বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী সোমলতা আচার্য্যর ধূপগুড়িতে হেনস্থার অভিযোগের ফেসবুক লাইভ ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর নড়েচড়ে বসল জলপাইগুড়ি পুলিশ। অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে সুয়ো মোটু (suo motu) বা স্বতঃপ্রণোদিত মামলার নির্দেশ দিলেন জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি।
সোমলতা ও তাঁর দলের অভিযোগ, ধূপগুড়ি কালিরহাট দেওয়ান চন্দ্র হাইস্কুলের সুবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করতে গিয়ে ঐ স্কুলের শিক্ষক অর্ণব সাহার হাতে হেনস্থার শিকার হন তাঁরা। পরে পুলিশের তৎপরতায় তিনি তাঁর দল নিয়ে ধূপগুড়ির হোটেল থেকে গতকাল রাতেই বাগডোগরা বিমানবন্দরে চলে যান। এরপরে কলকাতা বিমানবন্দর থেকে ফেসবুক লাইভ ভিডিও করে অভিযোগ জানান।
সেই ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধূপগুড়ি থানার আই সি কে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়েরের নির্দেশ দেন অমিতাভবাবু।
শিল্পীর অভিযোগ নিয়ে অর্ণববাবুকে প্রশ্ন করলে তিনি তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, "সোমলতার পছন্দমতো সাউন্ড সিস্টেমের জন্য অতিরিক্ত আরো ১ লক্ষ টাকা খরচ করবার পরেও অনুষ্ঠান চলাকালীন পিছনের দিকে শ্রোতারা শুনতে পাচ্ছিলেন না। সেই কথা বলতে আমি ওঁর কাছে মাউথপিস চাইতে গেলে উনি দেন নি। এরপরে আমি মাইকম্যানের কাছ থেকে একটি মাউথপিস নিয়ে মাইকের মাধ্যমে সাউন্ডের অসুবিধার কথা জানাই। আমার সাথে ওঁর কোনো কথাই হয়নি। উনি অভিযোগ করেছেন আমি মদ্যপ ছিলাম। কিভাবে বুঝলেন? আমরা রাতে শিল্পীদের হোটেলের ঘর বুকিংয়ের পাশপাশি খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা করেছিলাম। উনি না জানিয়ে রাতেই চলে গেলেন। ওঁর মতো এত বড় মাপের শিল্পীর কাছ থেকে এই ধরনের ব্যবহার আমরা আশা করি নি।"
বাংলার প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী @SomlataAcharyya জলপাইগুড়ির ধুপগুড়িতে অনুষ্ঠান চলাকালীন যাঁর বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ এনেছেন, সেই অর্ণব সাহা কী বলছেন? pic.twitter.com/Aod7QZjlgl
— IE Bangla (@ieBangla) January 5, 2019
সোমলতা দেবীকে এয়ারপোর্ট থেকে আনা ও পৌঁছনোর দায়িত্বে থাকা গাড়ির চালক সুশান্ত বর্মণ জানান, "গতকাল সকালে এয়ারপোর্ট থেকে আনা, আর রাতে এয়ারপোর্টে ফিরে যাওয়া পর্যন্ত আমি সারাক্ষন ওঁর সাথে ছিলাম। আমি অনুষ্ঠানেও ছিলাম। কিন্তু ওঁর সাথে কেউ কোনো খারাপ ব্যবহার করেন নি। অনুষ্ঠানের সময় পিছনে সাউন্ড কম থাকা নিয়ে একবার ওই স্কুলের শিক্ষক অ্যানাউন্স করছিলেন। মাতাল হয়ে কেউ ওঁর সাথে বাজে ব্যবহার করেন নি। উলটে ওঁর টিমের সদস্যরা আমার হাতে টাকা দিয়ে মদ আনিয়েছেন। রাতে এয়ারপোর্টে নামার পর আমাকে ১০০০ টাকা বকশিস দিয়েছেন।"
ঘটনা প্রসঙ্গে অমিতাভবাবু টেলিফোনে জানান, "শিক্ষকতার পাশাপাশি সাংবাদিকতায় যুক্ত কারোর বিরুদ্ধে যদি এমন অভিযোগ ওঠে তবে তা দুর্ভাগ্যজনক। অভিযুক্তর বিরুদ্ধে ধূপগুড়ি থানার আই সি কে স্বতঃপ্রণোদিত মামলার রুজু করবার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।"
সোমলতার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেন নি এবং মেসেজের উত্তর দেন নি। তাঁর প্রতিক্রিয়া পেলে আমরা এখানে আপডেট করে দেব।