যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র মৃত্যুর তদন্তে নেমে আরও এক প্রাক্তনীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। ধৃত জয়দীপ ঘোষ নামে ওই যুবকের বাড়ি পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের কাঁদরায়। বাড়ির ছেলের গ্রেফতারির কথা জানার পর থেকে কার্যত ঘুম উড়েছে পরিবারের। জয়দীপ র্যাগিংয়ের মতো ঘটনায় কোনওভাবেই জড়িত নয় বলে দাবি তাঁর বাবার।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগিং-কাণ্ডে আরও এক প্রাক্তনী পুলিশের জালে। ধৃত পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের জয়দীপ ঘোষ। এই যুবক যাদবপুরের ‘আন্তর্জাতিক সম্পর্ক’ বিভাগের ছাত্র ছিলেন। তিনি ২০২১ সালে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করেছেন। বর্তমানে যাদবপুর এলাকাতেই ভাড়াবাড়িতে থাকতেন তিনি। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে নিয়মিত যাতায়াত ছিল তাঁর। বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর দাপটও ভালোই ছিল।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৯ সালে তৎকালীন বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়কে হেনস্থার ঘটনায় জয়দীপের নাম জড়িয়েছিল। এবার তাঁর বিরুদ্ধেই উঠেছে যাদবপুরের প্রথম বর্ষের ছাত্র-মৃত্যুতে জড়িত থাকার অভিযোগ। অভিযোগ, ঘটনার দিন হস্টেলের গেট বন্ধ করে দিয়ে পুলিশকে তদন্তে যেতে বাধা দিতে জয়দীপই ছিলেন মুখ্য ভূমিকায়।
আরও পড়ুন- স্বামীর কংগ্রেসে যোগ নিয়ে মুখ খুললেন ফিরহাদ কন্যা
অনেক স্বপ্ন নিয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়তে আসা প্রথম বর্ষের ছাত্রের ভয়াবহ মৃত্যুর ঘটনা রাজ্যজুড়ে তোলপাড় ফেলে দিয়েছে। ৯ আগষ্ট রাতে ঘটে ওই মর্মান্তিক ঘটনা। এর ঠিক দু'দিন পর অর্থাৎ ১২ আগষ্ট কেতুগ্রামের কাঁদরার বাড়িতে চলে আসেন জয়দীপ। ১৭ আগষ্ট ইমেলে নোটিশ পাঠিয়ে তাঁকে তলব করে যাদবপুর থানার পুলিশ। ইমেল পেয়ে শনিবার যাদবপুর থানায় যান জয়দীপ। দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর শনিবার রাতের দিকে পুলিশ জয়দীপকে গ্রেফতার করে।
জয়দীপের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। শুক্রবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমিস্ট্রি বিভাগের সদ্য প্রাক্তনী মেমারির নাসিম আখতারকেও পুলিশ গ্রেফতার করে। এই নিয়ে যাদবপুর কাণ্ডে প্রাক্তনী ও বর্তমান পড়ুয়া মিলিয়ে মোট ১৩ জন গ্রেফতার হয়েছেন।
আরও পড়ুন- যাদবপুর কাণ্ড: মারাত্মক মন্তব্য! ক্যাম্পাসে সেনা নামানোর কথা মদনের মুখে
কেতুগ্রামের কাঁদরার বাসিন্দা বংশীলাল ঘোষ ও উত্তরা ঘোষের দুই ছেলের মধ্যে ছোট জয়দীপ। বড় ছেলে শুভদীপও যাদবপুরের প্রাক্তন ছাত্র। তিনি বর্তমানে তুলনামূলক সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা করছেন। ছোট ছেলে জয়দীপ একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি বিশ্বভারতীতে পড়েছিলেন। পরে তিনি যাদবপুরে ভর্তি হন। ২০২১ সালে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করে যান জয়দীপ।
আরও পড়ুন- বড় পদক্ষেপ! যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য হিসেবে কাকে বেছে নিলেন রাজ্যপাল?
কাঁদরা গ্রামে বংশীলাল ঘোষের একটি মিষ্টির দোকান আছে। এরই পাশাপাশি তিনি চাষবাসও করেন। বংশীলালবাবু বলেন, 'আমার ছোট ছেলে যাদবপুর থানার বিক্রমগড়ে ঘর ভাড়া নিয়ে থাকছিল। সেখানে থেকে চাকরির পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল। যাদবপুর কাণ্ডে আমার ছেলে কোনওভাবেই জড়িত নয়। আমার ছেলে নির্দোষ।'