UPSC-Assistant Geophysicist: এগল্প তরুণ-তরুণীদের অনুপ্রেরণা জোগাতে বাধ্য। নিজের অদম্য জেদ আর অফুরান ইচ্ছাশক্তিকে পাথেয় করে জীবনযুদ্ধে সব বাধা পেরিয়ে শেষমেশ সাফল্যের শীর্ষে বাংলারই এক কৃতী যুবক। বছর একত্রিশের মানস মাহাত (Manas Mahato) যে কীর্তি গড়ে ফেলেছেন, তা এখনও লোকের মুখে-মুখে ফিরছে। মানসের অভাবনীয় এই সাফল্যে উচ্ছ্বসিত তাঁর গোটা গ্রাম। ফি দিন বাড়িতে অভিনন্দন জানাতে ঢল প্রতিবেশী-বন্ধুবান্ধবদের। ধনুকভাঙা পণ মনে নিয়ে পাহাড়চুম্বী সাফ্যল্যের শীর্ষে পৌঁছেছেন মানস, তাঁর এই নিদারুণ লড়াই কাহিনী নিয়ে এলাকায় চর্চা যেন থামছেই না।
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, কোনওরকম কোচিং (Coaching) ছাড়াই UPSC-র মতো কঠিন পরীক্ষায় তাকলাগানো ফল ঝাড়গ্রামের (Jhargram) বাসিন্দা মানস মাহাতর। UPSC-র অ্যাসিস্ট্যান্ট জিওফিজিক্স (Assistant Geophysicist) পদে চাকরির পরীক্ষায় গোটা দেশের মধ্যে ১৪তম স্থান অধিকার করেছেন ঝাড়গ্রামের বাসিন্দা মানস মাহাত। মানসের এই দারুণ কৃতিত্বে গোটা জঙ্গলমহল (Jangalmahal) খুশির স্রোতে ভাসছে। তাঁর বাড়ি গিয়ে সংবর্ধনা জানিয়ে এসেছেন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব থেকে শুরু করে জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ।
ঝাড়গ্রামের নয়াগ্রামের (Nayagram) চাঁদাবিলা গ্রামের বাসিন্দা বছর একত্রিশের মানস মাহাত। লেখাপড়ায় অত্যন্ত মেধাবী এই যুবক এর আগে CSIR NET ও রাজ্যের সেট (Set Exam) পরীক্ষাতেও সফলতার সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়েছেন। মানসের বাবা চুনারাম মাহাত অবসরপ্রাপ্ত সরকারি আধিকারিক। মানসের মা গন্ধেশ্বরী মাহাত গৃহবধূ। মানসের দুই দাদাও সরকারি চাকুরিজীবী। বাড়ির ছোট ছেলে মানস ছেলেবেলা থেকেই লেখাপড়ায় অত্যন্ত মেধাবী।
নয়াগ্রামের চাঁদাবিলা এসসি হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা (Madhyamik) পাশ করেছেন মানস। এরপর ২০১০ সালের ঝাড়গ্রামের বাণীতীত্রথ হাইস্কুল থেকে বিজ্ঞান বিভাগে উচ্চ মাধ্যমিক পীর্কষা পাশ করেন তিনি। ঝড়গ্রাম রাজ কলেজে শুরু পড়াশোনার পরবর্তী জীবন। ফিজিক্স (Physics) নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন কলেজে। ২০১৩-তে খড়গপুর IIT-তে (IIT Kharagpur) এমএসসিতে ভর্তির সুযোগ পান মানস।
আরও পড়ুন- Zero waste: তাজ্জব কীর্তি! বাঙালি যুবকের অবিস্মরণীয় দক্ষতায় শ্রেষ্ঠত্বের ‘জগৎজোড়া’ স্বীকৃতি!
UPSC-র অ্যাসিস্ট্যান্ড জিওফিজিক্স পদের পরীক্ষায় এই তাকলাগানো ফল করেও পা মাটিতেই রয়েছে এই বাঙালি যুবকের। নিজের এই অভূতপূর্ব কীর্তি প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমে মানস মাহাত বলেন, "জিওফিজিক্সের কোনও পেপার পড়িনি। নতুন বই কিনে সেটা পড়েই চাকরির পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছিলাম। এর আগে ২০২৩ সালে লিখিত পরীক্ষা হয়েছিল। ওই পরীক্ষায় পাশ করার পর দিল্লির ইউপিএসসি ভবনে গিয়ে ইন্টারভিউ দিয়ে এসেছিলাম। পরে যে মেধাতালিকা প্রকাশিত হয় তাতে ১৪তম স্থান অর্জন করেছি।"
এদিকে, গ্রামের ছেলের সর্বভারতীয় স্তরের পরীক্ষায় এমন অভূতপূর্ব সাফল্যের খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়তেই খুশির স্রোত বয়ে যাচ্ছে। ফি দিন মানসদের বাড়িতে ঢল প্রতিবেশীদের। প্রত্যেকেই শুভেচ্ছা জানাতে আসছেন। মানসের এমন সাফল্যে গর্বিত এলাকার আট থেকে আশি। রাজনৈতিক দলের নেতারাও বাড়ি বয়ে গিয়ে সংবর্ধনা জানিয়ে আসছেন জঙ্গলমহলের এই কৃতী পড়ুয়াকে।