মকর সংক্রান্তি উপলক্ষ্যে দুই বুলবুলি পাখির লড়াই আজও ঐতিহ্যমণ্ডিত, লড়াই দেখতে প্রচুর মানুষ ভিড় জমান এই দিনটায়। ঝাড়গ্রাম জেলার গোপীবল্লভপুরের ওড়িশা সীমান্তবর্তী বাজারসাই ও দক্ষিণসাইতে বুলবুলি পাখির লড়াইয়ের আসর বসে।
এই লড়াইয়ে পাখির প্রাণহানি ঘটে না, এমনকি রক্তপাতও হয় না। অনেকটা মল্লযুদ্ধের মতোই এক বুলবুলি পাখি অপর বুলবুলি পাখিকে ঠেলাঠেলি করে পরাজিত করে। একটা টেবিল কিংবা তক্তপোষের উপর দুটি পাখিকে ছেড়ে দিয়ে তাদের মধ্যে লড়াই লাগানো হয়। লড়াইয়ে হারজিত নির্ধারণ করার জন্য থাকেন বিচারকও। যে বুলবুলি জয় লাভ করে, তার জন্য থাকে ট্রফি এবং অন্যান্য পুরস্কার।
বুলবুলি পাখিকে লড়াইয়ে অভ্যস্ত করার জন্য পাখির মালিককে বেশ কয়েক মাস আগে থেকে পাখিকে নিয়ে কসরত করতে হয়। সবচেয়ে দর্শনীয় বিষয় হলো হাজার হাজার দর্শক, এবং তাঁদের হাজার চেঁচামেচি, হুল্লোড়েও পাখিরা উড়ে পালিয়ে যায় না।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রীয় পাখি পাচারের ছক বানচাল, উদ্ধার ময়ূর
গোপীবল্লভপুরে মন্দির সংলগ্ন মাঠে বুলবুলি পাখির এই লড়াই প্রায় ৪০০ বছর আগে শুরু হয়। প্রতিবছর দূরদূরান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষ সমবেত হন বুলবুলি পাখির লড়াই দেখতে। প্রাবন্ধিক মধুুপ দে এ বিষয়ে বলেন, “বহু প্রাচীন এই বুলবুলি পাখির লড়াই প্রতিযোগিতা। যে পাখির মালিক তাঁর পোষা বুলবুলিকে যত ভালো প্রশিক্ষণ দিতে পারবেন, তাঁরাই প্রতিযোগিতার আসরে এগিয়ে থাকেন এবং জয়ী হন। জঙ্গলমহলের এই বুলবুলির লড়াই আজও ঐতিহ্য বহন করে চলেছে।”

মকর সংক্রান্তি উপলক্ষ্যে জঙ্গলমহলের বিভিন্ন জায়গায় বসে মোরগ লড়াইয়ের আসরও । তবে মোরগ লড়াইয়ে মোরগের পায়ে ছোট ছুরি অথবা ব্লেড বাঁধা থাকে, এবং এই লড়াইয়ে মোরগের প্রাণহানি কিংবা রক্তপাতের ঘটনাও ঘটে, যেটা বুলবুলি পাখির লড়াইয়ে হয় না।