চন্দননগরে গোল্ডলোন সংস্থার অফিসে ডাকাতির ঘটনার তদন্তে নেমে হতবাক পুলিশ। ডাকাতদের ফেলে যাওয়া ব্যাগ থেকে উদ্ধার হয়েছে দু'টি জ্যামার। ফলে, পেশাদার ডাকাতরা যে রীতিমত পরিকল্পনা করেই এই কাজে হাত দিয়েছিল তা স্পষ্ট। এই ডাক দলের সঙ্গে বড় কোন চক্রের যোগ রয়েছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
চন্দননগরের গঞ্জের বাজারে জিটি রোডের ধারে মঙ্গলবার গোল্টলোন সংস্থার অফিসে ডাকাতি রুখে দিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু, ডাকাতরা যে ঘোরেল তা আঁচ করতে পেরেছে খাঁকি উর্গিধারীরা। এ দিন দু'টি জ্যামার উদ্ধারের পর পুলিশের সন্দেহ আরও পোক্ত হল। ডাকাতির সময় যাতে কেই ফোন করে অন্যত্র বা পুলিশকে খবর দিতে না পারে তার জন্য ডাকাতরা জ্যামারের সাহায্য নিয়েছিল। বুধবার চন্দননগর কমিশনারেটের পুলিশ কমিশনার অর্ণব ঘোষ একথা জানান। কমিশনারের দাবি, জ্যামারের কারণেই ঘটনাস্থল থেকে ডিসি চন্দননগর বিদিতরাজ বুন্দেশ তাঁর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তা পারেননি।
মঙ্গলবার দুপুরে চন্দননগরে একটি গোল্ডলোন সংস্থার অফিসে ডাকাতি করতে ঢোকে জনা চারেক ডাকাত। চন্দননগরের গঞ্জের বাজারে জিটি রোডের ধারে ওই সংস্থার অফিস। মঙ্গলবার গঞ্জের বাজার বন্ধ থাকে। স্বাভাবিকভাবেই ওই দিন দুপুরে এলাকা ছিল শুনশান। বেলা আড়াইটের পর ওই সংস্থার অফিসে ঢুকে পড়ে সশস্ত্র কয়েকজন ডাকাত। প্রথমে সংস্থার কর্মীদের মারধর শুরু করে ডাকাতরা। পরে শুরু হয় লুঠ পর্ব।
ঘটনাস্থল থেকে মাত্র পাঁচশো মিটার দূরত্বে চন্দননগর থানা। কোনওভাবে ওই অফিসে ডাকাত-হানার খবর পেয়ে যায় পুলিশ। দ্রুত থানা থেকে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় পুলিশের বিশাল বাহিনী। পুলিশ ওই অফিসে ঢুকতেই গুলি ছুঁড়তে শুরু করে ডাকাতরা। চেষ্টা করে পালানোর। এমনকী বিল্ডিংয়ের ছাদে উঠে রাস্তায় লাফিয়েও পড়েছিলেন কয়েকজন ডাকাত। এক পথচারীকে বন্দুক ঠেকিয়ে তাঁর বাইক নিয়ে কয়েকজন চম্পট দেয়। পরে নাকা চেকিং চালিয়ে দুই দুষ্কৃতীকে ধরে ফেলে পুলিশ। পরে আরও একজন গ্রেফতার হয়।
ধৃতদের কাছ লুঠ হওয়া দেড় লক্ষ নগদ, তিনটে আগ্নেয়াস্ত্র এবং বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি উদ্ধার হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। লোন সংস্থার বয়ান অনুযায়ী ডাকাতরা সংখ্যায় ছিল চার জন। বাকি এক জনের সন্ধানে পুলিশি তল্লাশি চলছে। ডাকাতদের দলটি পড়শি রাজ্যের বলেও ধৃতদের জেরা করে জানতে পেরেছে পুলিশ। এদের প্রত্যেকেরই ১২ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন