গড়িয়া শ্মশানে আঁকশি দিয়ে মৃতদেহ টেনে নিয়ে যাওয়ার ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল। যা আগেই 'অসংবেদনশীল' এবং 'অমানবিক' বলে সুর চড়িয়েছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। ফের একবার ওই ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ জানতে চাইলেন রাজ্যপাল। সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিঠি দিয়ে সেদিনের ঘটনার বিষয়ে তথ্য চেয়েছেন ধনকড়। চিঠিতে রাজ্যপাল লিখেছেন, গড়িয়া শ্মশানে পচা-গলা দেহগুলো সমন্ধে রাজ্য প্রশাসন ও কলকাতা পুরনিগমের প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিমের তরফে কোনও জবাব তিনি পাননি।
মুখ্যমন্ত্রীকে দেওয়া রাজ্যপালের চিঠিতে উল্লেখ, 'এটা দুর্ভাগ্যজনক যে নানা কৌশলে বলা হল শ্মশানের ১৪টি দেহ কোভিড আক্রান্তদের নয়। তবে সেই বিষয়টি অতি তুচ্ছ। যদিও পুরোটাই তদন্তেই প্রকাশ পাবে। মূল বিষয় হল- দেহগুলির প্রতি যে আচরণ ভাইরাল হয়েছে তাতে মানবতা লজ্জা পাবে, সভ্যতা কলুষিত হয়েছে। কলকাতা পুরনিগমের সব আইন লঙ্ঘিত হয়েছে। শ্মশানে মরদেহের প্রতি কতটা পবিত্রতা রেখে আচার পালিত হয়ে থাকে সে সম্পর্কে আমরা সবাই অবগত।'
এর আগে গড়িয়া শ্মশানকাণ্ড নিয়ে পুরসভার প্রশাসক ফিরহাদ হাকিমের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। টুইটে লিখেছিলেন, 'মর্মাহত! ভিডিয়োতে মৃতদেহ টেনে নিয়ে যাওয়ার হৃদয়বিদারক নির্মম দৃশ্য দেখে জনমনসে যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে, তাতে গভীর ভাবে উদ্বিগ্ন বোধ করছি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের কাজে আমি স্তম্ভিত। কলকাতা পুরসভার প্রশাসক এবং পুরসভা কমিশনারের কাছে আজ এ নিয়ে ব্যাখ্যা চেয়েছি।' ওই ইস্যুতে অবিলম্বে মমতাকে ক্ষমা চাইতেও অনুরোধ করেছিলেন তিনি।
এ ঘটনায় রাজ্য়পালকে বিঁধে আসরে নামে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর। একের পর এক টুইটে রাজ্য়পালকে নিশানা করে স্বরাষ্ট্র দফতরের তরফে জানানো হয়, 'পশ্চিমবঙ্গ সরকার মৃতদেহের সম্মান করতে জানে। সে কারণে করোনা পরিস্থিতিতে স্বচ্ছ পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়েছে। গড়িয়ার মৃতদেহগুলির সঙ্গে করোনার যোগ নেই, একথা বারবার জানানো সত্ত্বেও সরকারকে কলুষিত করা হচ্ছে। এতে সমাজে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হচ্ছে।'
বিরোধীদের দাবি ছিল, ভাইরাল ভিডিওতে যেসব মরদেহ দেখা গিয়েছে সেগুলি করোনা আক্রান্তদের ছিল। রাজ্য ও কলকাতা পুরনিগমের তরফে সেই অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়া হয়। জানানো হয়েছিল, মরদেহগুলি বেওয়ারিশ ছিল। ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দেন পুর প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম। রাজ্যপালকে আগেই তা জানানো গয় কলকাতা পুরনিগমের পক্ষ থেকে। যদিও জবাবে সন্তুষ্ট হননি রাজ্যপাল।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন