আশঙ্কাই সত্যি হল। শুক্রবার সকালে ফোনে এল সেই ‘দুঃসংবাদ’। তারপর থেকেই কান্নার রোল হাওড়ার বাউড়িয়ার সাঁতরা পরিবারে। জম্মু-কাশ্মীরে আত্মঘাতী জঙ্গি হামলায় যে জওয়ানরা মারা গিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন এ রাজ্যের বাবলু সাঁতরা। জঙ্গি হামলার খবর গতকাল টিভির পর্দায় পাওয়ার পরই আঁতকে উঠেছিল সাঁতরা পরিবার। টেলিভিশনের পর্দায় ঘটনার বীভৎসতা দেখে বাবলুর পরিজনরা ধরেই নিয়েছিলেন, তিনি ‘‘আর নেই’’। তবুও অফিসিয়ালি কিছু না জানানোয় শেষ আশায় বুক বেঁধেছিল সাঁতরা পরিবার। কিন্তু এদিন সকালে সেই আশা শোকের আবহে মিলিয়ে গেল।
অন্যদিকে, হাওড়ার বাউড়িয়ার পাশাপাশি শোকের ছায়া রাজ্যের আরেক জেলা নদিয়াতেও। কাশ্মীরে জঙ্গি হামলায় নিহত নদিয়ার তেহট্টের সুদীপ বিশ্বাস। বাবলুর মতো সুদীপের বাড়িতেও শোকের ছায়া।
আরও পড়ুন, পাকিস্তানকে দেওয়া ‘মোস্ট ফেভারড নেশন’-এর তকমা প্রত্যাহার ভারতের
বাবলুর ৬ বছরের মেয়ে ও স্ত্রী রয়েছে। স্বামীর মৃত্যুসংবাদ শুনে স্বভাবতই কান্নায় ভেঙে পড়েছেন স্ত্রী। বাবলুর মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ সাঁতরা পরিবার। নিহত জওয়ানের শ্যালিকা শম্পা কর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, ‘‘গতকাল টিভি চ্যানেলে খবরে দেখেছি। জানতাম উনি আর নেই। তবুও যতক্ষণ না অফিসিয়ালি কিছু জানানো হয়, ততক্ষণ তো নিশ্চিত হওয়া যায় না। আজ সকালে ফোন করে আমাদের জানানো হয়।’’ জামাইবাবুর স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে শম্পা আরও বললেন, ‘‘উনি সকলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন। সকলকে ফোন করে খবর নিতেন।’’ আজ সন্ধেয় বাবলুর দেহ এ রাজ্যে আনা হচ্ছে বলে পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন, কুড়ি বছরে কাশ্মীরে সবচেয়ে প্রাণঘাতী জঙ্গী হামলা, মৃত কমপক্ষে ৩৭
বাবলুর বাড়িতে ফোন করে পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন বাবলু সাঁতরার বাড়িতে যান মন্ত্রী অরূপ রায়। মন্ত্রী বলেন, ‘‘সরকার ওঁর পরিবারের পাশে রয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের পাশে রয়েছেন।’’ নিহত জওয়ানের বাড়িতে যান লক্ষ্মীরতন শুক্লা। তিনিও পরিবারের পাশে থাকার বার্তা দেন।
বৃহস্পতিবার দক্ষিণ কাশ্মীরের পুলওয়ামায় আত্মঘাতী জঙ্গি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ৪০ জন জওয়ান, জখম হয়েছেন আরও অনেকে। এ ঘটনার দায় স্বীকার করেছে জইশ-ই-মহম্মদ। জঙ্গি হামলায় দেশের জওয়ানদের মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছে গোটা দেশ। বদলা নেওয়ার দাবি উঠেছে সব মহলে। আজ জম্মু-কাশ্মীর যাচ্ছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং। ‘‘কড়া জবাব দেওয়া হবে’’ বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রাজনাথ। জঙ্গি হামলার ঘটনায় পাকিস্তানকে দেওয়া ‘মোস্ট ফেভারড নেশন’ তকমা প্রত্যাহার করছে ভারত সরকার।