক দাবি করলেন হস্টেল সুপার দ্বৈপায়ণ দত্ত। খারিজ করলেন বুধবার সংবাদ মাধ্যমে দেওয়া মেন হস্টেলের নিরাপত্তারক্ষী জয়ন্তকুমার পালের দাবি।

Advertisment

কী বলেছেন মেন হস্টেলের সুপার দ্বাপায়ণ দত্ত?

এবিপি আনন্দে মেন হস্টেলের পরিস্থিতি নিয়ে সব কিছু খোলসা করেছেন মেন হস্টেলের সুপার দ্বাপায়ণ দত্ত। পড়ুয়া মৃত্যুর পর মেন হস্টেলের দরজা তালা বন্ধ করে রাখতে বলা হয়েছিল। এই নির্দেশ এসেছিল হস্টেল সুপার দ্বৈপায়ণবাবু ও আবাসিকদের কাছ থেকে। বুধবার মেন হস্টেলের নিরাপত্তারক্ষী জয়ন্ত কুমার পাল এই দাবি করেছিলেন। বৃহস্পতিবার জয়ন্ত কুমার পালের দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন হস্টেল সুপার দ্বৈপায়ণ দত্ত। তিনি বলেন, 'আম কোনও নির্দেশ দিনি। যখন ঘটনা ঘটেছে তখন আমি ঘরে। রাত ১২.০৭ নাগাদ আমি শুনেছি। আমাদের ইউনির্ভাসিটির ভিতরই একজন সুপার আছেন মিস্টার গৌতম মুখার্জী, উনি আমাকে ফোন করেছিলেন। বলেন আপনাদের কোনও একটা ব্লকের বারান্দা থেকে একটা ছেলে পড়ে গেছে। আমি সেই শুনে সঙ্গে সঙ্গে জামা-কাপড় যখন নীচে এসেছি তখন ১২.১০ বাজে। তখন আমি দেখেছি গেট বন্ধ। যে ছেলেটা পড়ে গেছে তাকে অলরেডি হসপিটালাইসড করা হয়েছে। তখন কোনও ট্যাক্সি, অটো, অ্যাম্বুলান্স বা পুলিশ কিছুই নেই।'

উল্লেখ্য, সংবাদ মাধ্যমে করা তাঁর দাবির পরই তদন্তের স্বার্থে মেন হস্টেলের নিরাপত্তারক্ষী জয়ন্ত কুমার পালকে বৃহস্পতিবার তলব করেছে লালবাজার। এর আগে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯ জন নিরাপত্তারক্ষীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ।

কী হত হস্টেলে? দ্বৈপায়ণ দত্তের দাবি, 'হস্টেলে ছাত্ররা থাকতো। সবকিছুই হত। ছাত্ররা ওখানে মদ খেত, গাঁজা খেত, সবই খেত।' সেই নেশার বিষয় কী সুপার দেখতে পেতেন? দ্বৈপায়ণবাবুর স্বাকারোক্তি, 'আমি হয়তো রাস্তা দিয়ে যাচ্ছি, থখন হয়তো পুকুর পাড়ে বসে কেউ খাচ্ছে। আমি মাথা নীচু করে চলে যেতাম।' সুপার হয়েও কেন তিনি কিছু বলতেন না? জবাবে হস্টেল সুপারের দাবি, 'দেখুন সকলেই প্রাপ্ত বয়স্ক। কিছু বললে তারা যদি কিছু বলে, গালিগালাজ করে, তাই কিছু বলতাম না। আর ওখানে সকলে আমার ব্লকের নয়, আমার ব্লকের ছেলে আমাকে দেখে ধরুন সরে গেল। কিন্তু অন্য ব্লকের ছেলে হলে আমি কিছু বলতে পারবো না।' নেশার সময় ছাত্রদের নিষেধ কখনও তিনি করেছেন? দ্বৈপায়ণ দত্তের সাফ জবাব, 'না না আমি খখনও কিছু বলিনি। ম্যাক্সিমামই তারা ঘরের মধ্যে বা ছাদে খায়।'

যায়দপুরের মেন হস্টেলে ব়্যাগিং হয়, তদন্তেও তাই উঠে আসছে। হস্টেল সুপার এই ব়্যাগিংয়ের বিষয় কী বলছেন? হস্টেল সুপার দ্বৈপায়ণ দত্তের দাবি, 'আমার ব্লকে সত্যি কোনওদিন শুনি যে এরকম ব়্যাগিং হয়েছে। যেটুকো দেখতাম যে যে, প্রথম বর্ষের ছাত্রকে দিয়ে হয়তো জল বওয়া নো হত, বা ঘরে ডেকে পরিচয় দিতে বলা হত, এক ব্লকের নবাগতরা অন্য ব্লককে উদ্দেশ্য করে গালিগালাজ করছে- এগুলো হত।' পোশাক খুলিয়ে ব়্যাগিং হত? সুপার বলছেন, 'না কোনও দিন পোশাক খুলিয়ে ব়্যাগিংয়ের কথা শুনিনি। এই প্রথম শুনলাম।'

নবাগতরা এলে তারা কেমন রয়েছে ততা দেখতে কোনওদিন সপরাররা হস্টেলের উপরের তলাগুলোতে যেতেন না? হস্টেল সুপার দ্বৈপায়ণ দত্তের কথায়, 'প্রথম বর্ষের ছাত্ররা এলে যেতাম। কিন্তু সুপার উঠেছে বলে টহল দিয়ে চলে এলে ঘরে বাইরে এসে ছাত্ররা গালিগালাজ দিয়ে যেত ছাত্ররা। দিনের বেলায় যেতাম। রাতে সবসময় যেতাম না। নতুন ছেলেরা আসলে যেতাম। আমার ফোন নম্বর দিয়ে আসতাম। আমিও তাঁদের ফোন নম্বর কালেকশন করে রাখতাম। সিনিয়ার ও প্রাক্তনীরা কী দাপিয়ে বেড়েত? সুপারের দাবি, 'সিনিয়রদের প্রভাব মারাত্মক ছিল। প্রাক্তনীদেরও প্রভাব ছিল। আমি এসে থেকেই এটা দেখেছি।'

এসব কী যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানতে না? সুপার দ্বৈপায়ণ দত্ত সাফ বলছেন যে, 'এটা প্রথম নয়, এটাই হয়ে আসছে। কর্তৃপক্ষ সবই জানে, জানে না এমন কিছু নয়।' সুপাররা এগুলো জানাতেন? দ্বৈপায়ণবাবুর দাবি, 'মুখে অনেকবার বলেছি। কোনও ছেলে রিপোর্ট করলে কর্তৃপক্ষ সবসময় ব্যবস্থা নিত। তবে রাতের বেলায় কর্তৃপক্ষকে কোনওদিন আমরা পাইনি। এবার আমরা ২ জন সুপার, আর ৬০০ ছেলে! আমরা কী করব তখন? দরোয়ানরা গেটে থাকেন, ওদের ভিতরে যাওয়ার সুযোগ নেই।'

kolkata police Jadavpur University swapnadeep kundu
Advertisment