আইইডি বিস্ফোরণে ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছে তাঁর দেহ। জঙ্গি হামলার পর ঘটনাস্থলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে দেহাংশ। কিন্তু ডান হাতের তর্জনীর আংটির গায়ে বিস্ফোরণের কোনও ক্ষত লাগেনি। ছেলের হাতের সেই ‘অক্ষত’ রুপোর আংটি দেখেই সন্তান হারানোর শোকে বিহ্বল বাবলু সাঁতরার মা। বৃহস্পতিবার দুপুরে পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলায় ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছে বাবলুর দেহ। বিস্ফোরণস্থলে পড়ে থাকা দেহাংশের মধ্যে ওই রুপোর আংটি দেখেই ছেলেকে চিনতে পেরেছেন বনমালী দেবী। এরপরই মায়ের ইচ্ছেয় সেই দেহাংশই উপত্যকা থেকে আনা হচ্ছে হাওড়ার বাউড়িয়ায়।
আরও পড়ুন, কাশ্মীরে নিহত বাংলার জওয়ান বাবলু যেন সত্যিই ‘ফাইটার’
বাবলুর ডান হাতের তর্জনীতে রুপোর আংটি ছিল। যেকথা বাবলুর মায়ের মতো জানেন তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু সন্দীপ পাল। পুলওয়ামায় হামলার ছবি ইন্টারনেটে দেখতে গিয়ে প্রথমে রুপোর আংটির হদিশ পান সন্দীপই। সেই দেহাংশের ছবি দেখার পরই সন্দীপ বুঝে যান, যে তাঁর প্রিয় বন্ধু আর নেই। এরপরই গোটা বিষয়টি তিনি বাবলুর পরিবারকে জানান। পরে বিষয়টি নজরে আসে বাবলুর পরিবারেরও। সন্দীপের কথা মতো ইন্টারনেটের সেই ছবি দেখে ছেলেকে চিহ্নিত করেন বাবলুর মা। তারপরই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে বাবলুর পরিবারের তরফে জানানো হয় যে, ওই দেহাংশটি বাবলুরই। নিহত জওয়ানের দেহাংশ যাতে ফেরানো হয়, সেই আর্জি রাখেন পরিজনরা।
আরও পড়ুন: কাশ্মীরে জঙ্গি হামলায় শহিদ হাওড়ার জওয়ান
এ প্রসঙ্গে বাবলুর এক আত্মীয় চন্দন দাস ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, "বাবলুর মা বলেছেন, ওই আংটিটি ওরই। তাই ওই দেহাংশটিই যাতে পাঠানো হয়, কর্তৃপক্ষের কাছে সেই আর্জিই করেছি আমরা।"
এদিকে, সন্তান শোকে কাতর বাবলুর মা। স্বামীকে হারিয়ে স্বভাবতই কান্নায় ভেঙে পড়েছেন স্ত্রী মিতা সাঁতরাও। আজ সকালেই সিআরপিএফের তরফে ফোন করে বাবলুর মৃত্যুসংবাদ জানানো হয় পরিবারকে। যে খবর পাওয়ার পরই বাউড়িয়ার চক কাশী রাজবংশী কলোনির সাঁতরা পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।