এসএসকেএমের ট্রমা কেয়ার সেন্টারের সামনে দুর্ঘটনাগ্রস্ত এক তরুণকে দীর্ঘক্ষণ ফেলে রাখা হয়েছে। এই খবর শুনেই গত শনিবার রাতেই হাসপাতালে ছুটে গিয়েছিলেন মদন মিত্র। তারপর এসএসকেএম কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন কামারহাটি বিধায়ক। আহত যুবককে শেষ পর্ষন্ত ভর্তি করাতে না পেরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধেই 'দালালরাজ' চালানোর অভিযোগ করেন মদন মিত্র। ডাক দিয়েছিলেন এসএসকেএম বয়কটের। পরে আহত শুভদীপ পালকে ভর্তি করা হয়েছিল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে। মঙ্গলবার দুপুরে সেই যুবকের মৃত্যু হয়। শুভদীপকে বাঁচাতে না পেরে শোকস্তব্ধ মদন মিত্র। যুবকের অকাল প্রয়াণে নিজের সব কর্মসূচি বাতিল করেছেন বিধায়ক।
কী বলেছেন মদন মিত্র?
সংবাদ মাধ্যমে মদন মিত্র বলেছেন, 'খুবই দুঃখজনক ও দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। আমি ওঁর আত্মার শান্তি কামনা করি।' তবে গত শনিবার ও তা পরবর্তী নানা ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন করা হলেই নিজেকে সামলে নেন তৃণণূলের পোড়খাওয়া এই নেতা। বলেন, 'আজ ওসব নিয়ে কিছু বলতে চাই না। একটা তরুণ ছেড়ে চলে গেল। ওঁর যাতে শেষকৃত্যটা ঠিক মতো হয় আমি সেটাই দেখছি।'
পথ দুর্ঘটনায় জখম শুভদীপ পালকে একদা তাঁরই খাসতালুক বলে পরিচিত এসএসকেএমে ভর্তি করতে না পেরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক ছিলেন কামারহাটির বিধায়ক। হাসপাতালের ডিরেক্টরের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করেছিলেন তিনি। হুঁশিয়ারি দিয়ে ুবকের পরিবারের লোকদের বলেছিলেন, 'নিয়ে যেতে যেতে যদি ছেলেটির কিছু হয় তাহলে এসএসকেএমের কাছে ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা করবেন। আমি মামলা লড়ব।' যা নিয়ে বঙ্গ রাজনীতিতে চর্চাও কম হয়নি। পাশাপাশি সেদিনই আক্ষেপের সুরে মদন বলেছিলেন, 'সিপিএমের আমল হলে এই রোগীকে ভর্তি করতে আমার এক মিনিট লাগত। কিন্তু এখন পারলাম না।'
এরপর হাসপাতালে হাঙ্গামার অভিযোগ তুলে শনিবারের ঘটনা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে মদন মিত্রের বিরুদ্ধে নামে নালিশ জানিয়েছিলেন এসএসকেএমের ডিরেক্টর ডাক্তার মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায়। হাসপাতালের তরফে মদনের নামে ভবানীপুর থানায় এফআইআর করা হয়। জিরো টলারেন্সের নীতিতে খোদ মুখ্যমন্ত্রীর সম্মতি রয়েছে বলে দাবি ছিল মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
এসবের মধ্যেই বিধায়ক পদ থেকে পদত্যাগের হুমকি দিয়েছিলেন মদন মিত্র। পরে অবশ্য নিজের আগের অবস্থান থেকে ভোলবদন করেন তিনি। এসবের মধ্যেই অবশ্য চলে গেলেন জখম যুবক শুভদীপ পাল।