বিধাননগরের সেক্টর ফাইভ এলাকায় বেআইনি একটি পাঁচতলা বাড়ি ভেঙে ফেলার নির্দেশ সোমবারই দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তবে মঙ্গলবারই বদলে গেল তাঁর নির্দেশ। এর কারণটা অবশ্য অত্যন্তই মানবিক। সব দিক পর্যালোচনার পরেই আপাতত বেআইনি ওই নির্মাণ ভাঙার ব্যাপারে স্থগিতাদেশ দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
বিধাননগরের সল্টলেক সেক্টর ফাইভ এলাকার শান্তিনগরে একটি বাড়ি বেআইনিভাবে নির্মাণ করা হয়েছিল। সেই বাড়িটিই ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সোমবার অর্থাৎ আজ দুপুর ১টার মধ্যে ওই বাড়ি ভেঙে ফেলার কাজ শুরু করতে হবে বলে বিধাননগর পুরনিগমকে নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি। ওই বাড়ির বিদ্যুৎ ও জলের লাইন চ্ছিন্ন করার পরেই বাড়ি ভাঙার কাজ শুরুর নির্দেশ দেয় আদালত। তবে মঙ্গলবারই বদলে গেল তাঁর সেই নির্দেশ।
কেন নির্দেশ বদল বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের?
মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টে গিয়েছিলেন বিধাননগরের ৩৬ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর চামেলি নষ্কর। বিচারপতির সামনেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। ওই বাড়ি ভেঙে ফেলা হলে পুজোর মুখে ১৬টি পরিবারের মাথার উপর থেকে ছাদ সরে যাবে বলে জানান তিনি। হাউহাউ করে ভরা এজলাসেই কাঁদতে থাকেন কাউন্সিলর। এরপর বিচারপতিও কাউন্সিলরকে ওই পরিবারগুলির পাশে থাকতে অনুরোধ করেন। এছাড়াও এদিন ওই বাড়ির ১৬টি পরিবারের সঙ্গেও কথা বলেন বিচারপতি। তারপর বাড়ি ভাঙা সংক্রান্ত শুনানি শেষের পর বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জানান, বাসিন্দাদের কথা শোনার পর তিনি তাঁর মত বদলাচ্ছেন। আপাতত উৎসবের মরশুম শেষ না হওয়া অবধি বাড়ি ভাঙা হবে না বলে তিনি জানান।
১৬টি পরিবারের উদ্দেশ্যে কী বললেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়?
"আপনারা যে ঠছেকেছেন এটা দেখার পর আমি মত বদল করছি। প্রোমোটার আপনাদের ঠাকাতে পারে, কিন্তু আদালত পারে না। মানবিকতা বলে একটি জিনিস আছে। আপনাদের বাড়ি এখনই ভাঙছি না। দুর্গাপুজোর সময় মাথার উপর থেকে ছাদ চলে যাবে এটা আমিও চাই না। তবে পুজো মিটে গেলে পরবর্তী নির্দেশ দেবে আদালত। প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় বাহিনী দাঁড় করিয়ে ওই নির্মাণ ভাঙা হবে।"
আরও পড়ুন- রুজিরার আর্জি, ইডি-সংবাদ মাধ্যমকে বেনজির নির্দেশ হাইকোর্টের
আরও কী কী নির্দেশ বিচারপতির?
আপাতত আগামী ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ি ভাঙার নির্দশ স্থগিত থাকবে। ওই বাড়িতে থাকা ১৬টি পরিবারের ভবিষ্যৎ নিয়ে বিধাননগর পুরসভার মেয়র, চেয়ারম্যান ও স্থানীয় কাউন্সিলর আলোচনা করবেন। মানবিকভাবে বিবেচনা করতে হবে। শেষমেশ কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হল সেটা আগামী ২৪ নভেম্বরের মধ্যে আদালতে জানাতে হবে। ওই ১৬টি পরিবারকে বকেয়া বাবদ ফ্ল্যাটের টাকা প্রোমোটারকে দিতে হবে না। প্রোমোটারদেরও ফ্ল্যাটের সব টাকা বাড়িমালিকদের ফেরত দিতে হবে।