এক মুসলিম মহিলার হাতে পূজিত হন মা কালী। তাঁর হাতেই এপুজোর শুরু। বছরের পর বছর ধরে চলে আসা মালদহের হবিবপুরের এই কালীপুজো ঘিরে এলাকায় উৎসাহ-উদ্দীপনার শেষ নেই। অনেকে এতল্লাটের দেবী-মূর্তিকে 'মশান কালী' নামেও ডেকে থাকেন।
হবিবপুরের বুলবুলচণ্ডী পঞ্চায়েত এলাকার কেন্দুয়া গ্রামের কালীপুজো ঘিরে বরাবরই বাড়তি উৎসাহ থাকে এলাকায়। এই এলাকায় কথিত রয়েছে, স্বপ্নাদেশ পেয়ে এখানকার এক মুসলিম মহিলা শেফালী বেওয়া কালীপুজো শুরু করেন। কেন্দুয়া গ্রামের রেল লাইনের ধার ঘেঁষে এই কালীপুজো হয়।
৬৫ বছরের শেফালী বেওয়া প্রতি বছর নিময়-নিষ্ঠা মেনে শ্যামা মায়ের আরাধনা করেন। আজ থেকে ৪০ বছর আগে স্বপ্নাদেশ পেয়ে তিনি কালীপুজো শুরু করেন বলে জানিয়েছেন। এলাকায় জনশ্রুতি, বছর ৪০ বছর আগে শেফালী বেওয়া নামে ওই মহিলার কঠিন অসুখ হয়েছিল। একাধিক চিকিৎসক তাঁর রোগ ধরতে পারেননি। এরপর হঠাৎই একদিন নাকি ওই মহিলা দেবীর স্বপ্নাদেশ পান। স্বয়ং মা কালীই নাকি তাঁকে স্বপ্নে দেখা দিয়েছিলেন। কালীপুজো করলেই তাঁর রোগ সেরে যাবে বলে স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন শেফালী, এমনই জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন- ‘কেন্দ্রীয় দফতরের সামনে ধর্ণা অবরোধ যুক্তিসম্মত তো?’, শুভেন্দুকে পাল্টা প্রশ্ন কুণালের
বৃদ্ধা বলেন, ''প্রথমে একথা যখন গ্রামের বাসিন্দাদের বলি তখন তাঁরা সেটা বিশ্বাস করতেই চাননি। ক্রমেই এই কাহিনী লোক মুখে ছড়িয়ে পড়ে।'' শেষমেশ শেফালী বেওয়া কালীপুজো করার ইচ্ছা প্রকাশ করলে তাতে সায় দেন গ্রামের অন্যরাও। এলাকায় জনশ্রুতি, শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে শেফালী বেওয়ার কাছে এলে তিনি নাকি স্বপ্নে প্রাপ্ত শক্তি দিয়ে তার নিরাময় করে দেন। তবে এই যুক্তির কোনও বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নেই। সবটাই সংস্লিষ্ট ওই এলাকায় লোক-মুখে ছড়িয়েছে।
শুধু কেন্দুয়া গ্রামই নয়, গোটা মালদহ জেলার বিভিন্ন পান্ত থেকে শেফালী বেওয়ার কালীপুজো দেখতে ভিড় জমে যায়। আর দিন কয়েক পরেই শক্তির দেবীর আরাধনা। এলাকায় পুজোর তোড়জোড় তুঙ্গে। ভক্তি-নিষ্ঠার এই পুজোয় ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে গ্রামবাসীরা যোগ দেন। কাছেরই একটি পুকুরে ১৫ দিন পরে শ্যামা মায়ের বিসর্জন হয়।