জেলে বসেই বীরভূমে দল চালাচ্ছেন কেষ্ট? অন্তত তাঁরই দলের এক নেতার বিস্ফোরক মন্তব্যে তোলপাড় পরিস্থিতি। বীরভূমের তৃণমূল নেতা কাজল শেখের অভিযোগ, 'জেলে বসেই কেষ্টদার সঙ্গে ফোনে কথা হচ্ছে বীরভূম জেলা পরিষদের সভাপধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরীর'। কললিস্ট ঘেঁটে দেখলেই সবটা পরিস্কার হয়ে যাবে বলেও দাবি তাঁর। খোদ বিরোধীদের এই অভিযোগ এবার বীরভূমের তৃণমূলের নেতার গলায় উঠে আসায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে। কাজল শেখ যখন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি সম্পর্কে এই মন্তব্য করছেন তখন তাঁর পাশেই দেখা গিয়েছে নানুরের তৃণমূল বিধায়ককে।
তোলপাড় ফেলে দিলেন বীরভূমের তৃণমূল নেতা কাজল শেখ। রবিবার বীরভূমের নানুরে একটি চা-চক্রে যোগ দিয়েছিলেন তৃণমূলের এই নেতা। সেখানে তাঁর সঙ্গে ছিলেন নানুরের তৃণমূল বিধায়ক বিধান মাঝি। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল সম্পর্কে বিস্ফোরক মন্তব্য করে বসেন কাজল। তিনি বলেন, 'বিকাশদার সঙ্গে হয়ত ফোনে কথা হচ্ছে কেষ্টদার। তাই উনি বলছেন কেষ্টদার কথা মতো দল চলছে। তাঁর ফোন ঘাঁটলেই সবটা বোঝা যাবে।' শুধু তাই নয়, খোদ তৃণমূল সুপ্রিমো বীরভূমে দলের কোর কমিটি গঠন করে গেলেও বৈঠক না হওয়ায় দলেরই জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন এই তৃণমূল নেতা।
আরও পড়ুন- ‘এতদিনে পারেননি, এবার ডাবল ইঞ্জিনের সরকার বাংলায়’, কোন ছকে ‘বদল’ চান নাড্ডা?
রাঙামাটির জেলায় বরাবরই অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর নেতা বলে পরিচিত কাজল শেখ। গরু পাচার মালায় অনুব্রত মণ্ডল জেলে যাওয়ার পর থেকে বীরভূমে তৃণমূলের সাংগঠনিক কাজকর্ম নিয়ে বিপত্তি তৈরি হয়। শেষমেশ মন্ত্রী তথা বিধায়ক চন্দ্রনাথ সিনহা ও জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী দলের হাল ধরেন। তবে এতেও জেলায় দল পরিচালনা নিয়ে অসন্তোষ থামেনি। শেষমেশ গত ৩০ জানুয়ারি বীরভূমে এসে জেলায় দলের একটি কোর কমিটি তৈরি করে দিয়ে গিয়েছিলেন খোদ তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
৭ জনের সেই কমিটিতে অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর নেতা কাজল শেখকে ঠাঁই দেন তৃণমূলনেত্রী। এছাড়াও ওই কমিটিতে রয়েছেন বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী, বিধায়ক-মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিহা, শতাব্দী রায়, অভিজিত সিংহ, আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, অসিত মালরা। প্রতি সপ্তাহে কমিটি বৈঠক করে দলের কাজ নির্ধারণ করবে বলেও নির্দেশ দিয়ে গিয়েছিলেন তৃণমূলনেত্রী। কাজল শেখের দাবি, খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেই নির্দেশই মানা হচ্ছে না। কোর কমিটির বৈঠকের আগেই জেলা কমিটির বৈঠক কেন হবে তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন কাজল।