প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বিরাট নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের। ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষায় নিয়োগ পাওয়া ৩৬ হাজার অপ্রশিক্ষিত শিক্ষকের চাকরি বাতিল করে দিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। নিয়োগের পরীক্ষায় অ্যাপটিটিউড টেস্ট নেওয়া হয়নি বলে সাক্ষ্য দিয়ে জানিয়েছেন ইন্টারভিউয়াররা। এরপরই এই নির্দেশ দিল আদালত।
বিচারপতির নির্দেশে উল্লেখ, আগামী চার এইসব শিক্ষকরা স্কুলে যেতে পারবেন। তবে পূর্ণ নয়, এঁরা বেতন পাবেন প্যারা টিচারের বেতনের হারে। হাই কোর্টের রায়, রাজ্যকে এই তিন মাসের মধ্যে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করে শেষ করতে হবে। বিচারপতি আরও জানিয়েছেন, যাঁদের চাকরি বাতিল হয়েছে, তাঁরা ইতিমধ্যে প্রশিক্ষণ নিয়ে থাকলে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় তাঁরাও অংশ নিতে পারবেন। প্রয়োজনে দুর্নীতি মামলায় ধৃত মানিক ভট্টাচার্যের কাছ থেকে নেওয়া অর্থেও নিয়োগ করা যেতে পারে।
নিয়োগ না পেয়ে অপ্রশিক্ষিত ১৪০ জন হাই কোর্টে মামলা করেন। তাঁদের দাবি, সম্প্রতি আদালত প্রকাশিত তালিকায় দেখা যায় যে কম নম্বর পেয়ে অনেক অপ্রশিক্ষিত প্রার্থী চাকরির সুপারিশপত্র পেয়েছেন। তার পরেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় প্যানেল বাতিলের হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, 'ঢাকি সমেত বিসর্জন' দিয়ে দেওয়া হবে। জানিয়েছিলেন, ২০১৬ সালের প্রাথমিক শিক্ষ নিয়োগ প্রক্রিয়ার পুরো প্যানেল বাতিল করে দেবেন।
২০১৪ সালে টেটের নিয়োগে দুর্নীতি রয়েছে বলে আদালতে মামলা করেছিলেন বিজেপি নেতা তথা আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি। তাঁর দাবি ছিল, সেবছর নিয়োগ ৪২ হাজার ৫০০ জনের নিয়োগ হয়েছিল। কেউ কেউ মেধার ভিত্তিতেও চাকরি পেলেও যাঁরা বেআইনিভাবে চাকরি পেয়েছিলেন তাঁদের বিষয়ে তদন্ত করা হোক। এই মামলার তদন্তভার সিবিআইকে দিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তরুণজ্যোতির আর্জি ছিল, ৩০ হাজারের বেশি এমন প্রার্থীদের নিয়োগ করা হয়েছে, যাঁদের নম্বর মামলাকারীদের থেকে কম। গত ডিসেম্বর মাসে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় ১৩৯ জনের তালিকাটি খতিয়ে দেখার জন্য পর্ষদকে নির্দেশ দিয়েছিলেন।