Advertisment

খুনের পর মৃতদেহের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক? কালনার সিরিয়াল কিলিং-এর তদন্তে পুলিশ

মহিলাদের উপর হামলা চালাতে চেন ব্যবহার করত ধৃত। পাশাপাশি, মৃত মহিলাদের সঙ্গে যৌনাচার করেছে ধৃত, এমনই চাঞ্চল্যকর দাবি পুলিশের।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
kalna, কালনা

পূর্ব বর্ধমানের কালনার সেই সিরিয়াল কিলারকে পাকড়াও করল পুলিশ। প্রতীকী ছবি।

তার টার্গেট ছিল মহিলারা। ২০১৩ সাল থেকে ১১ জন মহিলার উপর হামলা চালিয়েছে সে। এর মধ্যে ৭ জনই খুন হয়েছেন। এলাকায় একের পর এক মহিলার উপর হামলা চালিয়ে পুলিশের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছিল সে। শুধু তাই নয়, মহিলাদের খুন করার পর তাঁদের সঙ্গে যৌনাচার করত সে, এমনটাই অভিযোগ। অবশেষে পূর্ব বর্ধমানের কালনার সেই 'সিরিয়াল কিলার'কে পাকড়াও করল পুলিশ। কামরুজ্জামান সরকার নামে ৩৫ বছরের ওই ব্যক্তিকে গত রবিবার গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জানা যাচ্ছে, মহিলাদের উপর হামলা চালাতে চেন ব্যবহার করত ধৃত। পাশাপাশি, মৃত মহিলাদের সঙ্গে যৌনাচার করেছে ধৃত, এমনই চাঞ্চল্যকর দাবি পুলিশের। মনোবিদদের মতে, এ ধরনের আচরণ 'নেক্রোফিলিয়া'র লক্ষণ। নেক্রোফিলিয়া মানে মৃতদেহের সঙ্গে যৌনাচার। দুটি গ্রিক শব্দ নেক্রোস ও ফিলিয়া থেকে এই শব্দের উৎপত্তি। নেক্রোস মানে মৃত, ফিলিয়ার মানে ভালবাসা। তবে ধৃতের মানসিক স্থিতি নিয়ে এখনও কোনও মন্তব্যে নারাজ পুলিশ। এ ব্যাপারটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে।

Advertisment

প্রসঙ্গত, গত এপ্রিল মাসে কালনা এলাকায় এক ৫২ বছর বয়সী মহিলাকে শ্বাসরোধ করে খুনের অভিযোগ সামনে আসে। জানা যায়, ওই খুনের ঘটনাতেও জড়িত কামরুজ্জামান। এ ঘটনা প্রসঙ্গে পূর্ব বর্ধমানের পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, কালনায় একের পর এক খুনের ঘটনা ঘটেছে। প্রতিটি ঘটনাতেই একই কায়দায় খুন করা হয়েছে। পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘সব খুনের ঘটনার কথা স্বীকার করেছে কামরুজ্জামান। চেন দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করত সে। কয়েকটি ঘটনায় ভারী বস্তু দিয়ে মহিলার মাথায় আঘাত করে শ্বাসরোধ করেও খুন করেছে ধৃত’’। দু-একটি ঘটনায় খুনের আগে সে মহিলাদের যৌন হেনস্থা করেছিল বলেও অভিযোগ উঠেছে। কালনা, মন্তেশ্বর, মেমারি ও হুগলির বলাগড় ও পাণ্ডুয়ায় 'শিকার' খুঁজে হামলা চালাত কামরুজ্জামান।

আরও পড়ুন: জলপাইগুড়ির ধর্না বিবাহ নিয়ে সোচ্চার নেট দুনিয়া

কীভাবে জালে ধরা পড়ল সিরিয়াল কিলার?

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৮ সালে কামরুজ্জামানের হামলার হাত থেকে যে দু’জন মহিলা প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বলে খুনী সম্পর্কে খোঁজ নেওয়া হয়। পাশাপাশি যেসব জায়গায় হামলার ঘটনা ঘটেছে, সেখানকার সিসিটিভি ফুটেজ দেখা হয়। তবে কামরুজ্জামানকে চিহ্নিত করা মোটেই সহজ কাজ ছিল না পুলিশের। মাথায় হেলমেট পরে ঢুকত সে। শেষমেশ কামরুজ্জামানকে ধরতে তার বাইকটিকে চিহ্নিত করে পুলিশ। বাইকের রং দেখেই তা শনাক্ত করা হয়। পরে সব থানা ও সিভিক ভলান্টিয়ারকে ওই বাইক সম্পর্কে অবগত করা হয়। গত রবিবার কালনা এলাকায় গাড়ি তল্লাশির সময় ওই বাইকটি নজরে আসে সিভিক ভলান্টিয়ারদের। দেখা মাত্রই ওই বাইকটি আটকান তাঁরা। বাইক তল্লাশি করে মেলে লোহার রড ও চেন। জিজ্ঞাসাবাদের সময় কামরুজ্জামান খুনের কথা স্বীকার করে।

ধৃত কামরুজ্জামান মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে নাদনঘাট থানা এলাকায় থাকছিল সেল। ধৃতের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে সোনার গয়না উদ্ধার করেছে পুলিশ। পাশাপাশি উদ্ধার করা হয়েছে নকল গয়না। মহিলাদের থেকেই ওই গয়না ধৃত লুঠ করেছিল বলে মনে করা হচ্ছে। আপাতত ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে কামরুজ্জামানকে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতের দুই সন্তান রয়েছে। তবে তার খুনের মোটিভ নিয়ে এখনও ধন্দে পুলিশ। মঙ্গলবার কামরুজ্জামানকে নিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করে পুলিশ।

Read the full story in English

kolkata news crime
Advertisment