স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে পেঁয়াজের খোসা ছাড়ানোর মতো একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য রোজ সামনে আসছে। এই দুর্নীতি কাণ্ডের মুখ্য চরিত্র কালীঘাটের কাকু ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রকে নিয়ে চার্জশিটে তোলপাড় ফেলা দাবি ইডি-র। চার্জশিটে উল্লেখ, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার্তা মানিক ভট্টাচার্যের কাছে পৌঁছে দিতেন কালীঘাটের কাকু-ই। মানিকও এখন জেলবন্দি। তবে কী ধরনের বার্তা তা খোলসা করা হয়নি চার্জশিটে।
এবার চার্জশিটে ইডি-র অভিযোগ, খাস কালীঘাটে তৃণমূলের দলীয় পার্টি অফিসে বসে চাকরি বিক্রির চক্র চালাতেন সুজয়কৃষ্ণ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাড়াতে বসেই এই দুর্নীতি চক্র চলছিল বলে মনে করছে ইডি। প্রসঙ্গত, শুক্রবারই কাকুর বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করেছে ইডি। সেখআনে কেন্দ্রীয় এজেন্সির দাবি, জেরায় গোয়েন্দাদের কাছে চাকরি বিক্রির কথা স্বীকার করেছেন সুজয়কৃষ্ণ।
তদন্তকারীদের দাবি, মানিক ভট্টাচার্যের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা ছিল কালীঘাটের কাকুর। সুজয়ই তাঁদের জানিয়েছেন, তাঁর সুপারিশেই একুশের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী হিসাবে টিকিট পান মানিক। পলাশিপাড়া থেকে বিধানসভায় জেতেন মানিক।
আরও পড়ুন শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে বিরাট ঘোষণা! বড় খবর দিলেন মুখ্যমন্ত্রী!
দায়ের করা চার্জশিটে ইডি-র অভিযোগ, কালীঘাটের তৃণমূল অফিসে বসেই বাঁকা পথে আসা চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতেন সুজয়। নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত তৃণমূলের দুই বহিষ্কৃত যুব নেতা কুন্তল ঘোষ ও শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বেসরকারি কলেজ সংগঠনের নেতা তাপস মণ্ডলের সঙ্গে কালীঘাটের ওই অফিসে বসেই বৈঠকও করেছেন তিনি।
এদিকে, হৃদরোগের চিকিৎসা করাতে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হতে চেয়ে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছেন সুজয়কৃষ্ণ। তাতে আপত্তি জানিয়েছে ইডি। বিচারপতি প্রশ্ন করেন, এতে অসুবিধা কোথায়। বিচারপতির মন্তব্য, ‘‘হাসপাতাল নিয়ে তো প্রত্যেকেরই নিজস্ব পছন্দ-অপছন্দ থাকে। তবে এ ক্ষেত্রে কেন সেটা বেসরকারি হাসপাতাল, তা বোঝা যাচ্ছে না। সুজয় যদি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে চান, তাতে ইডি-র আপত্তি কেন?" বৃহস্পতিবারের মধ্যে বিষয়টি সম্পর্কে ইডি-কে তাদের মতামত জানানোর নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ।