Advertisment

চন্দ্রযান-৩ টিমের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য, বঙ্গতনয়ের অভাবনীয় কৃতিত্বে বাংলার মুখ উজ্বল!

ইসরোর এই বিশেষ টিমে সামিল এরাজ্যেরই যুবকের বেনজির কীর্তি সাড়া ফেলে দিয়েছে।

IE Bangla Web Desk এবং Nilotpal Sil
New Update
jalpaiguris koushik nag is member of isro chandrayaan 3 mission

চন্দ্রযান ৩ মিশনের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য এই বঙ্গসন্তান।

চন্দ্রযান-৩ চাঁদের মাটিতে অবতরণ দেশের ইতিহাসে নতুন পালক যুক্ত করেছে। একইভাবে ইসরোর এই টিমের একজন সক্রিয় ইঞ্জিনিয়র হিসেবে জলপাইগুড়ির সন্তান কৌশিক নাগ যুক্ত থাকা শহরের কাছে এক গর্বের বিষয়। ইসরোর টিমের এই সাফল্যে কৌশিকের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় আপ্লুত জলপাইগুড়ি শহরবাসী থেকে শুরু করে শহরের হোলিচাইল্ডস্কুল এবং জলপাইগুড়ি সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ কর্তৃপক্ষ।

Advertisment

বুধবার সন্ধেয় চাঁদের মাটিতে চন্দ্রযান-৩-এর অবতরণের পর কৌশিক নিজেও ফোনে জানিয়েছেন এই সাফল্যের পর নিজেকে জলপাইগুড়ি বাসিন্দা হিসেবে গর্ব অনুভব করছেন। অন্যদিকে কৌশিকের এই সাফল্যের পর শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তাঁর মা সোনালী নাগ থেকে শুরু করে কলেজ কর্তৃপক্ষ এবং হোলিচাইল্ড স্কুলের প্রক্তনীদের অ্যালুমিনি অ্যাসোসিয়েশন।

জলপাইগুড়ি শহরের তরুনদল এলাকার বাসিন্দা কৌশিক নাগ। তাঁর ছাত্র জীবনের পুরোটাই জলপাইগুড়িতে। কৌশিকের স্কুল জীবন হোলিচাইল্ড স্কুল থেকে। ২০০৯ সালে হোলিচাইল্ড স্কুল থেকে আইসিএসসি এবং ২০১১ সালে আইএসসি পাশ করেন কৌশিক। এরপর জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার মধ্যমে জলপাইগুড়ি সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগে ভর্তি হন তিনি। ২০১৫ সালে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে থেকে পাশ করে যান কৌশিক।

তাঁর কর্মজীবন শুরু হয় টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিস (টিসিএস) থেকে। সেখানে কিছু দিন চাকরির পর তিনি পরবর্তীতে যোগদান করেন দামোদার ভ্যালি কর্পোরেশনে। এরপর ২০১৮ সালে কৌশিক যোগ দেন ইসরোতে। চন্দ্রযান-৩ তৈরির শুরুর দিন থেকেই ইসরোর টিমে কাজ করে চলেছেন কৌশিক। জানা গিয়েছে, ইসরোয় চাকরি জীবনের শুরুতেই চন্দ্রযান-৩-এর ওপর একটি প্রজেক্ট তাঁকে দেওয়া হয়। সেখান থেকেই শুরু হয় এই কাজ করা।

আরও পড়ুন- বিরাট ধাক্কা মমতার, পুর-নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ঘনিষ্ঠ মন্ত্রী তথা পুজোকর্তাকে CBI তলব

বুধবার চন্দ্রযান-৩ এর চাঁদের মাটিতে অবতরণের সময় বিজ্ঞানী এবং ইঞ্জিনিয়ারদের উচ্ছ্বাসের মাঝে কৌশিককে দেখা যায়। সেই ছবি সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হতেই একের পর এক শুভেচ্ছাবার্তার কমেন্ট আসতে শুরু করে। এদিন কৌশিকের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আজ আমি জলপাইগুড়িবাসী হিসেবে ইসরো টিমের একজন সদস্য হয়ে গর্ববোধ করছি। চন্দ্রযান-৩ এর সফল অবতরণের পর খুব আনন্দ হচ্ছে। আমাদের টিমের দীর্ঘ দিনের পরিশ্রম আজ সফল। দেশবাসীর শুভেচ্ছাতেই এটা আজ সফল হয়েছে। মা, স্ত্রী থেকে শুরু করে স্কুলের বন্ধু, প্রাক্তনী এবং ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের প্রিন্সিপাল স্যার শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

কৌশিক যে সময় হোলিচাইল্ড স্কুলে পড়তেন তখন সেখানকার প্রিন্সিপাল ছিলেন সিস্টার ক্রিস্টিন। তিনি বলেন, ‘আমি যখন স্কুলে ছিলাম সেই সময় কৌশিক আমার ছাত্র ছিল। কৌশিকের সাফল্যে ওর শিক্ষক হিসেবে আমি গর্ববোধ করছি। এটা হোলিচাইল্ড স্কুল এবং জলপাইগুড়ি শহরের গর্বের বিষয়। ওকে অনেক শুভেচ্ছা জানাই।'

আরও পড়ুন- তোলপাড় ফেলবে দুর্যোগ! ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি-শঙ্কা কোন কোন জেলায়?

হোলিচাইল্ড স্কুলের প্রাক্তনীদের অ্যালুমিনি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শুভাশীষ ঘোষ বলেন, ‘যখন স্কুলের প্রাক্তনীদের গ্রুপ থেকে জানতে পারলাম চন্দ্রযান-৩ এর সফল অবতরণের পেছনে আমাদের স্কুলের কৌশকেরও অবদান রয়েছে তখন সত্যি খুবই আনন্দ হচ্ছিল। আমি আপ্লুত ওর এই সাফল্যে। ফোন করে ওকে শুভেচ্ছা জানিয়েছি। পুজোর সময় জলপাইগুড়ি আসার কথা রয়েছে। তখন অবশ্যই অ্যালুমিনি অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে ওকে এই সফলতার জন্য সংবর্ধনাজ্ঞাপন করা হবে।'

এদিকে, ছেলের এই সাফল্যে খুশিতে আত্মহারা মা সোনালী নাগ। তিনি বলেন, ‘আমি আগে থেকেই বিষয়টি জানতাম। সেই মতো টিভিতে চোখ রেখে ছিলাম। যখন ঘোষণা হল চন্দ্রযান-৩ চাঁদের মাটিতে সফল অবতরণ করেছে সেই মুহুর্তে ছেলের সাফল্যের কথা ভেবে আনন্দে চোখে জল চলে এসেছিল। পরে কৌশিক আমাকে ফোন করে জানিয়েছিল।'

জলপাইগুড়ি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের অধ্যক্ষ অমিতাভ রায় বলেন, ‘কৌশিকের চন্দ্রযান-৩ অভিযানে অংশ নেওয়ার এই সাফল্য আমাদের কলেজের কাছে খুবই গর্বের বিষয়। জলপাইগুড়ি এলে ওকে আমরা সংবর্ধনা দেব।' অন্যদিকে, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে কেবল কৌশিকই নন, চন্দ্রযান-৩ এর ইসরোর টিমে ওই কলেজের ১৯৯৭ সালের মেকানিক্যাল বিভাগের অমরনাথ নন্দী এবং ২০০৪ সালের ব্যাচের সুজয় দলুই নামেও দুই প্রাক্তনী রয়েছেন।

ISRO Jalpaiguri West Bengal Chandrayaan 3
Advertisment