হনুমান রিয়েলকর্ন প্রাইভেট লিমিটেড ও গ্রেসিয়াস ইনোভেটিভ প্রাইভেট লিমিটেড। এই দু’টি সংস্থায় শেয়ারের মাধ্যমেই নাকি দুর্নীতির টাকা সাদা করতেন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, এমনটাই দাবি ইডির। তারা পরিচালনা করত এই সংস্থাগুলো? তদন্তে উঠে এসেছে প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী তথা বর্তমানে বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়র প্রাক্তন আপ্তসহায়ক অভিজিত দাসের মা এবং স্ত্রী হনুমান রিয়েলকর্ন প্রাইভেট লিমিটেড ও গ্রেসিয়াস ইনোভেটিভ প্রাইভেট লিমিটেডের ডিরেক্টর হয়েছিলেন!
কী ধরণের কাজ করত এই দুই সংস্থা? জেরায় বারে বারে ইডি গোয়েন্দাদের এই প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়েছে অভিজিতকে।
সোমবার সংবাদ মাধ্যমের সামনে নিজেই সেসব স্পষ্ট করেছেন জ্যোতিপ্রিয়র প্রাক্তন আপ্তসহায়ক অভিজিত দাস। তিনি বলেন, 'আমার মা এবং স্ত্রীকে সংস্থার ডিরেক্টর করা হয়েছিল। মন্ত্রী যখন নির্দেশ দেন, তা তো পালন করতেই হবে। তাঁর অনুরোধও এক প্রকার নির্দেশই। আমি ইডিকে সবই জানিয়েছি। ওই সংস্থায় কী লেনদেন হয়েছিল, জানি না। ২০১৪ সালেই আমার মা এবং স্ত্রী সংস্থা থেকে সরে আসেন।'
অর্থাৎ অভিজিৎ বলতে চেয়েছেন যে, মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের নির্দেশেই তাঁর মা এবং স্ত্রীকে সংস্থার ডিরেক্টর পদে বসানো হয়েছিল। কিন্তু নথি অনুসারে ওই দুই সংস্থার ডিরেক্টর পদ থেকে এখনও পদত্যাগ করেননি অভিজিতের মা ও স্ত্রী! কেন?জ্যোতিপ্রিয়র প্রাক্তন আপ্তসহায়কের দাবি,তাঁর মা ও স্ত্রী সংস্থাগুলি থেকে পদত্যাগ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সে সময় তাঁদের পদত্যাগ করতে দেওয়া হচ্ছিল না।
আরও পড়ুন- কেলেঙ্কারিতে লালু যোগ বালুর! রেশন-কাণ্ডের সঙ্গে কীভাবে জড়াল পশুখাদ্য দুর্নীতি?
১০ দিনের ইডি হেফাজত শেষে রেশন বণ্টনে দুর্নীতি মামলায় সোমবার ফের আদালতে পেশ করা হয়েছে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে। সিজিও থেকে বেরনোর পথে তিনি ফের দাবি করেছেন 'আমি নির্দোষ। ওরা অন্যায়, অনৈতিক কাজ করছে।' এর আগে তিনি দাবি করেছিলেন রেশন কেলেঙ্কারি নিয়ে যা হচ্ছে তা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারাণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সব জানেন। যা নিয়ে শাসক দলের অন্দরেই শোরগোল পড়ে যায়।
আরও পড়ুন- সল্টলেকের ব্যবসায়ীর বাড়িতে কেন নিয়মিত যেতেন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়? নজর ইডির
উল্লেখ্য, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের গ্রেফতারির দিনই তাঁর প্রাক্তন আপ্তসহায়ক অভিজিউ দাসের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছিল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা দল। পরে তাঁকে বার বার ইডি দফতরে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। অভিজিতের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েই একটি মেরুন রঙের ডায়েরি পেয়েছিল ইডি। সেখানে রেশন সংক্রান্ত তথ্য রয়েছে বলে দাবি কেন্দ্রীয় সংস্থার। সেই ডায়েরিতেই নাকি এই দুই সংস্থার উল্লেখ রয়েছে বলে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার।