অত্যাচারের বহর জানলে গায়ের রোম খাঁড়া হয়ে যাবে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলের একদল ছাত্র ও প্রাক্তনীর কাণ্ড জানলে মাথা ঘুরে যাবে। নতুন পড়ুয়া হস্টেলে এলেই তাঁকে পেরোতে হতো 'ইন্ট্রোডাকশন' পর্ব। অর্থাৎ বড় দাদাদের সামনে নিজের সম্পর্কে তাঁকে বলতে বলা হতো। আর এই পর্বটাই চিল সাংঘাতিক।
যাদবপুর-কাণ্ডে ধৃত তিনজনকে জেরায় ঠিক এমনই কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য হাতে পেয়েছে পুলিশ। এমনই খবর সূত্রের। ইন্ট্রোডাকশনের নামে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঠাঁয় দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছিল স্বপ্নদীপ কুণ্ডুকেও। স্বপ্নদীপ সবেমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকতে শুরু করেছিল। সূত্রের খবর, যে তিনদিন সে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছিল তার মধ্যে দু'দিনই ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হয়েছিল তাঁকে।
আরও পড়ুন- ‘ইন্ট্রো’র নামে মাত্রাছাড়া ‘মানসিক অত্যাচার’! যাদবপুর-কাণ্ডে ধৃত আরও ২
পুলিশ সূত্রে খবর, দু'দিন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্র স্বপ্নদীপ কুণ্ডুকে সিনিয়র দাদাদের ঘরে যেতে হয়েছিল। রাত ১১ টা থেকে ভোর সাড়ে ৩টে পর্যন্ত তাঁকে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। পা ব্যথা করলেও বসতে দেওয়া হয়নি। ঠাঁয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে তাঁকে দাঁড়িয়ে থেকেই ইন্ট্রোডাকশন পর্ব পার করতে হয়েছিল। এমনকী ঘাম বেরোলেও হাত দিয়ে মোছার উপায় ছিল না। ঘাম মুছতে হয়েছে দেওয়ালে।
আরও পড়ুন- গারদে অভিযুক্ত, তবু সন্তানহারা মায়ের মনে ‘কু ডাকছে’! বড় আশঙ্কার কথা স্বপ্নাদেবীর মুখে
যাদবপুর-কাণ্ডের তদন্ত যত এগোচ্ছে এমনই রোমহর্ষক কাহিনী সামনে আসছে। আপাতত স্বপ্নদীপ মৃত্যুর তদন্তে নেমে পুলিশ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে। প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র সৌরভ চৌধুরীকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁকে জেরা করেই বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের দুই পড়ুয়া দীপশেখর দত্ত ও মনোতাষ ঘোষকে পুলিশ গ্রেফতার করে। পুলিশ সূত্রের খবর, বিশ্ববিদ্যালয়ে এই 'র্যাগিং' চক্রে আরও বেশ কয়েকজনের যোগ রয়েছে। ধৃতদের জেরা করে বাকিদের খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ।