/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2018/10/feature-759.jpg)
পুরোদমে কাজ চলছে
কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গেছে। হাতে মাত্র আর কয়েকটা দিন। তার পরেই বাঙালির প্রিয় আলোর উৎসব কালীপুজো। সবে মাত্র দুর্গাপুজো শেষ হয়েছে। এবার বাঙালির মনকে মাতাবে আলোর উৎসব। বাংলার ঘরে ঘরে আলোর রোশনাই জ্বলে উঠবে।
আর সে কারণেই প্রতি বছরের মত দক্ষিণ ২৪ পরগণার বারুইপুরের চম্পাহাটির বাজি গ্রামগুলিতে এখন ব্যস্ততা তুঙ্গে। দিনরাত এক করে চলছে বাজি বানানোর কাজ। হাড়াল, নুড়িদানা, বেগমপুর প্রভৃতি গ্রামে হরেক রকমের বাজি তৈরির কাজ চলছে। কেউ বানাচ্ছেন তুবড়ি, কেউ ফুলঝুরি, কেউ চরকা, কেউ রংমশাল-সহ আরও অনেক কিছু।
আরও পড়ুন, Firecrackers banned: পশ্চিমবঙ্গে নিষিদ্ধ ১০৫, ছাড়পত্র পেয়েছে সাতটি শব্দবাজি
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2018/10/drying-work.jpg)
চম্পাহাটি স্টেশন থেকে হাঁটাপথে মিনিট ১০ গেলেই হারাল গ্রাম। এই গ্রামে ঢুকতেই বসে বাজি বাজার। তার প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গেছে। এখন এখানে ঘরে ঘরে সাজো-সাজো রব। আতসবাজির পসরা সাজিয়ে ইতিমধ্যে বসে পড়েছেন দোকানিরা।
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2018/10/shopping-started.jpg)
ছেলে, মেয়ে, বৃদ্ধ, বৃদ্ধা, সবাই ব্যস্ত বাজি বানানোর কাজে। কেউ বাজির মশলা তৈরি করছেন, কেউ আবার খোলে মশলা ভরার কাজ করছেন। কেউ সেই বাজি বাক্সে ভরে তা বিক্রি করার উপযুক্ত করছেন। এক সময় এই বাজি গ্রামের মানুষ চাষবাস ও কলকাতায় কাজ করে সংসার চালাতেন। এখন দীপাবলি উৎসবে আতসবাজির আলো ওঁদের সংসারে আলো জ্বালায়। তাই দীপাবলি উৎসবের আগে ওঁরা কোমর বেঁধে নেমেছেন বাজি তৈরি করে সংসারে বাড়তি আয়ের যোগান দিতে।
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2018/10/charki.jpg)
তাঁদের হাতের জাদুতে তৈরি হচ্ছে ফুলঝুরি, চরকি, রং মশালের মতো আতস বাজি। হাড়াল, পিয়ালি, সোল গয়ালিয়া, বাজে হাড়াল প্রভৃতি প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে পুরুষদের পাশাপাশি মহিলারা এসে সকাল থেকেই নেমে পড়ছেন বাজি তৈরিতে। সকাল ৯ টা থেকে কাজ শুরু হয়ে সন্ধ্যে পর্যন্ত চলে। মহিলারা কেউ ১৮০ টাকা, কেউ আবার ২০০ টাকা রোজে আতসবাজি তৈরি করেন। আতসবাজি তৈরির পাশাপাশি বাজি প্যাকেজিংয়ের কাজও তাঁরা করেন। দীপাবলি উৎসব এলেই কাজের চাপ বাড়ে। রাতের ঘুম উড়ে যায়।
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2018/10/womens-participation-in-cracker-making.jpg)
গৃহবধূ মামণি সর্দার জানান, "স্বামী একটা ছোট কাজ করেন। দুই ছেলেকে নিয়ে সংসার সেভাবে চলে না। তাই সাত বছর ধরে এই কাজ করছি। দৈনিক রোজে এই কাজ করি। বারুদের স্তূপে বসে চরকি, ফুলঝুরি তৈরি করি। ছেলেদের মানুষ করতেই বাজি তৈরির মতো ঝুঁকির কাজে নেমেছি।" একই কারণে পুষ্প বৈদ্যও এই কাজ করেন। তিনি জানান, এক ছেলে ও এক মেয়ে। দিন আনা দিন খাওয়া পরিবার। ওদের লেখাপড়ার জন্যই এই কাজ করা। মাসের শেষে চার-পাঁচ হাজার টাকা স্বামীর হাতে তুলে দিতে পেরে ভালো লাগে। এক সঙ্গে ১০ জন মহিলা হাড়ালের এই কারাখানায় কাজ করেন।
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2018/10/womens-participation-in-cracker-making-1.jpg)
সবাই সংসার বাঁচাতে আতসবাজি কারখানায় কাজ করেন। দীপাবলি উৎসবেই বেশি আয় হয়। সারা বছর তারই অপেক্ষায় থাকেন তাঁরা। এখন চম্পাহাটির হাড়ালে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। মহিলাদের তৈরি আতসবাজি চলে যাচ্ছে প্যাকিং হয়ে বিভিন্ন দোকানে।