গ্রুপ ডি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ১৯১১ জন ‘অযোগ্য’র চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। পাশাপাশি চাকরিহারাদের বেতন ফেরতেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি সুপ্রতিম মজুমদারের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছিলেন চাকরিহারা গ্রুপ ডি কর্মীরা। সেই মামলাতেই সিঙ্গল বেঞ্চের বেতন ফেরানোর নির্দেশের ওপর অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ দিল ডিভিশন বেঞ্চ। তবে ১৯১১ জনের চাকরি বাতিলের নির্দেশ নিয়ে ডিভিশন বেঞ্চ এদিন কোনও সিদ্ধান্ত জানায়নি।
ওএমআর শিটে কারচুপির অভিযোগে গ্রুপ ডি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ১৯১১ জন ‘অযোগ্য’র চাকরি বাতিল হয়েছে। গ্রুপ ডি-তে নিয়োগ দুর্নীতি কথা আদালতে স্কুল সার্ভিস কমিশন স্বীকার করে নিয়েছিল। এরপরই তাঁদের চাকরি বাতিল, বেতন বন্ধের নির্দেশ দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। রায়ে উল্লেখ রয়েছে যে, এই ১৯১১ জন কোনওভাবেই সংশ্লিষ্ট স্কুলে ঢুকতে পারবে না।
তারপরই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে মামলা করেন চাকরি হারানো ১৯১১ জনের একাংশ। মামলাকারীদের অভিযোগ ছিল, যেদিন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছিল সেদিনের শুনানিতে তাঁদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হয়নি। এছাড়া প্রশ্ন তোলেন যে, ৫ বছর কাজের পর কেন বেতনের টাকা তাঁরা ফেরৎ দেবেন?
বৃহস্পতিবার বিচারপতি ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি হয় চাকরি হারানো গ্রুপ ডি কর্মীদের। সেই শুনানিতে ডিভিশন বেঞ্চ মামলাকারীদের থেকে জানতে চান কেন সিঙ্গল বেঞ্চে নিজেদের বক্তব্য রাখলেন না ? মামলাকারীদের আইনজীবীদের বক্তব্য, ‘আমাদের বলার কোনও সুযোগই দেওয়া হয়নি।’
মামলাকারীর পক্ষের আইনজীবী অশোক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'সকলের বিচার পাওয়ার অধিকার রয়েছে। গ্রুপ ডি কর্মীদেরও আছে। দোষ প্রমাণ হওয়ার আগেই চাকরি চলে গেল।' পাল্টাকমিশনের পক্ষের আইনজীবী জানান, 'সিবিআই এই মামলার সঙ্গে যুক্ত। গাজিয়াবাদ থেকে যে হার্ডডিস্ক উদ্ধার করা হয়েছে তাই আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে। তারপরই আদালত সিদ্ধান্ত নিয়েছেদীর্ঘদিন সিঙ্গল বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়েছে। এখন আবেদনকারীরা যদি বলেন যে তাঁদের বক্তব্য শোনা হয়নি, তা ঠিক নয়।'
এদিনের শুনানি শেষে ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, আগামী ৩ মার্চ এই মামলার পরবর্তী শুনানি। ততদিন সিঙ্গল বেঞ্চের বেতন ফেরানোর নির্দেশের ওপর অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ জারি করা হল।