চাকরি বাতিল নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামলেন প্রাথমিক শিক্ষকরা। শনিবার শিলিগুড়ির বাঘাযতীন পার্কে প্রতিবাদ জানান তাঁরা। জানা গিয়েছে, ২০১৪ সালের পরীক্ষায় শিলিগুড়ি থেকে ৩৫০ জন প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি হয়। তাঁদের দাবি, শিলিগুড়ি শিক্ষা জেলায় অ্যাপটিটিউট টেস্ট নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ মাত্র কয়েকজনের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে এত বড় পদক্ষেপ করেছে। এর বিরোধীতায় আন্দোলন চলবে বলেও জানিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষকরা।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় শুক্রবার নজিরবিহীন রায় ঘোষণা করেছেন এক ধাক্কায় ৩৬ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বাতিল করে দেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষার ভিত্তিতে ২০১৬ সালে নিযুক্ত হয়েছিলেন ৪২ হাজার ৫০০ শিক্ষক। এই নিয়োগে ইন্টারভিউতে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। এমনকী নিয়োগ পরীক্ষায় অ্যাপটিটিউড টেস্টও নেওয়া হয়নি বলে ইন্টারভিউয়াররাই বিচারপতির কাছে সাক্ষ্য দিয়ে জানিয়েছেন।
৩৬ হাজার জনের চাকরি বাতিল হলেও বাকি ৬ হাজার ৫০০ জনের চাকরি বহাল থাকছে। রাজ্যকে ৩ মাসের মধ্যে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করে তা শেষ করারও নির্দেশ দেওয়া হয়। আর যাদের চাকরি বাতিল হয়েছে তাঁদের মধ্যে কেউ ইতিমধ্যে প্রশিক্ষণ নিয়ে থাকলে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় তাঁরাও অংশ নিতে পারবেন বলে জানান বিচারপতি। বিচারপতি রায়ে জানান, আগামী ৪ মাস চাকরি বাতিল হওয়া শিক্ষকরা স্কুলে যেতে পারবেন। তবে পার্শ্বশিক্ষকের বেতনের হারে বেতন পাবেন। এদিকে এই যুগান্তকারী রায় নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে রাজ্যে। এই নিয়ে এ দিন বিক্ষোভ দেখানো হয়।
আরও পড়ুন- অস্বস্তি বহাল অভিষেকের, আবেদনে কর্ণপাতই করলেন না বিচারপতি
একদিকে যেমন আশঙ্কায় ভুগছেন ‘বেনিয়মে’ চাকরি পাওয়া শিক্ষক-শিক্ষিকারা, অন্যদিকে, আশায় বুক বাঁধছেন সেই সব চাকরি প্রার্থীরা, যাঁরা দিনের পর দিন নায্য চাকরির দাবিতে রাস্তায় বসে আন্দোলন করছেন। শুক্রবার বিচারপতি রায় দেওয়ার পর তাঁরা অনেকেই আশা প্রকাশ করেছেন, এবার হয়ত চাকরিটা হবে। এই বিষয়ে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায়কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, 'কে কী আশা দেখছে, বলতে পারব না। তবে তাঁদের বলব, আমি যে রায়টা দিয়েছি, সেটা ভাল করে পড়ুন।'
এদিকে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে যাবেন বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল। এপ্রসঙ্গে বিচারপতি বলেন, 'যাওয়ার সুযোগ যখন আছে, তখন নিশ্চয় যাবেই। যাওয়ারই তো কথা।'