করোনা প্রকোপে বেসামাল অবস্থা। এই অবস্থায় যেকোনও বড় জমায়েত বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বীরভূম প্রশাসন। ঠিক হয়েছিল যে, ঐতিহ্যবাহী জয়দেব কেন্দুলির মেলায় এবার মকর স্নানের ক্ষেত্রে শুধু পুন্যার্থীদের ছাড় দেওয়া হবে। বসবে না মেলা। কিন্তু, আচমকাই প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তে বদল ঘটলো। এবারও বসবে জয়দেবের মেলা। মঙ্গলবার এই ঘোষণা করেছেন রাজ্য়ের মন্ত্রী তথা বোলপুরের বিধায়ক চন্দ্রনাথ সিনহা।
কেন মেলার সিদ্ধান্ত? এক্ষেত্রে ধর্মীয় আবেগের দোহৈই দিয়েছেন মন্ত্রী। পাশাপাশি তাঁর আশ্বাস, জয়দেবের মেলা হবে সম্পূর্ণ কোভিডবিধি মেনেই। করোনাকালে জয়দেবের মেলা বসতে প্রশাসনের ছাড় প্রসঙ্গে রাজ্যের ক্ষুদ্র, মাঝারি উদ্যোগ ও বস্ত্র দফতরের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা বলেছেন, 'জয়দেব মেলা যেমন হয় সেরকমই হবে, তবে কোভিড বিধি মেনে। পুন্যার্থীদের জন্য স্নান ও পুজো দেওয়ার ব্যবস্থাও থাকছে। জয়দেবের ঐতিহ্যশালী মেলা। মানুষের ধর্মীয় আবেগকে তো আমরা বন্ধ করতে পারবো না। সেই জন্যই আমরা মেলা করতে বাধ্য হয়েছি। তাছাড়া যারা পুন্যার্থী আসবেন তাঁরা খাবেন কোথায়। তাই খাবার দোকান করা হবে। বাউল –কীর্তনের আখড়া থাকছে। এই মেলা আউল বাউলের মেলা বলে পরিচিত। ফলে তাদের মেলায় আসা আমরা বন্ধ করতে পারব না। তাদের আখড়ার ব্যবস্থা থাকছে। সমস্ত কিছুই হবে নিয়ম মেনেই।'
বীরভূম জেলাতে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা লসংক্রমিতের সংখ্যা। জেলায় প্রতিদিন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা কয়েক'শ ছাড়াচ্ছে। তার মধ্যে মেলার সিদ্ধান্ত আদৌ কতটা যুক্তি সহ্গত তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে বিরোধ শিবির। বীরভূমের বিজেপি নেতৃত্বের বক্তব্য, স্কুল-কলেজ বন্ধ, এদিকে মেলা হবে। তাহলে স্কুল কলেজও খুলে দেওয়া হোক। গোটাই রাজনীতি বলে অভিযোগ গেরুয়া শিবিরের। অন্যদিকে জেলা সিপিআইএম নেতাদের দাবি, তৃণমূলপ-বিজেপি কোভিডকালেও ধর্মীয় রাজনীতি করে চলেছে।
বাধা কেটে কোভিড আবহেও বসবে জয়দেব মেলা। চলবে মকরের পূণ্যস্নান। মন্ত্রীর ঘোষণার পরই এদিন মেলা চত্বরে আলো লাগানোর কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। শুরু হয়েছে আখড়া ও অস্থায়ী দোকান নির্মাণের কাজও। ইলামবাজার পঞ্চায়েত সমিতি ইতিমধ্যে পুন্যার্থী সুবিধার্থে বেশ কিছু পদক্ষেপ করেছে। কিন্তু প্রশ্ন আউল-বাউলদের বিরাট জমায়েতে কীভাবে কোভিডবিধি নজরে রাখবে প্রশাসন?