নিয়োগ দুর্নীতির একেরপর এক মামলায় চাঞ্চল্যকর নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্ট বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সমালোচনায় মুখর হয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ, এসএসসি, রাজ্য সরকারের নানা ভূমিকার। শাসক দলের নেক নজরেও পড়েছেন এই বিচারপতি। বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের কাছে রীতিমতো 'ঈশ্বর' বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। সেই বিচারপতিই গত সপ্তাহে একটি মামলার শুনানিতে বলে বসেন, 'মুখ্যমন্ত্রী তো ভাল কাজ করছেন। আমি খারাপ কিছু বলব কেন?' কেন এমন কথা বললেন তিনি? বিচারপতির এই মন্তব্যকে কেন্দ্র করে জোর চর্চা শুরু হয়।
এসবের মধ্যেই এ দিন এক মামলার শুনানিতে গত সপ্তাহে মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে নিজের করা মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। বললেন, 'শিক্ষা পর্ষদ যদি ভাল কাজ করে তার প্রশংসা আমি করবই। সরকারের যদি সঠিক ভূমিকা থাকে তবে মুখ্যমন্ত্রীর কাজেরও প্রশংসা করব। আবার যদি দেখি শিক্ষা পর্ষদ কোনও ভুল কাজ করছে, তবে তার সমালোচনাও আমি করব। এর পিছনে অন্য কোনও কারণ নেই।'
গত রবিবার ছিল প্রাথমিকে টেট পরীক্ষা। পাঁচ বছর পর পরীক্ষার জন্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সামগ্রিক ব্যবস্থাপনা দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। মঙ্গলবারই তিনি বলেছেন, ‘টেট হওয়ার পর কার্বন কপি দিয়ে দেওয়া হয়েছে। মনে হচ্ছে কাজ ভাল হচ্ছে।’
গত ২৫ নভেম্বর অযোগ্যদের ‘বেনামি’ নিয়েগ সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নিশানায় পড়েছিল রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল। চরম হুঁশিয়ারি দিয়ে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় মোখিক পর্যবেক্ষণ বলেছিলেন, ‘আমি ইলেকশন কমিশনকে বলব, তৃণমূল কংগ্রেসের লোগো প্রত্যাহার করার জন্য। সংবিধান নিয়ে যা ইচ্ছা করা যায় না। দল হিসেবে তাদের মান্যতা প্রত্যাহার করতে বলব কমিশনকে।’
শুনানিতে মুখ্যমন্ত্রীর নামও উল্লেখ করে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘আমি মুখ্যমন্ত্রীর যন্ত্রণা বুঝতে পারি। কিন্তু কিছু দালাল, যারা মুখপাত্র বলে পরিচিত, তারা আদালতের নামে যা ইচ্ছা বলছে। নিয়োগ হলেই আদালতে গিয়ে স্থগিতাদেশ নিয়ে আসছে। আদালত কি এগরোলের মতো স্থগিতাদেশ বেচে নাকি? যে আদালতে এলেই স্থগিতাদেশ পেয়ে যাবে।’
নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত করছে সিবিআই। গড়া হয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার বিশেষ দল। তদন্তে সেই দলের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। এতেই খান্ত হননি তিনি। পরে সিবিআইয়ের বিশেষ তদন্তকারী দল ভেঙে তা পুর্নগঠন করেন।