Student Protest Against SSC Supreme court Verdict: কে যোগ্য শিক্ষক আর কে অযোগ্য তা এখনও বাছাই করা যায়নি। এহেন পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে চাকরিহারা বাংলার হাজার হাজার শিক্ষক ও শিক্ষিকা। তা জেনেও বেপরোয়া পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। যোগ্য শিক্ষকদের প্রতি সুবিচারের দাবিতে বৃহস্পতিবার শ'য়ে শ'য়ে ছাত্রী পথে নেমে স্লোগান তোলে। শিক্ষিকাদের নেতৃত্বে হওয়া সেই মিছিলে অংশ নেওয়া ছাত্রীরা,“ছাত্র সমাজ দিচ্ছে ডাক- যোগ্য শিক্ষকরা সুবিচার পাক“ ,এই শ্লোগান তুলে এলাকা প্রদক্ষিণ করে। স্কুলে পড়াশুনা করতে আসা ছাত্রীদেরকে আদালতে বিচারাধীন বিষয় নিয়ে এভাবে পথে নামানোর ঘটনা জানতে পরে বেজায় চটে গিয়েছে ব্লক প্রশাসন।ঘটনার জবাবদিহি চেয়ে বিডিও ইতিমধ্যেই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকাকে নোটিশ পাঠিয়েছেন। একই ভাবে এই ঘটনার বিহিত চেয়ে শুক্রবার ব্লক ও জেলা প্রশাসনের নানা মহলে অভিযোগ জানিয়েছেন স্কুলের পরিচালন কমিটির সভাপতি।
’সত্যমেব জয়তে’, ভারতের জাতীয় এই নীতিবাক্যকে পাথেয় করে ১৯৩৪ প্রতিষ্ঠিত হয় জামালপুর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়। সময় গড়ানোর সাথে সাথে মাধ্যমিক স্তর থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তরে উন্নীত হওয়া স্কুলটির পরিচিতিও বাড়ে।সরকারী আর্থিক সহযোগীতায় স্কুলের জমিতে তৈরি হয় অনেক শ্রেণীকক্ষ। বাড়ে শিক্ষার্থী সংখ্যা। বর্তমানে এই স্কুলে পাঠরত ছাত্রীর সংখ্যা ছ'শোর বেশী। স্কুলের ১০ জন স্থায়ী শিক্ষিকার মধ্যে ১ জন শিক্ষিকা সুপ্রিম কোর্টেয় রায়ে চাকরি খুইয়েছেন। দু’জন প্যারাটিচার স্কুলে নিযুক্ত রয়েছেন ।
সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বাংলার প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা ও অশিক্ষক কর্মচারীর চাকরি চলে গিয়েছে। এর প্রভাব রাজ্যের অনেক স্কুলেই পড়েছে। তবে কোন স্কুলই সুপ্রিম কোর্টের এই রায় নিয়ে পড়ুয়াদের নিয়ে আন্দোলনে নামেনি। আন্দোলন যা করার তা চাকরি হারা শিক্ষক শিক্ষিকারই করছেন। তারই মধ্যে বৃহস্পতিবার এক ব্যতিক্রমী ঘটনা ঘটিয়ে বসে জামালপুর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়। তারা যোগ্য শিক্ষকদের প্রতি সুবিচারের দাবি জানাতে ওইদিন স্কুলে আসা ছাত্রীদের পথে নামিয়ে দেন। স্কুলের ব্যানার সহ হাতে লেখা নানা প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে স্কুলের ছাত্রীরা স্লোগান দিতে দিতে এলাকা প্রদক্ষিণ করেন। তাদের নেতৃত্ব দেন স্কুলের দুই শিক্ষিকা। সেই শিক্ষিকাদের সুরে সুর মিলিয়ে ছাত্রীরা স্লোগান তোলে ,“ যোগ্য শিক্ষকদের ফেরত চাই-ছাত্র সমাজ দিচ্ছে ডাক-যোগ্য শিক্ষকরা সুবিচার পাক“। আদালতে বিচারাধীন বিষয় নিয়ে স্কুলের ছাত্রীদের পথে নামানোর ঘটনা জানতে পেরে বেজায় চটে যান ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকরা।
বিডিও(জামালপুর) পার্থসারথী দে শুক্রবার বলেন, আদালতে বিচারাধীন একটা বিষয় নিয়ে স্কুলের ছাত্রীদের পথে নামানোটা সঠিক কাজ হয় নি। স্কুলে পড়াশুনা করতে আসা ছাত্রীদের আন্দোলনের ঢাল করে স্কুল কর্তৃপক্ষ গর্হিত কাছ করেছে। স্কুলের পরিচালন কমিটিকে অন্ধকারে রেখে স্কুল কর্তৃপক্ষ এই কাজ করছে। মহকুমা শাসকও স্কুলের এই কীর্তিতে অসন্তুষ্ট। আদালতে বিচারাধীন একটা বিষয়ে কেন ছাত্রীদেরকে ঢাল করে পথে নামানো হল তার জবাবদিহি স্কুলের প্রধান শিক্ষিকার কাছে চেয়েছেন বলে বিডিও জানিয়েছেন।
এ নিয়ে জামালপুর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা কাজরি বিশ্বাসের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনও উত্তর না দিয়ে ফোন কেটে দেন। স্কুলের পরিচালন কমিটির সভাপতি মিঠু পাল বলেন,প্রধান শিক্ষিকা নিজে একতরফা সিদ্ধান্ত নিয়ে এসব করেছেন।স্কুলের পরিচালন কমিটি এমনকি ব্লকের স্কুল পরিদর্শকে অন্ধকারে রেখেই প্রধান শিক্ষিকা এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন। এর বিহিত চেয়ে শুক্রবার ব্লক ও জেলা প্রশাসনের নানা মহলে চিঠি পাঠিয়েছেন বলে মিঠু পাল জানিয়েছেন। জামালপুর পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ শ্রীমন্ত রায় বলেন, কাদের ইন্ধনে স্কুল কর্তৃপক্ষ এমন একটা কাণ্ড ঘটালো তার তদন্ত হওয়া অত্যন্ত জরুরি।