ময়নাগুড়িতে বন্ধ হয়ে গেল সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত জুট মিল। মিল মালিকের অভিযোগ, এর জন্য দায়ী কিছু স্থানীয় তৃণমূল নেতা কর্মীর "দাদাগিরি"। থানায় জানিয়ে লাভ না হওয়ায় মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়ে এবার নবান্নের দ্বারস্থ হলেন মালিক। ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে ময়নাগুড়ির হুসলুরডাঙায়।
কাজ না করে টাকা দাবী করায় জুট মিলের দুই শ্রমিক শুভ্রজিত মন্ডল ও ইন্দ্রজিৎ মন্ডলকে কাজ থেকে বাদ দিয়ে দেন ময়নাগুড়ির বাসিন্দা তথা মিল মালিক নিধিরচন্দ্র মন্ডল। তাঁর অভিযোগ, এরপরেই স্থানীয় দুই তৃণমূল নেতা বাপী ইসলাম ও সুশীল বাড়ই কারখানায় চড়াও হয়ে ৫০,০০০ টাকা দাবী করে হুমকি দেন ও মারধর করেন।
নিধিরবাবু জানান, ৯ জানুয়ারি ময়নাগুড়ি থানায় ঘটনা নিখিত অভিযোগ করার পরেও পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। অভিযুক্ত তৃণমূল নেতারা ময়নাগুড়ি ব্লক সভাপতির ঘনিষ্ঠ বলেই নিষ্ক্রিয় পুলিশ, এমনটাই মনে করেন তিনি। তাই "বাধ্য হয়ে" মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়ে নবান্নে চিঠি পাঠিয়েছেন নিধিরবাবু।
চিঠির একাংশ
নিধিরবাবুর আইনজীবী পার্থ চৌধুরী জানান, "২০১৮ সালের জানুয়ারী মাসে পাটের সুতলি তৈরীর এই কারখানা চালু হয়। বিহার থেকে দক্ষ শ্রমিক এনে স্থানীয় শ্রমিকদের প্রশিক্ষিত করে তাঁদের কাজ দিয়ে এলাকার উন্নতি করা ও কারখানাকে সুন্দরভাবে পরিচালনা করাই ছিল উদ্দেশ্য। খুব ভালো চলছিল কারখানা।"
কিন্তু ইদানিং গোলমাল দেখা দিচ্ছিল। পার্থবাবু বলেন, "সম্প্রতি এক শ্রমিক কারখানার মেশিন ড্যামেজ করে দেন। তাঁকে বাদ দেওয়া হয়। কয়েকজন শ্রমিক কাজ ছেড়ে দেন। এরপর স্থানীয় আইএনটিটিইউসি নেতারা এসে বলেন, ছাঁটাই করা ও কাজ ছেড়ে যাওয়া শ্রমিকদের ফের কাজে নিতে হবে। এই বলে প্রথমে চাপ সৃষ্টি করেন, তারপর মারধর। আমরা প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে জানানোর পাশাপাশি নবান্নেও জানালাম।"
থানায় লিখিত অভিযোগ
যাঁর বিরুদ্ধে মদত দেওয়ার অভিযোগ, সেই ময়নাগুড়ি ব্লক ১-এর ব্লক সভাপতি মনোজ রায় সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, "ময়নাগুড়ি শিল্প বান্ধব। কাঁচা মালের অভাব দেখিয়ে কারখানা সাত দিনের জন্য বন্ধ রেখেছেন খোদ মালিক। এখানে কোনো তোলাবাজির ঘটনা হয় না। ওই কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ রয়েছে। সেই অসন্তোষ মেটাতেই স্থানীয় শ্রমিক নেতারা গিয়েছিলেন।"
ঘটনায় তৃণমূলের জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী জানান, "যদি এই ঘটনায় আমাদের কেউ যুক্ত থাকে, তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাউকে রেয়াত করা হবে না।"