/indian-express-bangla/media/media_files/2025/11/05/jnu-2025-11-05-11-23-42.jpg)
Jawaharlal Nehru University: মামলা-মকদ্দমার পাহাড় JNU-এ।
Jawaharlal Nehru University: দেশের অন্যতম সেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় (জেএনইউ), যা একসময় তার মুক্ত চিন্তা ও ছাত্র আন্দোলনের জন্য পরিচিত ছিল, এখন আইনি লড়াইয়ের ময়দানে পরিণত হয়েছে। গত এক দশকে বিশ্ববিদ্যালয়টি দিল্লি হাই কোর্টে ৬০০-রও বেশি মামলার পক্ষ বা বিপক্ষে রয়েছে— প্রশাসন, শিক্ষক, ছাত্র থেকে শুরু করে কর্মচারীদের মধ্যকার দ্বন্দ্বে।
‘দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’-এর এক অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ২০১১ সাল থেকে তিনজন উপাচার্যের আমলে অন্তত ২০৫টি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে, যার মধ্যে ১৫৮টি ছাত্র এবং ৪৭টি শিক্ষক সম্পর্কিত।
তিন উপাচার্য, তিন রকম অধ্যায়:
এস. কে. সোপোরি (২০১১–২০১৬):
তাঁর আমলে মাত্র ৩৭টি মামলা হাই কোর্টে গিয়েছিল। অধিকাংশই পিএইচডি থিসিস, হোস্টেল বরাদ্দ, বা যৌন হয়রানির অভিযোগ সংক্রান্ত। মাত্র ৫টি মামলা ছিল নীতিগত প্রশ্নে। সোপোরি বলেন, “আমরা ‘ওপেন ডোর’ নীতি মানতাম। ছাত্ররা নির্দিষ্ট দিনে সরাসরি দেখা করতে পারত। কথোপকথনের মাধ্যমেই সমস্যার সমাধান হতো।”
এম. জগদীশ কুমার (২০১৬–২০২২):
তাঁর আমলে মামলা তিনগুণ বেড়ে ১১৮-এ পৌঁছায় — যার মধ্যে ৯২টি ছাত্রদের দায়ের করা। অধিকাংশই প্রতিবাদ, শৃঙ্খলাভঙ্গ ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা ঘিরে। প্রশাসন নিজেও একবার আদালতে যায় — ২০১৭ সালের আদেশ ভঙ্গের অভিযোগে ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি গীতা কুমারীসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে।
আদালত প্রত্যেককে ২০০০ টাকা জরিমানা করে, তবে স্বীকার করে তারা “উচ্চশিক্ষা pursuing ছাত্র।”
আরও পড়ুন- MGNREGA: তিন বছর পর গ্রামে ফিরছে রোজগার, বিশেষ শর্তে বাংলায় ফের শুরু হতে পারে ১০০ দিনের কাজ
সন্তিশ্রী ধূলিপুড়ি পণ্ডিত (২০২২–বর্তমান):
তাঁর আমলে মামলা কিছুটা কমলেও, ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে আইনি খরচ ছুঁয়েছে ২৮.৪ লক্ষ টাকা, যা গত ১৪ বছরে সর্বাধিক। ৫০টি নতুন মামলা হয়েছে, যার মধ্যে ৩৮টি ছাত্রদের। অধিকাংশই শাস্তিমূলক পদক্ষেপ, ফি বৃদ্ধি ও নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে।
আদালতের পর্যবেক্ষণ ও ছাত্রদের জয়:
দিল্লি হাই কোর্টের নথি অনুযায়ী, কুমারের আমলে দায়ের করা ৯২টি ছাত্র মামলার মধ্যে প্রায় ৪০টিতেই আদালত ছাত্রদের পক্ষে রায় দিয়েছে। আদালত বলেছে, জেএনইউ বারবার “ন্যায়বিচারের মৌলিক নীতির লঙ্ঘন” করেছে, যথাযথ শুনানি ছাড়াই শাস্তি দিয়েছে। ২০১৬ সালের আফজল গুরু স্মরণ অনুষ্ঠান, ৭৫% উপস্থিতি নীতি, ‘অকুপাই অ্যাড-ব্লক’ আন্দোলন, এবং নজীব আহমেদের নিখোঁজ মামলা– এসব ঘটনাই আদালতে গিয়েছিল।
আরও পড়ুন-Suvendu Adhikari: ‘রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হবে’, SIR নিয়ে শুভেন্দুর হুঁশিয়ারি, তৃণমূলের পাল্টা সুর
‘গণতান্ত্রিক কাঠামো ভেঙে পড়েছে’ — শিক্ষক সংগঠন জেএনইউ শিক্ষক সমিতির সভাপতি সুরজিত মজুমদার বলেন, “২০১৬-র পর থেকে প্রশাসন ও সরকারের মধ্যে একটি নতুন ধরনের ‘সমন্বয়’ তৈরি হয়েছে। আগে সিদ্ধান্ত হত অংশগ্রহণমূলক আলোচনার মাধ্যমে। এখন সেই গণতান্ত্রিক কাঠামো ভেঙে পড়েছে।”
অন্যদিকে বাম-ঘনিষ্ঠ প্রাক্তন ছাত্রনেতা এন সাই বলাজি বলেন, “এটি এক উপাচার্যের নয়, একটি বৃহত্তর নীতির ফল। ক্ষমতাসীন সরকার ‘স্বায়ত্তশাসন’-এর নামে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে নিয়ন্ত্রণের হাতিয়ার বানাচ্ছে।” অন্য মত পেশ করেছেন ABVP নেতা বিকাশ প্যাটেল। তাঁর বক্তব্য, “আগে ক্যাম্পাসে বামেদের একাধিপত্য ছিল। এখন নতুন প্রজন্ম নিজের মতো করে চিন্তা করছে। এটিকে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বলা ঠিক নয়।”
/indian-express-bangla/media/agency_attachments/2024-07-23t122310686z-short.webp)
Follow Us