রাজ্য অধীনস্ত সব বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য পদ থেকে সরানো হবে রাজ্যপালকে। আচার্যের পদে বসবেন মুখ্যমন্ত্রী। এই সিদ্ধান্তকে আইনে পরিণত করতে মঙ্গলবার বিধানসভায় পেশ করা হয় য়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি অফ হেলথ সায়েন্স অ্যামেন্ডমেন্ট বিল, ২০২২। মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এই বিল পেশ করতেই ভোটাভুটির দাবি জানান বিরোধী বিজেপি বিধায়করা। চিকূটের বদলে মেশিনে ভোট প্রক্রিয়া- বিজেপি বিধায়কদের আর্জি মেনে হয় ভোট। কিন্তু তাতে গড়মিল দেখা যায়। ফলে ফের চিরকূটে ভোট হয়। চিরকূটে বিলের পক্ষে ১৩৪টি , বিপক্ষে ৫১টি ভোট পড়ে। ভোটদানে বিরত থাকেন আইএসএফ নওসাদ সিদ্দিকি। এর বিরুদ্ধেই সরব হন বিরোধী বিধায়করা। তড়িঘড়ি রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের কাছে নালিশ জানান শুভেন্দু অধিকারী, অগ্নিমিত্রা পালরা।
রাজ্যপাল বিজেপি বিধায়কদের সঙ্গে দেখা করেন। তাঁদের কাছ থেকে অভিযোগ পত্রও গ্রহণ করেন। খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন। এরপরই রীতিমত সাংবাদিক বৈঠক করে মমতা সরকারের বিরুদ্ধে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে তোপ দাগেন। আচার্য পদে মুখ্যমন্ত্রীকে বসানো নিয়েও মুখ খোলেন।
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে রাজ্য প্রসানের বিরুদ্ধে জগদীপ ধনকড় বলেন, 'বাংলার গণতন্ত্র প্রায় শেষ নিঃশ্বাস নিচ্ছে। নিয়োগ নিয়ে এত বড় দূর্নীতি দেশ আগে দেখেনি। মাফিয়া আর সিন্ডিকেট রাজ চলছে। তালিকায় নাম না থাকা সত্ত্বেও চাকরি দেওয়া হয়েছে। বাংলার শিক্ষা ব্যবস্থা নষ্টের চেষ্টা চলছে। দূর্নীতির জন্য হাজার হাজার চাকরিপ্রার্থী বঞ্চিত। আমি কখনও আমার শপথবাক্য ভুলিনি।'
মুখ্যমন্ত্রীকে আচার্য পদে বসাতে আইন পাস হচ্ছে বিধানসভায়। এ প্রসঙ্গে রাজ্যপাল বলেছেন, 'বিশ্ববিদ্যলয়ের আচার্য সংক্রান্ত বিলটি আমি আইনের নজরে দেখছি। যা করার আইনগতভাবেই করব। রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রীকে একই জায়গায় নিয়ে এসেছে এই প্রশাসন। বিধানসভায় বিল এনে আমায় আচার্য পদ থেকে সরানো হচ্ছে। আমি বিলটি খতিয়ে দেখব। কোনও পক্ষপাতিত্ব করব না। শুধু দেখব সংবিধানকে উপেক্ষা করে এই বিল আনা হয়েছে কী না। যদি সংবিধান উপেক্ষা করা হয়, তাহলে সম্মতি দেব না। মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যপাল, কেউই আইনের উর্ধ্বে কেউ নন।'
একে অপরকে প্রবল টিপ্পনির মাঝেই সম্প্রতি রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালকে ছবি উপহার দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই রেশ আপাতত অতীত। রাজভবন নবান্ন সম্পর্কে ফের উত্তাপের আঁচ।