সীমান্ত এলাকায় তেমন কাজ নেই। তাই রুটি রুজির টানে কাশ্মীরে গিয়েছিলেন উত্তর ২৪ পরগণা পেট্রাপোল সীমান্তের দুই বাসিন্দা কমল সরকার ও দীপঙ্কর বিশ্বাস। সেখানে গিয়ে ভয়ঙ্কর বিপদের সামনে পড়তে হয় তাদের। কুলগ্রাম জঙ্গিহানার সাক্ষী তাঁরা। তাই প্রাণ বাজি রেখে উত্তাপ্ত ভূস্বর্গে আর কাজ নয়। রাজ্য সরকারের সহযোগিতায় সোমবার রাতেই বাড়ি ফিরলেন কমল ও দীপঙ্কর।
উত্তর ২৪ পরগনা পেট্রাপোল সীমান্তের ছয়-ঘড়িয়ার বাসিন্দা কমল সরকার, দীপঙ্কর বিশ্বাস প্লাইউডের কারখানায় কাজ করতেন শ্রীনগরে। গত বৃহস্পতিবারই কাশ্মীরে পৌঁছেছিলেন তাঁরা। কিন্তু সম্প্রতি কুলগ্রামে জঙ্গী হামলায় মুর্শিদাবাদের পাঁচ বাঙালি শ্রমিকের মৃত্যুতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন কমল ও দীপঙ্কর। শুধু ওরাই নয়, মালদা, মুর্শিদাবাদ, দুই দিনাজপুর থেকে কাশ্মীরে কাজে যান অনেকেই। জঙ্গি হামলার পর উৎকণ্ঠায় ছিলেন এরাজ্য থেকে কাশ্মীরে কাজে যাওয়া শ্রমিকদের পরিবারগুলিও।
আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রী মমতার কথার ভাঁজ বুঝতে চান রাজ্যপাল ধনকড়, ফের সংঘাত?
কাশ্মীরে বাংলার শ্রমিকদের জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁদের ফেরানোর তৎপরতা শুরু করে নবান্ন। শ্রমিকদের বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থা করা হয়। সোমবারই হাওড়ায় ট্রেন এসে থামলে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেন শ্রমিকরা। মমতা সরকারের এই ভূমিকায় খুশি কমল, দীপঙ্কর ও তাদের পরিবার।
কমল সরকার বলেন, 'কাজের খোঁজেই শ্রীনগরে গিয়েছিলাম। কিন্তু সেখানে দেখলাম অ-কাশ্মীরি বিশেষ করে বাঙালি শ্রমিকদের উপরে হামলা চালিয়েছে জঙ্গিরা। প্রশাসন আশ্বাস দিলেও ভয়ে ওখানে ঠিক মত কাজ করতে পারছিলাম না। আর বাড়ি ফেরার মত হাতে তেমন টাকাও ছিল না। কি করব ভেবে পাচ্ছিলাম না। তার মধ্যে হঠাৎ করে সেনা বাহিনীর লোকেরা ওখান থেকে আমাদের নিয়ে আসে। পরে জানাতে পারি আমাদের বাড়ি ফিরানোর জন্য নিয়ে আসা হয়েছে। সুস্থ ভাবে বাড়ি ফিরতে পেরে খুব ভালো লাগছে। তবে হাতে কোন কাজ নেই, এখন সংসার চালানোটাই সমস্যার।' বাড়ির এক মাত্র উপার্জনকারীকে সুস্থভাবে বাড়িতে ফিরে পেয়ে খুশি পরিবারের সদস্যরা। তাঁরা জানান, 'দরকার হলে নুন ভাত খেয়ে বেঁচে থাকব তবু ঘরের ছেলেকে আর বাইরে কাজে পাঠাবো না।'