একদিকে মুখ্যমন্ত্রীর ঝটিকা সফর, অন্যদিকে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন। দুই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দিনভর কার্যত দুর্গে পরিণত হয়ে রইল সুপার স্পেশালিটি এসএসকেএম হাসপাতাল।
মুখ্যমন্ত্রী আসবেন বলে এদিন সকাল দশটা থেকেই নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছিল এসএসকেএম চত্বর। এমারজেন্সির সামনে থিকথিক করছিল পুলিশ। তার একপাশে বিক্ষোভরত জুনিয়র ডাক্তারদের ব্যারিকেড, অন্যদিকে কয়েকশো রোগী এবং তাঁদের আত্মীয়দের ভিড়। হাসপাতালের অন্য গেটগুলির দখলও নিয়েছিল পুলিশ। এসএসকেএম-এর দুটি গেটের মধ্যে একের পর এক পুলিশের গাড়ি সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। কোথাও গার্ড রেল দিয়ে, কোথাও আবার নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করে যাতায়াত নিয়ন্ত্রণ করছিল পুলিশ।
দুপুরে মুখ্যমন্ত্রীর প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই হাসপাতালে আসেন একদল শীর্ষ পুলিশ আধিকারিক। ফলে নিরাপত্তাজনিত তৎপরতা চরমে পৌঁছয়। মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীনই কয়েকশো তৃণমূল কর্মী ঢুকে পড়েন এমারজেন্সির সামনে। তাঁদের বের করার জন্য নতুন করে পুলিশ বাহিনী আসে। ঘন্টা দুয়েক বৈঠকের পর মুখ্যমন্ত্রী হাসপাতাল ছাড়লেও পুলিশি নজরদারি শিথিল হয় নি।
দুপুরে কিছুক্ষণ পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও বিকেল থেকে ফের উত্তপ্ত হতে শুরু করে এসএসকেএম। নার্সদের একাংশও যোগ দেন আন্দোলনে। অ্যাকাডেমিক ভবনের বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। বিকেল ৫টার পর পরিস্থিতি সামলাতে নতুন করে বড় সংখ্যায় পুলিশবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
দিনভর এই উত্তেজনায় বিপাকে পড়েছেন রোগী এবং তাঁদের আত্মীয়রা। মুর্শিদাবাদের রাণিনগরের বাসিন্দা সাবিনা খাতুনের স্বামী এমারজেন্সিতে ভর্তি রয়েছেন। তাঁর কথায়, "একদিকে ডাক্তারদের আন্দোলন, অন্যদিকে পুলিশের বাড়াবাড়ি - দু'য়ে মিলে সবচেয়ে বিপদে পড়েছি আমরাই। কথায় কথায় আমাদের ধাওয়া করছে পুলিশ, দাঁড়াতে দিচ্ছে না, অসহ্য পরিস্থিতি।"