নিস্তার নেই, কালীপুজোর সন্ধ্যায় ঠাঁই হয়েছে জেলে। রাতে কোর্ট থেকেই মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে নিয়ে যাওয়া হয়েছে প্রেসিডেন্সি জেলে। এরপর হয় মন্ত্রীর মেডিক্যাল। তারপরই বনমন্ত্রীকে জানানো হয়, প্রেসিডেন্সিতে তাঁকে থাকতে হবে পয়লা বাইশ সেলে। যা শুনেই বেঁকে বসেন বালু (জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ওই নামেই পরিচিত)। সূত্রে খবর, কিছুতেই পয়লা বাইশ সেলের মধ্যে যেতে চাইছিলেন না মন্ত্রী। কম্বলে ঘুমোতেও নিমরাজি ছিলেন। শেষপর্যন্ত অবশ্য, পয়লা বাইশ সেলেই রয়েছেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। সূত্রে খবর, খাটে নয়, মেঝেতে কম্বলের উপর শুয়েই মন্ত্রী রাত কাটিয়েছেন।
রেশন দুর্নীতি মামলায় পুজোর পর প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী তথা রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে গ্রেফতার করেছিল ইডি। গ্রেফতারির পর দিন কয়েক বেসরকারি হাসপাতালে কাটিয়ে ছিলেন ইডি হেফাজতে। এরপর কালীপুজোর দিন জ্যোতিপ্রিয়র জেল হেফাজত হয়। কোর্টে থেকেই মন্ত্রীকে নিয়ে যাওয়া হয় প্রেসিডেন্সি জেলে। জেলের পয়লা বাইশ সেলে মন্ত্রীর জন্য ছিল না কোনও খাটের ব্যবস্থা। আদালতের তরফে অসুস্থ মন্ত্রীকে খাট দেওয়ার কোনও নির্দেশ নেই বলে জেল কর্তৃপক্ষের তরফে। ফলে সেলের মেঝেতেই কম্বলের উপর শুয়েছিলেন জ্যোতিপ্রিয়।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত রাজ্যের আরেক প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়েরও ঠাঁই হয়েছে প্রেসিডেন্সি জেলের পয়লা বাইশ সেলে। গুরুত্বপূর্ণ মামলার বন্দিদের এখানেই রাখা হয়ে থাকে। রয়েছেন জঙ্গি মুশা ও আফতাবও। এবার পয়লা বাইশ সেলের বাসিন্দা হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মন্ত্রিসভার অন্যতম সদস্য বালু। এই সেলকে ঘিরেই সবচেয়ে বেশি নিপরাপত্তা থাকে।
জানা গিয়েছে, ধৃত মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়কে অন্য কারোর সঙ্গে সেল শেয়ার করতে হচ্ছে না। একাই থাকছেন তিনি। নেই টিভি, খাট, খবরের কাগজের মতো পরিষেবার সুবন্দোবস্ত। খবরের কাগজ এলেও তা সেলের সর্বত্র ঘোরে। ফলে মন্ত্রী কখন সেটিতে চোখ বোলাতে পারবেন তা নিশ্চিৎ করে বলা যায় না।
জেলে খাট না পেলেও আদালতের নির্দেশে মত সেলে বাড়ি থেকে দেওয়া খাবারই খেয়ছেন মন্ত্রী। তবে জানা গিয়েছে, এদিন সকাল থেকে আবারও খাওয়ার খেতে বেঁকে বসেছেন জ্যোতিপ্রিয়।
উল্লেখ্য, এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারের পয়লা বাইশ সেলের বাসিন্দা। অভিযোগ ছিল, প্রভাবশালী হওয়ায় আইন লঙ্ঘন করে জেলেই খাট, বিছানা পেয়েছিলেন অপসারিত তৃণমূল মহাসচিব। তাঁর জন্য ছিল ইজি চেয়ারও। যা নিয়ে হইচই হয়। এরপরই জেলে গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন ইডি-র আধিকারিকরা। তারপরই সেল থেকে খাট, বিছানা, ইডি চেয়ার সরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন- ভাইফোঁটাতেই বিরাট বদল আবহাওয়ায়! যার আঁচ মিলবে কাল থেকেই…